Friday 10 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নেতাকর্মীদের অসন্তোষ— গণতন্ত্রের চর্চা নেই জাপায়

আজমল হক হেলাল স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১০:৩৯ | আপডেট: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১০:৪৭

ঢাকা: জাতীয় পার্টির মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা নেই বলে অভিযোগ তুলেছেন দলের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, দলটির মধ্যে যেমন সমন্বয়হীনতার অভাব রয়েছে, তেমনি দলের মধ্যে একক কর্তৃত্ব ও স্বেচ্ছাচারিতার চর্চা চলছে বলেও অভিযোগ তাদের।

গত ডিসেম্বরে দলের প্রেসিডিয়াম ফোরামের এক বৈঠকের এক সিদ্ধান্তে দলে গণতন্ত্রের চর্চার অভাব নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ আরও বেড়েছে। ওই সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, জাপা চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এবং মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু ছাড়া অন্য কারও বক্তব্য জাতীয় পার্টির নীতিনির্ধারণী বক্তব্য বলে বিবেচনা করা যাবে না। অন্য কেউ এ বিষয়ে বক্তব্য দিলে সেটি দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ হবে বলেও জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

২০২১ সালের ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ওই প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়, দলের শীর্ষ এই দুই নেতাই কেবল দলের নীতিনির্ধারণী বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন। এছাড়া জাপা মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু পার্টির মুখপাত্র হিসেবে কাজ করবেন। জাতীয় পার্টির নীতিনির্ধারণী বিষয়ে দলীয় চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের বাইরে কেউ বক্তব্য দিলে তা তার ব্যক্তিগত অভিমত এবং দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি বলে বিবেচনা করতে হবে।

দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ নিজেই দলের মধ্যে একক সিদ্ধান্ত প্রয়োগের চর্চা চালিয়ে গেছেন। তার ছোট ভাই জি এম কাদের দলের চেয়ারম্যান হওয়ার পর একই চর্চা অব্যাহত রেখেছেন।

তারা আরও বলছেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই দলটির মধ্যে একক কর্তৃত্ব ও স্বেচ্ছাচারিতার চর্চা বাড়ছে। এক ব্যক্তির প্রভাব আরও বেশি বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের কেন্দ্রীয় একজন নেতা সারাবাংলাকে বলেন, জাতীয় পার্টি সংসদের বিরোধী দল। এরকম একটি দলের মধ্যে কারও কোনো মতামতের তোয়াক্কা করা হয় না। পার্টির হাতেগোনা দুয়েকজন যা সিদ্ধান্ত নেন, সেটিই সবার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। এরকম পরিস্থিতি হলে মানুষের রাজনীতি কীভাবে হবে?

দলের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, আমরা রাজনীতি করি আমাদের জনপ্রিয়তা নিয়ে। কিন্তু জিএম কাদের যে বিবৃতি (প্রেসিডিয়াম বৈঠকের ওই সিদ্ধান্ত বিষয়ক) দিয়েছেন, তাতে মনে হয় আমরা ছাত্র ও শিক্ষক। ভাইয়ের উত্তরসূরী হিসেবে দলের চেয়ারম্যান হয়েছেন। এ নিয়ে আর বেশি কিছু বলতে চাই না।

নেতাকর্মীদের এসব অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সারাবাংলাকে বলেন, দলের নীতি নির্ধারণী বিষয় নিয়ে অনেকেই উল্টাপাল্টা কথা বলে ফেলেন। অনেকে ‘আউল ফাউল’ কথা বলে বেড়ান। সেগুলো তো দলের বক্তব্য হতে পারে না। আমরা সিদ্ধান্ত নিইনি— এমন অনেক কথাও বলেন। এগুলো তো মেনে নেওয়া যায় না।

জাপা মহাসচিব আরও বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগেও এ ধরনের চর্চা আছে। তাদেরও কিন্তু যে কেউ দলের নীতিনির্ধারণী বিষয়ে কথা বলতে পারেন না। আমরা জোট করব নাকি করব না— এমন কথা তো নীতিনির্ধারকরা ছাড়া কেউ বলতে পারেন না। অথচ অনেকেই এগুলো বলে বেড়াচ্ছেন। তাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তে যারা ক্ষোভ দেখাচ্ছে, তাদের নিশ্চয় ব্যক্তিস্বার্থে আঘাত লেগেছে। অথচ দল করবে আর দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কথা বলবে— এমন হয় নাকি?

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

একক কর্তৃত্ব জাতীয় পার্টি স্বেচ্ছাচারিতা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর