ইউপি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বর্জন
৫ জানুয়ারি ২০২২ ১৩:০৭ | আপডেট: ৫ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:৪৯
ময়মনসিংহ থেকে: জেলার গফরগাঁও উপজেলার ৭ নম্বর মশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম-কারচুপির এবং ভোটারদেরকে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করার অভিযোগে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী এ কে এম ফেরদৌস আলম। একইসঙ্গে এজেন্টদেরকে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া এবং ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের এই বিদ্রোহী প্রার্থী এ কে এম ফেরদৌস আলমের প্রতীক হলো আনাসর। বুধবার (৫ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় ভোটকেন্দ্র বীর খারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
এ বিষয়ে ফেরদৌস আলম বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠ করার জন্য প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে র্যাব ও বিজিবি টহল দেওয়ার কথা শুনেছি। কিন্তু বাস্তবে তা দেখা যায়নি। প্রতিটি কেন্দ্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় নৌকার প্রার্থী মোস্তাফা কামাল মনির কর্মী ও সমর্থরা ভোট দিয়েছে। এ কাজে পুলিশ কোনো বাধা দেয়নি, অনেক ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে। নির্বাচনের আগেও তারা আমাকে আঘাত করেছে এবং এখনও তারা নানাভাবে আমাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি ইউপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানালেও তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। তাই নির্বাচন বর্জন করলাম আমি।
আরও পড়ুন: চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট দিতে হচ্ছে প্রকাশ্যে, মেম্বার গোপনে
এর আগে বুধবার সকাল থেকে ভোট শুরু হয়। এরপর থেকে ইউনিয়নের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে এসব কারচুপির অভিযোগ পাওয়া যায়। ইউনিয়নের বলদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেল, চেয়ারম্যান প্রার্থীর ব্যালট নিয়ে প্রকাশ্যে সিল মারছেন এজেন্টরা, তবে মেম্বার প্রার্থীর ভোটটি গোপনে দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।এছাড়াও ১ ও ২ নম্বর মহিলা বুথে এই চিত্র দেখা যায়। এই দুই বুথে সর্বমোট ভোটার রয়েছেন ৮৬১ জন।
ভোটারদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান প্রার্থীকে তারা ভোট দিতে পারছেন না। নৌকা প্রার্থীর এজেন্ট এবং কর্মীরা চেয়ারম্যান প্রার্থীর ব্যালট নিয়ে নিজেরাই ভোট দিচ্ছেন। তারা কেবল মেম্বার প্রার্থী ব্যালটে ভোট দিতে পারছেন ইচ্ছামত।
এর আগে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী ফেরদৌস আলম সারাবাংলাকে বলেন, আমার এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। নৌকায় প্রকাশ্যে সিল মারা হচ্ছে। ভোটাররা শুধু মেম্বারের ভোট দিতে পারছেন।
বর্তমান চেয়ারম্যান ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. মোস্তফা কামাল মনি বলেন, এটা আওয়ামী অধ্যুষিত এলাকা। ৮০ ভাগ ভোটার নৌকার। ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
প্রিজাইডিং অফিসার মো. রুহুল আমিন বলেন, আমার কাছে অভিযোগ আসার পর আনারস প্রতীকের এজেন্টদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কোথাও কোনো সমস্যা নেই।
এই মশাখালী ইউনিয়নের আরেকটি কেন্দ্র মুখী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোথাও আনারস প্রতীকের এজেন্ট নেই।
এখানকার প্রিজাইডিং অফিসার শাহ মো. কামরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, কোনো এজেন্ট আসেনি। এজেন্ট না আসলে আমাদের কিছুই করার নাই।
সারাবাংলা/জিএস/এনএস