আইইডিসিআর’র জরিপেও দেশে ডেল্টার প্রাধান্য, সর্বোচ্চ খুলনায়
১৮ জানুয়ারি ২০২২ ১৯:২২ | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২২ ২৩:১৭
ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) গতিপ্রকৃতি বোঝার জন্য প্রতি মাসেই জরিপ করে থাকে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। প্রতিষ্ঠানটির ডিসেম্বর মাসের জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ ভাইরাসের নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রাধান্য।
জরিপে দেখা যায়, ডিসেম্বরে ওমিক্রন শনাক্তের হার মাত্র এক দশমিক ৫ শতাংশ। আইইডিসিআরের জরিপে একটি ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি দেখা গেলেও অন্যান্য স্থানে আরও ৯টি নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে ওমিক্রনের উপস্থিতি দেখা গেছে।
আইইডিসিআরের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিচালনা করা জরিপে দেখা যায়, দেশে ৯৮ দশমিক পাঁচ শতাংশ নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে রয়েছে ডেল্টা। এই সময়ে ডেল্টার ভিন্ন রকমের লিনিয়েজের উপস্থিতিও দেখা গেছে। এর মাঝে B.1.617.2- লিনিয়েজ দেখা গেছে। একইসঙ্গে ৩৩ শতাংশ AY.102 লিনিয়েজও পাওয়া যায়। এই দুইটিই মূলত প্রাধান্য বিস্তার করা লিনিয়েজ বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত।
জরিপ ফলাফলে আরও জানা যায়, দেশে গেল বছরের অক্টোবর মাসে প্রথমবারের মতো AY.102 লিনিয়েজের উপস্থিতি দেখা যায়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে এটিই প্রভাব বিস্তার করা লিনিয়েজের মাঝে অন্যতম।
দেশে বিভিন্ন বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে একটি নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন লিনিয়েজসহ ডেল্টা শনাক্ত হয়েছে ১৮টি নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে। চট্টগ্রাম বিভাগে পাঁচটি নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে ডেল্টার উপস্থিতি দেখা গেছে।
জরিপে সবচেয়ে বেশি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি দেখা যায় খুলনা বিভাগের নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে। এই বিভাগে ২৩টি নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে ডেল্টার উপস্থিতি পাওয়া গেছে যার মাঝে ১৫টি AY.102 লিনিয়েজ। এছাড়াও রাজশাহী বিভাগে ১৮টি, বরিশাল বিভাগে দুইটি নমুনায় ডেল্টার উপস্থিতি দেখা গেছে।
এর আগে নভেম্বর মাসে আইইডিসিআরের জরিপেও দেখা যায়, শতভাগ নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে ডেল্টার উপস্থিতি। মোট ১৬৩টি নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে বিভিন্ন লিনিয়েজসহ ডেল্টার উপস্থিতি দেখা যায়। তবে এই মাসে দেশে AY.127 লিনিয়েজের উপস্থিতি দেখা যায় প্রথমবারের মতন।
জানতে চাইলে আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর সারাবাংলাকে বলেন, ভ্যারিয়েন্ট যাই হোক না কেনো সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। দেশে বর্তমানে ভ্যাকসিন প্রয়োগ চলছে। সবাইকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে। মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি যদি মানা হয় তবে ভ্যারিয়েন্টের পক্ষে মানুষকে সংক্রমিত করা সম্ভব না। কিন্তু সেটা না করে ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে ভাবাটা আসলে ঠিক না। ভ্যারিয়েন্ট যাই হোক না কেন, কোভিড-১৯ এর ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন কিন্তু একই থাকবে। আর তাই সবাইকে সচেতন হয়ে মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
মূলত, দেশে কনসোর্টিয়াম বা কয়েকটি প্রতিষ্টান মিলে একত্রিত হয়ে সিকোয়েন্সিং করা হয়ে থাকে। আইইডিসিআরের সঙ্গে জিনোম সিকোয়েন্সিং কনসোর্টিয়ামে আছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি), ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভস (আইদেশি) ও চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন।
সারাবাংলা/এসবি/এসএসএ