Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সন্দেহ করে স্বামী সরে গেল দূরে, বন্ধু পাঠাল কবরে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২০:১০ | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২৩:৫১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে আবাসিক হোটেল থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধারের চারদিনের মধ্যে খুনের রহস্য উদঘাটন করে ‘খুনিকে’ গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, খুনি ওই নারীর বন্ধু। স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরির পর ওই বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন সেই নারী। কিন্তু বন্ধু হয়েছে তার ঘাতক। স্বামী তাকে সন্দেহের বশে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন, বন্ধুও একই কারণে তাকে পৃথিবী থেকেই চিরতরে সরিয়ে দিল।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে নগরীর হালিশহর থানা পুলিশ ঢাকার আশুলিয়া থানার দক্ষিণ গাজীর চট এলাকা থেকে ওই নারীর বন্ধুকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার আশরাফুল ইসলাম সুজনের (২৬) বাড়ি নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলায়। বাসা ঢাকার উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরে। টঙ্গির একটি কলেজে ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্মাতকোত্তর শ্রেণিতে অধ্যয়ন করা আশরাফুল উত্তরার একটি হাসপাতালে রিপোর্ট প্রদান শাখায় খণ্ডকালীন চাকরি করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে নগরীর হালিশহর থানার বড়পুল আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের বড়পুল এলাকার ‘রোজ উড’ নামে একটি আবাসিক হোটেল থেকে গলা ও পেটে ছুরিকাঘাতে নিহত অবস্থায় এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) আব্দুল ওয়ারীশ সারাবাংলাকে বলেন, ‘হোটেলের কর্মকর্তারা আমাদের জানান- কামরুল হাসান নামে একজন ওইদিন বিকেলে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ওই নারীকে নিয়ে হোটেলের রুমে উঠেছিলেন। ঘণ্টাখানেক পর ওই যুবক হোটেল থেকে বেরিয়ে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। জমা দেওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করে দেখি সেটি ভুয়া। লাশ উদ্ধারের পর সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখি, দু’জনের মুখে মাস্ক আছে। তাদের মাস্ক ছাড়া কোনো ছবি না পাওয়ায় মামলাটি শুরু থেকেই সূত্রবিহীন হয়ে পড়ে। তবে আমরা নিবিড় তদন্তের এক পর্যায়ে প্রথমে ওই যুবককে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় এবং তাকে গ্রেফতার করি। পরে খুন হওয়া নারীর পরিচয় পাই।’

খুন হওয়া গৃহবধূর নাম শাহিদা ইসলাম সুমি (৩৫)। তার বাবার বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। তবে মা-বাবা থাকেন নগরীর হালিশহরে। স্বামীর বাড়িও চট্টগ্রামে। ওই গৃহবধূ তিন সন্তানের জননী।

বিজ্ঞাপন

হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হলে সুমি তার সন্তানদের নিয়ে হালিশহরে বাবার বাসায় চলে যান। সেখানেই থাকছিলেন তিনি। স্বামীর সন্দেহ, সুমির সঙ্গে অন্য কারও সম্পর্ক আছে। এর মধ্যে পূর্বপরিচিত আশরাফুলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায় সুমি। গত ২৬ জানুয়ারি আশরাফুল ঢাকা থেকে এসে রোজ উড হোটেলে সুমির সঙ্গে দেখা করেছিল। কিন্তু এরপর থেকে আশরাফুলেরও সন্দেহ, সুমি অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে।’

এ সন্দেহ থেকেই আশরাফুল খুনের পরিকল্পনা করে জানিয়ে ওসি বলেন, ‘খুনের পরিকল্পনা করে আশরাফুল ঢাকা থেকে আসার সময় ছুরি ও ঘুমের ওষুধ নিয়ে এসেছিল। সুমিকে হোটেল রুমে নিয়ে ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত পানীয় পান করায়। এ সময় সে অচেতন হয়ে পড়লে ছুরি দিয়ে গলা ও পেটে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায় আশরাফুল। তার পরনের কাপড় পাল্টে লাশের পাশে রেখে যায়। নতুন পোশাক পরে রুম বন্ধ করে হোটেল থেকে বের হয়ে ঢাকার আশুলিয়ায় বোনের বাসায় আত্মগোপন করে।’

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

খুন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর