লঞ্চে আগুন: দগ্ধ আরও এক শিশুর মৃত্যু
২ জানুয়ারি ২০২২ ২১:১৪ | আপডেট: ৩ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:০৭
ঢাকা: সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুনের ঘটনায় তামিম হাসান (৮) নামে দগ্ধ আরও এক শিশু চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। শিশুটির মা এবং ছোট বোনও লঞ্চে দগ্ধ হয়েছিল। তাদের ঢাকায় আনার সময় রাস্তাতেই মারা যায় তামিমের ছোট বোন মাহিনুর (৬)। মা জিয়াসমিন এখনো শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।
রোববার (২ জানুয়ারি) শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তামিমের। ইনস্টিটউটের আবাসিক সার্জন ডা. এস এম আইউব হোসেন তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডা. আইউব বলেন, শিশু তামিমের শ্বাসনালীসহ শরীরের ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। এখানে আনার পর প্রথম থেকেই তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরবর্তীতে নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। সেখানেই চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ (রোববার) সন্ধ্যায় সে মারা গেছে।
আরও পড়ুন- লঞ্চে আগুন: নানীর মৃত্যুর খবরে বাড়িতে, ফেরার পথে হারালেন মেয়েকে
বার্ন ইনস্টিটিউটের এই চিকিৎসক আরও জানান, তামিমের মা জিয়াসমিন দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে। তার শরীরের ১২ শতাংশ দগ্ধ। তিনিসহ লঞ্চের আগুনে দগ্ধ মোট ১৩ জন এখানে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে এক জনকে আইসিইতে রাখা হয়েছে।
মৃত তামিমের মা জিয়াসমিনের মামা মো. মামুন হোসেন চুন্নু জানান, স্বামী খলিলুল্লাহ ও দুই সন্তান নিয়ে বরগুনা সদরে থাকেন জিয়াসমিন। তার বাবার বাড়ি ঢাকার কেরাণীগঞ্জের শুভাড্যা এলাকায়। ১২ দিন আগে জিয়াসমিনের নানী মারা যান। এ খবর পেয়ে স্বামী খলিলুল্লাহ এবং দুই সন্তান তামিম ও মাহিনুরকে নিয়ে কেরাণীগঞ্জে এসেছিলেন জিয়াসমিন। খলিলুল্লাহ কয়েকদিন আগেই বরগুনা ফিরে যান। পরে ২৩ ডিসেম্বর রাতে দুই সন্তানকে নিয়ে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে করে জিয়াসমিন বরগুনা ফিরছিলেন।
লঞ্চে আগুন লাগলে দুই সন্তানসহ জিয়াসমিন দগ্ধ হন। তাদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে আসা হয়। তবে পথেই মারা যায় ছোট মেয়ে মাহিনুর। ছেলে তামিমসহ জিয়াসমিনকে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। ১০ দিন চিকিৎসাধীন থেকে ছেলে তামিমও পাড়ি জমাল না ফেরার দেশে।
মামুন হোসেন চুন্নু আরও জানান, ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন জিয়াসমিন। লঞ্চে আগুন লাগার পরদিন বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তির পর তিনি সন্তান প্রসব করেন। কিন্তু সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসকরা।
এদিকে, লঞ্চের আগুনে দগ্ধ শাহিনুর খাতুন স্বপ্না (৪০) গত বুধবার সন্ধ্যায় বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে মারা গেছেন। এর আগে, লঞ্চে আগুন লাগার পরের রাতেই ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হাবিব খান (৪৫) নামে আরও একজন।
আরও পড়ুন-
- অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক হামজালাল গ্রেফতার
- লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: সুগন্ধা নদী থেকে আরও ১ লাশ উদ্ধার
- অভিযান-১০ লঞ্চে নিখোঁজদের খোঁজে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ
- লঞ্চে আগুন— বিষখালী নদী থেকে আরও এক মরদেহ উদ্ধার
- ইঞ্জিন রুম থেকেই আগুন, অভিযান লঞ্চের চালক ‘ঠিক ছিল না’
- লঞ্চে আগুন— ২ তদন্ত দলের পরিদর্শনের পর অভিযান-১০ জব্দ
- নিখোঁজদের সন্ধানে ৩ নদীতে অভিযান, ঘাট থেকে সরানো হলো পোড়া লঞ্চ
সারাবংলা/এসএসআর/এসএসএ