বিকল এক্স-রে মেশিন, চিকিৎসকের অভাবে হয় না অপারেশন
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১০:০৩
দিনাজপুর: জেলা শহর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত হিলি-হাকিমপুর উপজেলা। হিলি স্থলবন্দর ও উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসক থাকলে, নেই বেশিরভাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি,ভোগান্তিতে পড়তে হয় চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষদের। এদিকে অত্যাধুনিক ওটি (অপারেশন থিয়েটার) থাকলেও সার্জারি কনসালটেন্ট না থাকায় বন্ধ রয়েছে অপারেশন কার্যক্রম। অপারেশন থিয়েটার চালুসহ সব ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ব্যবস্থা করার দাবি স্থানীয়দের। যন্ত্রপাতিসহ কনসালটেন্ট ও অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসকের জন্য চাহিদা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর কর্মকর্তা।
সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন রোগীর এক্স-রে করতে সর্বোচ্চ খরচ গুনতে হয় ১০০ থেকে দেড়শ টাকা,তবে সেটি বাহিরের কোনো ক্লিনিকে গুনতে ৫০০ টাকার ওপরে,আলট্রাসনোগ্রামেও সরকারি পরীক্ষার মূল্য ১০০ থেকে ১৫০ টাকা হলেও বাহিরে গুনতে হচ্ছে ৫০০ টাকা। এছাড়াও উচ্চ মূল্যে অপারেশন সর্ম্পূন করতে হচ্ছে বাহিরের ক্লিনিকগুলোতে। এতে চরম বিপাকে পড়তে হয় স্থানীয় চিকিৎসা নিতে আসা মানুষদের।
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসা সেবার একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি গত এক বছরের অধিক সময় ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও একজন রেডিওলজিস্টের অভাবেও হয় না পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এছাড়াও উন্নত মানের অপারেশন থিয়েটার থাকলেও গাইনি সার্জারি ও সার্জারি কনসালটেন্টের অভাবে হয় না অপারেশন। ফলে দিনে পর দিন এসব চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা রোগীরা।
চিকিৎসা নিতে আসা কামরুল নামের স্থানীয় একজন বলেন, ‘আমাদের গরীব মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরাস সরকারি হাসপাতাল। এখানে আসলে শুধু ওষুধ ছাড়া কিছুই মিলে না। না হয় এখানে এক্স-রে করা, না হয় আলট্রাসনোগ্রাম, না হয় আবার অপারেশন। এই জিনিসগুলো তো আমাদের জন্য অনেক দরকার। বাহিরে বেশি টাকা দিয়ে পরীক্ষা করতে হয়। এই পরীক্ষাগুলো সরকারিভাবে করলে আমাদের খরচ কম হত।’
রফিক নামের আরও একজন বলেন, ‘এখানে অপারেশন থিয়েটার আছে কিন্তু অপারেশন হয় না। আমাদের দাবি খুব দ্রুত চিকিৎসক দিয়ে এখানে অপারেশন কার্যক্রম চালু করা হোক। কারণ বাহিরে অপারেশন করতে গেলে আমাদের দ্বিগুন খরচ করতে হয়। যেটা এখানে করলে অনেক কম টাকায় হবে।’
হাকিমপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ হারুন বলেন, ‘এই উপজেলাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা। এখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ আসে এবং ভারতীয় ট্রাক চালকরা আসে। এখানে দুর্ঘটনা হলে দ্রুত অপারেশন করা যায় না হাসপাতালে সার্জারির চিকিৎসক না থাকায়। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করছি খুব দ্রুত সমস্যা গুলোর সমাধান করা হবে।’
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা শ্যামল কুমার দাস বলেন, ‘আমাদের অপারেশন থিয়েটার আছে, কিন্তু চালু নেই। মূল সমস্যা হচ্ছে- এখানে গাইনি ও সার্জারি কনসালটেন্ট না থাকায় অপারেশন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারছি না। আমি এ বিষয়ে সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করছি খুব দ্রুত এটি চালু করা সম্ভব হবে। আর এক্স-রে মেশিন নষ্ট সেটারও চাহিদা আমরা পাঠিয়েছি। আর রেডিওলোজিস্ট না থাকায় বর্হি বিভাগে আলট্রাসনোগ্রাম চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।’
সারাবাংলা/এনএস