ফ্রান্সে ইসলাম ‘সংস্কারে’ নতুন কমিটি
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২২:২৭ | আপডেট: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০০:২৯
ফ্রান্সে ইসলাম ধর্ম সংস্কারের জন্য নতুন একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। ‘ফোরাম অব ইসলাম’ নামের এ কমিটি চরমপন্থা থেকে ধর্মকে মুক্ত করতে কাজ করবে।
কমিটির সদস্যদের বাছাই করবে সরকার। এতে ধর্মীয় নেতা ও সাধারণ মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। কমিটির এক চতুর্থাংশ সদস্য থাকবেন নারী।
মুসলিম চরমপন্থীদের হামলায় বিগত বছরগুলোতে রক্তাক্ত হয়েছে ফ্রান্স। এছাড়া চরমপন্থী জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দিতে বহু ফরাসি মুসলিম নাগরিক সিরিয়া ও ইরাকে পাড়ি জমিয়েছেন। সরকার মনে করছে—সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয়টি হলো— ফ্রান্সের বিশাল সংখ্যক মুসলিম মৌলবাদকে বিপজ্জনক মনে করেন না। এসব কারণে ফ্রান্সে ইসলাম ধর্মে সংস্কার আনার উদ্যোগ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ।
ম্যাখোঁর এ উদ্যোগের সমর্থকরা বলছেন, ফ্রান্সে বসবাসরত ৫০ লাখ মুসলমানকে নিরাপদ রাখতে ধর্মীয় সংস্কার জরুরি। ধর্ম সংস্কার মুসলিম ধর্মীয় চর্চা ও ফরাসিদের ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ মেনে চলতে নাগরিকদের সাহায্য করবে।
ম্যাখোঁর এ ধর্ম সংস্কার প্রকল্পে মরক্কো বা আলজেরিয়া থেকে বিদেশি ঈমামদের আনার পরিবর্তে ফ্রান্সের স্থানীয় ঈমামদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এমন পরিকল্পনাকে সেদেশের মুসলিম সম্প্রদায় বরাবরই স্বাগত জানিয়ে আসছে। এ উদ্যোগের ফলে ফ্রান্সে কট্টরপন্থী আলেমদের প্রভাব বলয় ভাঙা সম্ভব হবে বলে মনে করছে সরকার।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডার্মানিন এ ব্যাপারে বলেন, মুসলিম বিশ্বাসের একজন একক প্রতিনিধি থাকবে, যিনি সব কিছুর নেতৃত্ব দেবেন, সে দিন আর নেই।
প্যারিসের ৫১ বছর বয়সী মুসলিম নাগরিক হামউদ বেন বউজিদ বলেন, ‘আমরা একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে বাস করছি। তাহলে কেন আমরা সব মুসলিমদের কথা বলার সুযোগ দেব না? আমি চাই মুসলিমদের দেশের নাগরিক হিসেবে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হোক, শুধু মুসলিম হিসেবে নয়। মুসলিমরা পূর্ণ নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হোক।’
এর আগে গত বছর ফরাসি পার্লামেন্ট সেদেশের মসজিদ, স্কুল ও স্পোর্টস ক্লাবের ওপর নজরদারি জোরদার করতে একটি আইন পাশ করে। সরকার দাবি করে, ফ্রান্সে ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ ও নারী অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মতো বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে এ আইন করা হয়েছে। নতুন আইনটি ব্যবহার করে একাধিক মসজিদ ও কমিউনিটি গ্রুপ বন্ধ করেছে সরকার।
তবে ম্যাখোঁর এ ধরনের উদ্যোগের ব্যাপক সমালোচনাও রয়েছে। ধর্মীয় সংস্কারকে আগামী নির্বাচনে মধ্যপন্থী ভোটারদের সমর্থন আদায়ের কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, আগামী ১০ এপ্রিল ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে ম্যাখোঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কট্টর ডানপন্থী নেতা মেরিন লি পেন।
সারাবাংলা/আইই