স্বজনের খুনিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লায়লা বেগমকে হত্যা: র্যাব
১১ জানুয়ারি ২০২২ ১৮:১৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে এক নারীকে খুনের ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। সংস্থাটি জানিয়েছে, লায়লা বেগম নামে ওই নারীর স্বামী ও ছেলে একযুগ আগে সংঘটিত একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারণ লায়লা প্রকাশ করেছিলেন পুলিশের কাছে। এর জের ধরেই ওই হত্যা মামলার আসামিরা প্রতিশোধ নিতে তাদের খুনের পরিকল্পনা করে।
সম্প্রতি জামিনে বেরিয়ে আসামিরা ওই নারী এবং আদালতে সাক্ষ্য দেওয়া তার ছেলের ওপর হামলা করে। এতে নারীর মৃত্যু হয়।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) রাতে চট্টগ্রামের মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভাবির মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।
গ্রেফতার মো. ইরান (৩৩) চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার মাইলের মাথা এলাকার মৃত আবুল বশরের ছেলে। খুন হওয়া লায়লা বেগম একই এলাকার কবির আহম্মদের স্ত্রী।
র্যাব-৭-এর হাটহাজারী ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, ২০০৯ সালের ১১ এপ্রিল ইরান ও তার দুই ভাই আরমান এবং ইমতিয়াজ মিলে তাদের আপন মামাতো ভাই এরশাদকে ছুরিকাঘাতে খুন করে। এরশাদের বাড়ি ছিল তাদের পাশাপাশি। বাড়ির সীমানা নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিরোধের কথা এবং হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের আরও তথ্য পুলিশের কাছে প্রকাশ করেন এরশাদের চাচী লায়লা বেগম। পুলিশ ইরান, আরমান ও ইমতিয়াজকে গ্রেফতার করে। এতে ক্ষুব্ধ হয় ইরানের পরিবার।
‘এরশাদ খুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তিন ভাই এক বছরেরও বেশি সময় জেল খেটে জামিনে বের হয়। এরপর থেকে তারা লায়লাকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। প্রায় পাঁচ বছর আগে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় আদালতে। আসামিরা তখন থেকে লায়লা এবং তার স্বামী-সন্তানকে সাক্ষ্য না দেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে আসছিল। কিন্তু হুমকি উপেক্ষা করে গত নভেম্বরে লায়লার স্বামী ও ছেলে আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর তাদের ওপর হামলা ও খুনের পরিকল্পনা করে ইরানরা,’— বলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, গত ১ জানুয়ারি সকালে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ইরান, আরমান ও ইমতিয়াজ মিলে লায়লা বেগম এবং তার ছেলে ওমর ফারুক রুবেলের ওপর হামলা করে। গুরুতর আহত লায়লা ৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ঘটনার পর তারা পালিয়ে গেলেও ইরানের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ইরানের বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় দুইটি হত্যাসহ মোট চারটি মামলা আছে বলে র্যাব জানিয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর