কক্সবাজারে ১৪৪ ধারার মধ্যে বিএনপির আধাঘণ্টা সমাবেশ
৩ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:৪৮ | আপডেট: ৩ জানুয়ারি ২০২২ ১৮:০৯
কক্সবাজার: জেলা প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারার মধ্যে পূর্বনির্ধারিত স্থান মুক্তিযোদ্ধা মাঠের বদলে কেন্দ্রীয় ঈদগাঁও ময়দানে ৩০ মিনিটের সমাবেশ করেছে কক্সবাজার জেলা বিএনপি।
দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে সোমবার (৩ জানুয়ারি) সকালে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে দলটির কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সংক্ষিপ্ত ওই সমাবেশে জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বর্তমান সরকারের হাতে ভোট, গণতন্ত্র, দেশ ও জনগণ কোনো কিছুই আর নিরাপদ নয়। সু-চিকিৎসার অভাবে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার জীবন আজ বিপন্ন। তাকে বন্দি রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আমরা সরকারের এ আচরণে তীব্র ঘৃণা জানাচ্ছি।’
সমাবেশে এই দুই কেন্দ্রীয় নেতা বক্তব্য দেওয়ার এক পর্যায়ে সকাল ১০ টা ৪০ মিনিটের দিকে দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সেখানে পৌঁছে। এ সময় বিএনপি নেতারা সমাবেশস্থল থেকে সরে যান।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা হাকিম (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে বিএনপি পূর্বনির্ধারিত স্থানে সমাবেশ করেনি। তবে তারা (বিএনপি) সেখান কিছুটা দূরে ঈদগাঁও ময়দানে সমাবেশের জন্য জড়ো হয়েছিল। খবর পেয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারাসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌঁছান। পরে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে প্রশাসন বিএনপি নেতাদের সমাবেশ সংক্ষিপ্ত করার কথা জানালে তারা সেখান থেকে সরে যান।’
কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহাজাহান চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার দাবিতে দলের পক্ষ থেকে কক্সবাজারে একটি সমাবেশ করার জন্য কক্সবাজার ঈদগাঁও ময়দান, মুক্তিযোদ্ধা মাঠ ও শহিদ দৌলত ময়দানের যেকোনো একটি ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসন বরাবরে আবেদন করেছিলাম।’
‘প্রশাসন সে সময় মুক্তিযোদ্ধা ময়দান ব্যবহারের অনুমতি দেয়। কিন্তু দু’দিন পর সমাবেশ আয়োজন করতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। পরে স্থান পরিবর্তন করে শহিদ সরণির জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং তা প্রশাসনকে জানানো হয়’- বলেন শাহাজাহান চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘রোববার সকাল থেকে সমাবেশের মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করা হয়। এ সময় হঠাৎ জানাতে পারি, জেলা বিএনপি অফিস সংলগ্ন জেলা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আওয়ামী যুবলীগ একটি সমাবেশ ডেকেছে। এমন পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন সোমবার সকাল ৮টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত বিএনপি অফিস এবং শহিদ মিনার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে।’
শাহাজাহান বলেন, “নেতা-কর্মীর প্রচণ্ড চাপ ছিলে ‘১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে’ সেখানে সমাবেশ করার। কিন্তু আমরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে তাৎক্ষণিকভাবে অন্য কোনো স্থানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিই। পরে ৩০ মিনিটের মত একটি সমাবেশ করি।”
উল্লেখ, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার কক্সবাজারে সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা দেয় বিএনপি। একই দিনে একই স্থানে যুবলীগও সমাবেশের ডাকায় সংঘাত এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন।
সারাবাংলা/পিটিএম