রাজধানীতে পুলিশের স্ত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার, পরিবারের অভিযোগ হত্যা
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:৩৯ | আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২৩:২৫
ঢাকা: রাজধানীর সবুজবাগ মাদারটেক এলাকার একটা বাসা থেকে লাবনী আক্তার লাবু (৩০) নামে এক নারীর গলায় ফাঁস দেওয়া মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বললেও পরিবারের অভিযোগ, অন্তঃসত্ত্বা লাবনীকে হত্যা করা হয়েছে।
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে খবর পেয়ে পুলিশ সবুজবাগ থানার মাদারটেক চৌরাস্তা পাবনা গলি এলাকার পাঁচতলা বাসার দরজা ভেঙে ওই নারীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
সবুজবাগ থানার (পরিদদর্শক তদন্ত) শেখ আমিনুল ইসলাম জানান, পুলিশ কনস্টেবল অভিজিৎ বিশ্বাস তার স্ত্রী লাবনীকে নিয়ে ওই বাসায় থাকতো। স্বামী হিন্দু ধর্মাবলম্বী হলেও স্ত্রী মুসলমান ছিল। পারিবারিক কারণে সে আত্মহত্যা করতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
তিনি আরও জানান, অভিজিৎ ঢাকা জেলার গেন্ডারিয়ায় (মিল ব্যারাক) পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত আছে। স্ত্রী লাবনীর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর থেকে সে রওনা দিয়েছে।
এদিকে, ঢামেক মর্গে লাবনীর খালাতো ভাই নুর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘এক বছর আগে অভিজিৎ বিশ্বাস ফেসবুকে নিজেকে সোহাগ নামে এবং মুসলমান হিসেবে পরিচয় দিয়ে লাবনীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। এক পর্যায়ে তারা কোর্টে গিয়ে গোপনে বিয়ে করে। এর পর থেকে পারিবারিক বিষয় নিয়ে প্রায়ই লাবনীর ওপর নির্যাতন করতো অভিজিৎ।’
নুর বলেন, ‘লাবনীর এর আগে একটি বিয়ে হয়েছিল। সেই ঘরে রেহেনা আক্তার (১১) নামে একটি মেয়েও রয়েছে। মেয়েকে নিয়ে মাদারটেকের বাসায় তারা ভাড়া থাকতো। বর্তমানে লাবনীও চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাসাও মাদারটেক এলাকায়। গতকাল রাতে আমার মা ফোন দিয়ে লাবনীকে বাসায় আসতে বলে। লাবনী তখন জানায়, তার স্বামী তাকে মারধর করছে। আজ বিকেলে সংবাদ পাই, লাবনী মারা গেছে। পরে পুলিশের সহায়তায় তার বাসায় যাই। ওই সময় ভেতর থেকে দরজা বন্ধ ছিল। আর সে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে ছিল।’
নুর হোসেন বলেন, ‘লাবনী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর আরও বেশি নির্যাতন করতো। বাচ্চা নষ্ট করতে চাপ দিত। এবং নষ্ট না করলে ডিভোর্সের ভয় দেখাতো। আমার বোন আত্মহত্যা করেনি। তাকে মেরে ফেলেছে। আমার বোন হত্যার বিচার চাই। সে পুলিশের লোক বলে কি আমরা বিচার পাবো না? আমি জানি আইন সবার জন্য সমান। এর সুষ্ঠু তদন্ত যেন হয়।’
জানা যায়, লাবনীর বাবার নাম আবুল বাশার। তাদের গ্রামের বাড়ি খুলনা সদর উপজেলার দক্ষিণ টুটপাড়া গ্রামে। আর অভিজিতের বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার আমগ্রামে। তার বাবার নাম তারাপদ বিশ্বাস। তবে অভিজিতের মোবাইল ফোনে অনেকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সারাবাংলা/এসএসআর/পিটিএম