করোনা পজিটিভ দেখিয়ে নর্দার্নের ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যানের জামিন
১১ জানুয়ারি ২০২২ ১৭:৫৬ | আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২২ ১৮:০৭
ঢাকা: প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জামিন পেয়েছেন নর্দার্ন বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় তাকে জামিন করা হয় বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন বিকেলে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাইদুর রহমান মানিক, মিজানুর রহমানসহ অন্যরা আসামিদের জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অন্যদিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল বাতেন ও খন্দকার হযরত আলী আসামির জামিনের বিরোধিতা করেন।
জামিন শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, বর্তমানে আসামি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এ অবস্থায় আসামিকে কারাগারে নেওয়া হলে অন্যরা করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। এ অবস্থায় আসামির জামিনের প্রার্থনা করছি।
আরও পড়ুন- নর্দার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান গ্রেফতার
আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুই পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীকে কারাগারে পাঠানো যাবে না। এ কারণে তার জামিন মঞ্জুরের আদেশ দেন। তবে একই মামলায় ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ’র সহযোগী রিয়াজুল আলমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে, দুপুরে জানা যায়, এই মামলার শুনানি আজ (মঙ্গলবার) নেওয়া হবে না। অর্থাৎ ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ ও রিয়াজুল আলমকে কারাগারে যেতে হবে। ওই সময় খিলক্ষেত থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) সেলিম সারাবাংলাকে বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে জামিনসহ অন্যান্য শুনানির তারিখ পেছানোর জন্য আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক আগামীকাল (বুধবার) শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
বিকেলে জামিন হওয়ার পর অবশ্য আর জিআরও’র বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এসময় বাদীপক্ষের আইনজীবী কাজী নজরুল ইসলাম (রানা) সারাবাংলাকে বলেন, দুপুরে এক কথা শুনলাম, বিকেলে আরেক কথা। বিকেলে সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে আমাদের আবারও ডাকা হয়। বলা হয়, আজকের (মঙ্গলবার) মধ্যে শুনানি করতে হবে। বিকেলে দুই পক্ষের শুনানি শেষে চেয়ারম্যানের জামিন মঞ্জুর হয়, আরেক আসামি কারাগারে যাবেন।
এর আগে, গতকাল সোমবার (১০ জানুয়ারি) নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহসহ দুই জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় আশিয়ান ল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া মামলাটি দায়ের করেন। মামলাতে আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহর সহযোগী হিসেবে মো. রিয়াজুল আলম ও সেলিম মুন্সিসহ অজ্ঞাতনামা আরও ছয়-সাত জনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য আশিয়ান ল্যান্ডস ডেভেলপমেন্টের ৫ বিঘা জমি পছন্দ করে নর্দার্ন বিশ্ববিদ্যালয়। আলোচনাসাপেক্ষে ওই জমির মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে চেকের মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা পরিশোধ করে নর্দার্ন বিশ্ববিদ্যালয়। বাকি ২০ কোটি টাকা পরে পরিশোধ করার কথা বলা হয়।
মামলায় অভিযোগ আরও বলা হয়, পরবর্তী সময়ে নর্দার্ন বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহর কাছে বাকি ২০ টাকা চাইলে তিনি জানান, সব টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। পরে বাদী খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ওই জমি ৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকায় কেনা হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে সাফ কবলা দলিলে। আরও জানা যায়, দলিল সম্পাদনকারী মোহরার হিসেবে বাদীর অফিসের মোহরারের নাম থাকলেও তিনি এ ধরনের কোনো দলিল লেখার কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে জানিয়েছেন।
সারাবাংলা/এআই/টিআর
করোনা পজিটিভ জামিন মঞ্জুর টপ নিউজ ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি