ঘানির পালানোর বিষয়ে কিছুই জানতেন না সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী
৩ জানুয়ারি ২০২২ ১৪:১২ | আপডেট: ৩ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:৫১
আফগানিস্তানের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল বিসমিল্লাহ মোহাম্মাদি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানতেন না। রোববার (২ জানুয়ারি) আফগান দৈনিক ‘হাশতে সুবাহ’-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে বিসমিল্লাহ মোহাম্মাদি এ দাবি করেছেন। ওই নিবন্ধে তিনি উগ্রবাদী গোষ্ঠী তালেবানের হাতে ঘানি সরকারের পতনের শেষ সময়ের বর্ণনা দিয়েছেন।
নিবন্ধে বিসমিল্লাহ মোহাম্মাদি লিখেছেন, ১৫ আগস্ট বেলা ২টার পর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে পরপর তিনটি হেলিকপ্টার উড়তে দেখেছেন তিনি। তিনি ভেবেছিলেন এটি নিয়মিত কাজের অংশ। কিন্তু এরপর চতুর্থ হেলিকপ্টারটি উড়ে যাওয়ার পর সেনা সদরদফতর থেকে তাকে জানানো হয়, এগুলোর একটিতে প্রেসিডেন্ট ঘানি রয়েছেন। চারটি হেলিকপ্টারই উজবেকিস্তানের দিকে গেছে।
রোববার প্রকাশিত তার নিবন্ধে সাবেক আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, পালানোর ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট তার সঙ্গে কোনো শলাপরামর্শ করেননি। প্রেসিডেন্ট আকাশে ওড়ার আগ পর্যন্ত তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানতে না। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, ওই দিন সকালে প্রেসিডেন্টকে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকার অনুরোধ জানিয়েছিলেন—কিন্তু বেশিরভাগ মন্ত্রী বৈঠকে বসতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে ওই বৈঠক আর অনুষ্ঠিত হয়নি।
আরও পড়ুন- দুই মিনিটের প্রস্তুতিতে আফগানিস্তান ছেড়েছিলাম: আশরাফ ঘানি
উল্লেখ্য যে, গত সপ্তাহে বিবিসি রেডিও ফোরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঘানি দাবি করেছিলেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামদুল্লাহ মুহিব তাকে জানিয়েছিলেন, খুব দ্রুত তাকে পালাতে হবে। ঘানি দাবি করেন, ১৫ আগস্ট সকালে যখন জেগে উঠেন তখনও তার কাছে কোনো আভাস ছিল না যে তাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হবে। যখন তিনি কাবুল বিমানবন্দরে একটি বিমানে উঠেন তখন বুঝতে পারেছিলেন দেশ ছাড়ছেন তিনি।
ঘানি জানান, সে সময় কাবুলে তার কাছের কিছু লোক পালিয়ে যেতে তাকে রাজি করান। এর মধ্যে তার স্ত্রীও ছিলেন। এছাড়া তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাও ইতোমধ্যে পালিয়ে যান। সে সময় প্রেসিডেন্ট ভবনে তিনি (ঘানি) একটি গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন, যাতে চড়ে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে যেতে চেয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৫ আগস্ট কাবুল দখল করলেও কয়েক মাস আগে থেকেই শহরের উপকণ্ঠে জড়ো হয়েছিল তালেবান যোদ্ধারা। এসময় দেশের একের পর এক বড় শহর দখল করে নিচ্ছিল তালেবান। ওই মাসের শুরুতেই মার্কিন ও ন্যাটো সেনারাও আফগানিস্তান ত্যাগ করে। ফলে আগস্টের যে কোনো দিন কাবুলে তীব্র হামলা চালাবে তালেবান, এটা অনুমেয় ছিল। অবশেষে ১৫ আগস্ট দিনটি বেছে নেয় তালেবান। সেদিন অবশ্য তালেবানের দু’টি ভিন্ন দল রাজধানী দখলের প্রতিযোগিতা করে। এতে শহরে সংঘর্ষেরও আশঙ্কা তৈরি হয়। ওই দিন আফগানিস্তান ছেড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নেন আশরাফ ঘানি।
সারাবাংলা/আইই
আফগানিস্তান আশরাফ ঘানি কাবুল টপ নিউজ প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি বিসমিল্লাহ মোহাম্মাদি