Monday 13 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘হৃদয়ের খোরাক জোগাতে সংস্কৃতিসেবীদের এগিয়ে আসতে হবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:৫৮ | আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:৫২

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা আমরা করে দিয়েছি। এখন হৃদয়ের খোরাকটা জোগাতে হবে। সেটা সংস্কৃতিসেবীদের মধ্য থেকেই আসে। কারণ মানুষের হৃদয়ের খোরাকটাও দরকার।

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বইমেলা প্রান্তে যুক্ত ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে মূল প্রতিপাদ্য করে এবার অমর একুশে বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ভাষা-সাহিত্যের যাতে আর ব্যাপক পরিচর্যা হয় সেজন্য ডিজিটাল পদ্ধতি অর্থ্যাৎ অনলাইনে বাংলা ব্যবহারের জন্য আমরা নানাধরনের অ্যাপস চালু করেছি। বিভিন্ন বাংলা ফ্রন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। কাজেই ডিজিটাল প্রকাশনাও আমাদের করতে হবে। কারণ আধুনিক এই চর্চাটাও যাতে বাদ না যায়, সেটা দেখবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেক জেলায় বা মহকুমায় আগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো, সাহিত্য চর্চা হতো, সাহিত্য সম্মেলন হতো, সাহিত্য নিয়ে আলোচনাও হতো। সেই চর্চাটা অনেক কমে গেছে। এটাকে আবার চালু করা দরকার। কারণ প্রত্যেক জেলায় শিল্পকলা একোডেমি রয়েছে। এখন আমরা উপজেলা পর্যন্ত শিল্পকলা একাডেমি করছি। পাশাপাশি বাংলা একাডেমি যদি উদ্যোগ নেয় তাহলে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অনেক মেধাবী কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিসেবী আমরা পাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিদেশি ভাষা শেখায় কোনো আপত্তি করব না। বিদেশি ভাষাও শেখা দরকার। সেখানকার সংস্কৃতি চর্চাও জানা দরকার। কিন্তু নিজের যে অস্বিত্ব সেটাকে আরও বড় করে দেখাতে হবে, আরও উন্নত মানের করতে হবে। সেদিকে বিশেষভাবে নজর দিয়েই আমাদের সংস্কৃতি চর্চা আরও বাড়াতে হবে। জেলায় জেলায় যদি এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয় তাহলে খুব উপযুক্ত হবে বলে মনে করি।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে নিয়ে যাব। বাংলাদেশ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। সেটাই আমাদের অঙ্গীকার।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই মেলা হচ্ছে আমাদের প্রাণের মেলা। কোনো কারণে এই মেলা না হলে সবার মন খারাপ হয়। আজ আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলছি। কিন্তু এই অধিকারে বার বার আঘাত এসেছে। এমনকি পাকিস্তানি শাসকরা একবার শুরু করল যে, আরবি অক্ষরে বাংলা ভাষা হবে। তার প্রতিবাদ বাঙালিরা করেছে। এরপরে আসল রোমান হরফে বাংলা ভাষা লেখা হবে। সেই প্রতিবাদও ছাত্রসমাজকে করতে হয়েছে। সেই প্রতিবাদও দেশবাসী করেছে।

তিনি বলেন, ‘একটি জাতি সবসময় উন্নতি করতে পারে যদি তার ভাষা-সংস্কৃতির উন্নতি হয়। আর আমাদের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সংস্কৃতিসেবীদের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। আমাদের আনন্দের ভাষা যেমন মাতৃভাষা, আবার প্রতিবাদের ভাষাও এই মাতৃভাষা।’ কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক প্রত্যেকেই প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রাম এবং আমাদের অর্জনে বিরাট অবদান রেখে গেছেন বলেও জানান তিনি।

যে কারণে আমাদের বইমেলাটা খুবই আনন্দের বিষয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বই এমন একটা বিষয়, যে না পড়লে মনে হয় যেন কি যেন হলোই না, কি যেন পেলামই না। তবে এখন তো ডিজিটাল যুগ, কাজেই ডিজিটাল যুগে আমাদের প্রবেশ করতে হবে। এটা সত্যি কথা। তবে ডিজিটাল ডিভাইস দিয়ে বই পড়ার চেয়ে একটা বই হাতে নিয়ে পাতা উল্টিয়ে দেখতে এবং পড়তে অনেক বেশি আনন্দ। তবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে, এটাও ঠিক। সেখান থেকে আমরা পিছিয়ে যেতে চাই না। প্রযুক্তি আমাদের ব্যবহার করতে হবে। প্রযুক্তি শিক্ষা নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ২১ ফেব্রুয়ারি শুধু একার না, এটা সারাবিশ্বব্যাপী। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ আমাদের এই ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালন করে।’

বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন ছোটন। এছাড়া স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহাম্মদ নূরুল হুদা।

প্রতিবারের ন্যায় ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে বইমেলা শুরু হওয়ার রীতি থাকলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে কাঙ্ক্ষিত অমর একুশে বইমেলা শুরু হলো মাসের মাঝামাঝিতে।

সারাবাংলা/এনাআর/পিটিএম

টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হৃদয়ের খোরাক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর