একজনের পরিবর্তে অন্যজন কারাগারে, ফেঁসে যাচ্ছেন ২ আইনজীবী
১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৭:৪৩ | আপডেট: ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৯:৫৬
ঢাকা: চার বছর আগে অন্যের হয়ে স্বেচ্ছায় কারাভোগ করেন মো. হোসেন। তবে সংশ্লিষ্টরা তদন্তে জানতে পারেন বর্তমানে যিনি কারাভোগ করছে তা আসলে আসামি নয়। মামলার আসল স্বাভাবিক জীবন-যাপন করেছেন।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ হাজির করা হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত বড় সোহাগের হয়ে স্বেচ্ছায় কারাভোগ করা মো. হোসেনকে।
হোসেন জানায়, কক্সবাজারের রামু থানার বৌদ্ধমন্দির এলাকায় তার বাড়ি। আপনজন বলতে কেউ নেই। মা-বাবা, ভাই-বোন সবাই মারা গেছে। ভবঘুরে ছিলেন সে। কখনো বিল্ডিংয়ের রং মিস্ত্রির কাজ আবার কখনো গাড়ি চালাতেন। ৪৫ বছরের হোসেন মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। মাদক টাকা জোগাড় করতে চুরি শুরু করেন তিনি। এজন্য লোকজনের হাতে মারও খেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ মামলায় তার মামাতো ভাই বড় সোহাগসহ আসামি ছিল ৬ জন। মাঝে মধ্যে তাদের সঙ্গে আদালতে আসতেন হোসেন। এদের মধ্যে ২০১৭ সালে সোহাগসহ তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। অপর তিন আসামি খালাস পান।
খালাস পাওয়া তিন আসামির কাছে জানতে পারেন সোহাগের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। পরের বছর স্বেচ্ছায় আদালতে এসে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। সেদিন তিনি নিজেকে আদালতে সোহাগ বলেই পরিচয় দেন। ওইদিন আদালত জামিন না দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রতারণার অভিযোগে ফেঁসে যাচ্ছেন দুই আইনজীবী
সহজেই মুক্তি মিলছে না হোসেনের। এ জন্য প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক জেসমিন আরা বেগম হোসেন, বড় সোহাগ, দুই আইনজীবী শরীফ শাহরিয়ার সিরাজী ও ইব্রাহিম হোসেনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) কে আদেশ দেন।
আর হোসেনকে কোতয়ালী থানার এসআই আবু সাঈদ চৌধুরীর হাতে সোপর্দ করেন।
এদিকে জানা যায়, হোসেন, বড় সোহাগ ও দুই আইনজীবী শরীফ শাহরিয়ার সিরাজী ও ইব্রাহিম হোসেনের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আইনজীবীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারাসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রতারণার আশ্রয়ে আত্মসমর্পণ করা আসামি প্রকৃত আসামি নয় মর্মে জেনেও তাকে মিথ্যা ব্যক্তির মাধ্যমে প্রকৃত আসামি সাজিয়ে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে নথি উপস্থাপনের দরখাস্ত, জামিনের দরখাস্ত ও ওকালতনামায় জাল দরখাস্ত দিয়ে এসব সৃজন করে তা সঠিক মর্মে দাবি করেন। তা ব্যবহার করে মিথ্যা ও ভুয়া ব্যক্তিকে প্রকৃত ব্যক্তি সাজিয়ে প্রতারণার আশ্রয়ে আদালত আত্মসমর্পণ করিয়ে একজন অপর জনের নামে সাজা ভোগ করিয়ে আদালতের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
সারাবাংলা/এআই/একে