অনশনের ১০০ ঘণ্টা, ভিসির বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন
২৩ জানুয়ারি ২০২২ ২১:২৭ | আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২২ ২১:৪০
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অনশন ১০০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। এরই মধ্যে অনশনরত শিক্ষার্থীদের ১৫ জন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে এখনো নিজ পদে বহাল রয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ।
গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩টা থেকে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সে হিসাবে রোববার (২৩ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় তাদের অনশনের ১০০ ঘণ্টা পূরণ হয়েছে। তবে অনশনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা অনশন ছাড়বেন না।
এদিকে, রোববার বিকেল থেকেই উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধা সাড়ে ৭টার দিকে তারা উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এ অবস্থায় উপাচার্যের বাসভবনটি অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে।
আরও পড়ুন-
- নানার মৃত্যুর খবরেও অনশনে অনড় মরিয়ম
- কাফন পরে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের মৌন মিছিল
- ২৪ শিক্ষার্থীর সঙ্গে গণঅনশনে শাবিপ্রবি’র অন্যরাও
- এবার ৩ দফা দাবিতে ভিসি ভবনের সামনে শাবিপ্রবি ছাত্রীরা
- শাবিপ্রবিতে হামলার প্রকাশ্যে ব্যাখ্যা চায় শিক্ষকদের একাংশ
- অনশনরত ২৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৬ জনই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে
- শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আসেনি ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত, আন্দোলন চলবে
জানা গেছে, উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে কোভিড ল্যাবে কর্মরতরাও অবস্থান করেন। তাদের সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে জানিয়ে ল্যাবে কাজ করা শিক্ষার্থী মোশারফ হোসেন বলেন, ভিসির বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে আমাদের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। আমি আহ্বান জানাই, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মুহাইমিনুল বাসার রাজ বলেন, আমাদের আন্দোলনের দশম দিন চলছে। অনশনেরও পঞ্চম দিন চলছে। অনশনের ১০০ ঘণ্টা পার হলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো ধরনের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসেনি। তাই উপাচার্যের লিখিত পদত্যাগপত্র না আসা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
আমরণ অনশনের ১০০ ঘণ্টা পূর্ণ হওয়ায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভও করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের গোলচত্বর থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। পরে তারা গোলচত্বরে সভা করেন। শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি পূরণ না হলে আমরণ অনশন ও আন্দোলন একসঙ্গে চলবে।
এদিকে, রোববার সন্ধ্যায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হলে অনশনরত শিক্ষার্থীদের আগের অবস্থান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকের একটু সামনে আটটি চৌকি বসানো হয়েছে। সেখানেই নেওয়া হয়েছে অনশনরত শিক্ষার্থীদের।
শাবিপ্রবির ২৪ শিক্ষার্থী অনশন শুরু করলেও এক জনকে জরুরি প্রয়োজনে বাড়ি চলে যেতে হয়েছে। বাকি ২৩ জনের মধ্যে ১৫ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। বাকি আট জন অনশন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পরে গণঅনশন কর্মসূচি ঘোষণা করা হলে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত আরও পাঁচ জন যোগ দিয়েছেন অনশনে। সবমিলিয়ে এখন উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন করছেন ১৩ শিক্ষার্থী।
এর আগে, শাবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩টা থেকে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ১০০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো উপাচার্য পদত্যাগ করেননি। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনায় বসার দাবি জানিয়েছিলেন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি শনিবার (২২ জানুয়ারি) রাতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আলোচনায় বসেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। তবে সে আলোচনাতেও ফল আসেনি।
আরও পড়ুন-
- অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ শাবিপ্রবি
- ‘শাবিপ্রবির ভিসির পদত্যাগ দাবি নীতি বর্হিভূত’
- শাবিপ্রবি: আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চান মন্ত্রী
- এবার উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল শাবিপ্রবি
- শাবিপ্রবিতে পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ, ২ ঘণ্টা পর ভিসি মুক্ত
- আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচ দেবে শাবিপ্রবি প্রশাসন
- শাবিপ্রবি আন্দোলন: পুলিশের মামলায় আসামি কয়েকশ শিক্ষার্থী
সারাবাংলা/টিআর
অনশনের ১০০ ঘণ্টা উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি টপ নিউজ শাবিপ্রবি শাবিপ্রবি আন্দোলন শাবিপ্রবি উপাচার্য