Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বইমেলার ২য় দিন—পাঠক বাড়ছে, ঘুরে দাঁড়ানোর আশা প্রকাশকদের

রাহাতুল ইসলাম রাফি, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:৪০ | আপডেট: ১০ মে ২০২২ ১৮:২৬

ঢাকা: অমর একুশে গ্রন্থমেলার দ্বিতীয় দিনে পাঠকের আনাগোনা বেড়েছে। প্রথম দিনের তুলনায় বেড়েছে বই বিক্রয়ের সংখ্যাও। প্রকাশকদের কণ্ঠে শোনা গেছে গতবছরের ক্ষতি পুষিয়ে এবারের বইমেলা দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়।

বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে দেখা যায়—সববয়সী মানুষের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে আছে এবারের বইমেলা। পাঠকরা আসছেন, ঘুরে দেখছেন। অনেকে বই কিনছেন।

বিজ্ঞাপন

একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত সাঈদুল আলম স্ত্রী-সন্তানসহ এসেছেন বইমেলায়। বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে অন্যপ্রকাশ প্রকাশনীর স্টলে বই দেখছিলেন তারা। সারাবাংলার সঙ্গে আলাপকালে সাঈদুল বলেন, ‘ছুটির দিনে বেশ ভিড় থাকে। তাই প্রতিবছর আলাদা একদিন ছুটি নিয়ে পরিবারসহ বইমেলায় আসি। বই দেখছি৷ আমার ৫ বছর বয়সী সন্তানকেও নিয়ে এসেছি। বইমেলার সঙ্গে পরিচিত করার চেষ্টা করছি।’

বইমেলায় ঘুরতে এসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহমিদ হাসান বলেন, ‘সব মিলিয়ে ভালো একটি পরিবেশ আছে। মেলায় ঢোকার সময় স্বাস্থ্যসুরক্ষায় হ্যান্ড স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি এখনও বই কিনিনি। আরও একটু ঘুরে দেখব৷ তারপর কিনব।’

স্টলগুলোতে কর্মরতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে—গতদিনের তুলনায় আজ পাঠক-দর্শকের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। বই বিক্রয়ও হচ্ছে মোটামুটি। দুপুরের দিকে মানুষের আনাগোনা একটু কম থাকলেও সন্ধ্যা হতে হতে মানুষ বাড়ছে।

আগামী প্রকাশনীর স্টলে কর্মরত আলহাজ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সন্ধ্যা নাগাদ মানুষ আসে বেশি। আমাদের বই বিক্রয় হচ্ছে মোটামুটি। পাঠকের আগ্রহ আছে। আশা করছি বিক্রয় বাড়বে।’

বিজ্ঞাপন

মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্টলে বিক্রয়কর্মীর কাজ করছেন মেরিনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘মেলায় পাঠকদের আনাগোনা বাড়ছে। শুরু থেকেই মেলায় বেচাকেনা শুরু হয়েছে। গতবারের চেয়ে এবার মেলায় বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করি।’

তিনি বলেন, ‘গতবার মেলায় করোনার ধাক্কা ছিল। এছাড়া লকডাউন-শাটডাউনের প্রভাব পড়েছিল গতবারের বেলায়। এবার আশা করছি, গতবারের লোকসান কাটিয়ে ওঠা যাবে।’

এদিকে মেলার দ্বিতীয় দিন পেরিয়ে গেলেও পুরোপুরি প্রস্তুত হতে পারেনি বইমেলা প্রাঙ্গণ। কাঠামোগত দিক থেকে এখনও পূর্ণ প্রস্তুত হতে পারেনি মেলা প্রাঙ্গণ। কিছুকিছু স্টলে চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ।

মেলা ঘুরে দেখা গেছে—বেশ অনেকগুলো স্টলের কাজ এখনও শেষ হয়নি। কিছু স্টলে কাজ শেষ হলেও তোলা হয়নি বই। এ ছাড়া উদ্যান অংশে লিটলম্যাগ চত্বরের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ফাঁকা। প্রায় জনশূন্য লিটলম্যাগ চত্বরে মাত্র কয়েকটি স্টলে আছে স্বল্পসংখ্যক ম্যাগাজিন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লিটল ম্যাগাজিন দেয়াঙ-এর স্টলে কর্মরত এক ব্যক্তি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের সব ম্যাগাজিন এখনও পৌঁছায়নি। আগামীকাল এসে পৌঁছাবে। বইমেলা হবে কি হবে না—এটা নিয়ে একটু দ্বিধা ছিল। সবমিলিয়ে আশা করছি আমরা দ্রুতই প্রস্তুত হয়ে যাব।’

এদিকে এবারের বইমেলা ঘিরে গতবছরের ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রকাশকরা।

অন্যপ্রকাশ প্রকাশনীর প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আশা করছি, এবারের মেলা প্রানবন্ত হবে। বইপ্রেমীরা মেলায় আসবেন। বই বিক্রয়ও বাড়বে।’

এবারের বইমেলায় করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রকাশকদের কাছ থেকেও স্টল বরাদ্দের ভাড়া অর্ধেক নিয়েছে একাডেমি। ইউনিট প্রতি প্রায় সাড়ে পনেরো হাজার টাকা ভাড়ার ক্ষেত্রে সাতহাজারের কিছু বেশি টাকা ভাড়া হিসেবে দিতে হয়েছে প্রকাশকদের। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় অর্ধেক ভাড়ার বিষয়টিও বহাল রাখার দাবি জানান প্রকাশকরা।

দ্বৈতা প্রকাশনীর প্রকাশক সাইদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতবছর করোনার ক্রান্তিলগ্নে বইমেলা হয়েছিল। সেবার আমাদের অনেক কর্মী অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় স্টল বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে গতবছরও স্টল ভাড়া অর্ধেক করা হয়েছিল। কিন্তু, তা খুব কম। মাত্র সাত হাজার টাকা। এবার বইমেলা শুরু হয়েছে। সময়ও বাড়বে বলে শুনেছি। আমরা আশাবাদী, গতবছরের ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’

সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যান্য শিল্পকে যেভাবে প্রণোদনা দেওয়া হয়, সেভাবে যেন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও প্রণোদনার আওতায় আনা হয়, সেই আশা রাখব। এতে করে আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর একটা সুযোগ পাব।’

সারাবাংলা/আরআইআর/একে

অমর একুশে গ্রন্থমেলা বাংলা একাডেমি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর