Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তরুণ ও অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে আরও ভালো সেবা দেবো: হাবিবুল্লাহ এন করিম

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ ডিসেম্বর ২০২১ ২৩:০৮ | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ ২৩:৪৮

ঢাকা: ‘সবকিছুর কেন্দ্রে সদস্যরা, একসাথে গর্জাব আমরা’ স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ‘সিনার্জি স্কোয়াড’। ১০ সদস্যের এই প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শুরুর দিককার সফল উদ্যোক্তা হাবিবুল্লাহ এন করিম। তিনি টেকনোহেভেন কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও।

বেসিসের দুই বারের সভাপতি ও সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যও। প্যানেলটির পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে নানা প্রতিশ্রুতি। নির্বাচিত হলে বেসিসের সব সদস্যকে আরও ভালো সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করবে এই প্যানেলের সদস্যরা। নিশ্চিত করা হবে সবার জন্যে সমান সুযোগ। ভবিষ্যত বাংলাদেশ বিনির্মাণে বেসিসে ভিশনারি ও বাস্তবভিত্তিক (প্রাগম্যাটিক) লিডারশিপ প্রয়োজন। সেজন্যই অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ও তারুণ্যনির্ভর প্যানেল দেওয়া হয়েছে, যারা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল বয়ে আনতে পারবেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলার সঙ্গে আলাপকালে এমন কথাই জানিয়েছেন ‘সিনার্জি স্কোয়াডে’র প্যানেল লিডার হাবিবুল্লাহ এন করিম। বেসিস প্রতিষ্ঠায় হাবিবুল্লাহ এন করিমের ভূমিকা অগ্রগণ্য। সংগঠনটির দুই বারের নির্বাচিত সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সরকারের নানা নীতি নির্ধারণী ফোরামে ভূমিকা রেখেছেন বিভিন্ন সময়। দীর্ঘ দিন পর আবারও বেসিস নির্বাচনে এসেছেন।

আরও পড়ুন- বেসিস সেবায় ফিডব্যাক সিস্টেম চালু করব: শাহরুখ ইসলাম

সিনার্জি স্কোয়াডের নেতৃত্বে থাকা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সফল উদ্যোক্তা হাবিবুল্লাহ এন করিম বলেন, আমাদের প্যানেল অভিজ্ঞ ও তরুণদের নিয়ে। আমরা ৩৬০-ডিগ্রি ভিউ থেকে প্যানেল করেছি। বেসিসের দিকে যদি তাকাই, ৬০০ মেম্বার খুবই তরুণ, ৯০০ মেম্বর আছে মধ্যবয়সী। আবার খুবই অভিজ্ঞ ৩০০ মেম্বারও রয়েছেন। সামনের দিকে খাতটিতে তরুণ উদ্যোক্তা আরও বেশি হারে আসবে।

বিজ্ঞাপন

দু’টি কারণে নির্বাচনে এসেছেন জানিয়ে হাবিবুল্লাহ বলেন, নবীন ও প্রবীণদের যদি একটি ইউনিফায়েড প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে খাতটিকে এগিয়ে নেওয়া সহজ হবে। এখানে নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে। ব্লক চেইন, থ্রিডি প্রিন্টিং, ডাটা সায়েন্স, এআই ও অন্যান্য ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি চালু হয়েছে। এই ট্রানজিশনের সময় এখানে ভিশনারি লিডারশিপ দরকার, অভিজ্ঞ লিডারশিপ দরকার।

এই প্রযুক্তি উদ্যোক্তা বলেন, এখন থেকেই ব্লকচেইন প্রযুক্তি সম্পর্কে তথ্য তরুণদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আইওটি এবং অন্য সব নতুন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি আমাদের বর্তমান স্থানীয় ও বিদেশি বাজার ধরে রাখতে হবে। সেজন্য ভিশনারি ও বাস্তবভিত্তিক (প্রাগম্যাটিক) লিডারশিপ প্রয়োজন। বেসিসে এখন ১৮০০ মেম্বার, সামনে ১৮ হাজার মেম্বার হবে। এখানে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সেবা দেওয়া প্রয়োজন। ছোট-বড় সব সদস্যকেই যেন ভালো সার্ভিস দিতে পারি, সেই লক্ষ্যে কাজ করব। এখন আমাদের সার্ভিস রয়েছে ১৫ থেকে ২০টি সেগমেন্টে। সামনে ৫০টি সেগমেন্ট হবে। সেজন্যও আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতি নিতে হবে। সেজন্যই নির্বাচনে এসেছি।

আরও পড়ুন- ৪ দেশে ৪টি বেসিস ডেস্ক করতে চাই: রাশাদ কবির

সির্নাজি স্কোয়াডের এই প্যানেল লিডার বলেন, বেসিসের দ্রুত ক্রমবর্ধমান মেম্বারশিপ এবং সদস্যদের বিভিন্নমুখী উদ্যোগ বিকাশে প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বেসিস সচিবালয়ে ২০০২ ও ২০১৫ সালে নির্বাহী পরিচালক (সিইও) নিয়োগের মাধ্যমে সেরকম উন্নয়নের চেষ্টা করা হয়েছিল। আর্থিক ও কাজের পরিবেশসহ বিভিন্ন কারণে তা ধরে রাখা যায়নি। সেই বিষয়টির একটি সমাধান বেসিসের অগ্রযাত্রায় বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সে লক্ষ্যে আমার প্যানেল কাজ করবে।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অভিজ্ঞ এই উদ্যোক্তা বলেন, বেসিস একটি ট্রেড অর্গানাইজেশন। সফটওয়্যার ও আইটি সার্ভিস খাতের জন্য সুযোগ-সুবিধা, নীতিসহায়তা, বাজার উন্মুক্ত করার বিষয়ে সহযোগিতা সরকারের কাছ থেকে আদায় করা হয় বেসিসের মাধ্যমে। ব্যাংকিং খাত থেকে অর্থায়নের ব্যবস্থা করা, আন্তর্জাতিক অংশীজনদের সঙ্গে যোগাযোগ নিশ্চিত করা এবং এই খাতের অন্যান্য সাধারণ সুবিধাদির ব্যবস্থা করাই বেসিসের কাজ, যেন এই খাতের প্রবৃদ্ধি বাড়ে, যেন বেসিস সদস্যরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, বেসিস আইটি ব্যবসায়ীদের সংগঠন। কিন্তু এটি ব্যবসার জায়গা না। এটি পাবলিক ট্রেড বডি, এখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা বেসিসের মূল ম্যান্ডেট। আমরা সে লক্ষ্যে অবিচল থাকব।

আরও পড়ুন- তথ্যপ্রযুক্তিতে আগামী ৫০ বছরের জন্য বীজ বপন করতে চান রিসালাত

রফতানি আয়ে বেসিস সদস্যরা যেন আরও দ্রুত প্রণোদনা পায়, সেজন্য কাজ করবে এই প্যানেলটি। হাবিবুল্লাহ এন করিম বলেন, রফতানি আয়ে প্রণোদনা নিয়ে বহু বছর ধরে কাজ করছে বেসিস। সম্প্রতি তা বাস্তবায়ন হয়েছে। প্রায় ৩০০ কোম্পানি এই সুবিধা পেয়েছে। সামনে আরও অনেকেই পাবে। আমরা নির্বাচিত হলে এই প্রক্রিয়াটি আরও সহজ ও দ্রুততর করার জন্য কাজ করব।

তিনি বলেন, সরকারি ও আন্তর্জাতিক অর্থায়নে সফটওয়্যার ও আইটি সেবা কেনার ক্ষেত্রে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বেসিস পিপিআর ২০০৮ অনুমোদনের সময় থেকেই কাজ করে আসছে, যে প্রস্তাবনায় সরকার এরই মধ্যে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। খুব শিগগিরই এর সুফল সদস্যরা পাবেন। তা নিশ্চিত করতেও আমরা কাজ করব।

সিনার্জি স্কোয়াড সম্পর্কে হাবিবুল্লাহ বলেন, সিনার্জি স্কোয়াড সম্পূর্ণ নতুন প্যানেল। অভিজ্ঞতা ও তারুণ্য সমৃদ্ধ প্যানেল। এখানে বর্তমান বোর্ডের দু’জন সদস্য আছেন। বিগত ২৩ বছর ধরে বেসিস যা করে আসছে, তার ধারাবাহিকতা জরুরি। সব পাল্টে ফেললেই সব সমস্যার সমাধান হবে, তা নয়। বেসিসের শুরু থেকে সব ইসি বেসিসের সদস্যদের এবং এই খাতের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন, যার সুফল সবাই পেয়েছে। ইসি ও বেসিসের অন্যান্য কর্মকাণ্ডে যে সদস্যরা সময় দেন, তা পুরোপুরি সেচ্ছাসেবামূলক। এখানে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের মধ্যে দোষ-ভুল ধরে বিভেদ তৈরি করা একেবারেই সমীচীন নয়। আমাদের সবারই মনে রাখতে হবে— বেসিস কোনো ক্লাব নয় বা কোনো ভেস্টেড গ্রুপের স্বার্থ সংরক্ষণের স্থান নয়। বেসিস সব সদস্যদের জন্য এবং পুরো খাতের সার্বিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য।

আরও পড়ুন- বেসিস নির্বাচনে তারুণ্যের হাতছানি

অভিজ্ঞ এই উদ্যোক্তা আরও বলেন, সিনার্জি স্কোয়াড বেসিসের নবীন-প্রবীণ সব সদস্যদের নিয়ে দেশের সব বিভাগে একযোগে কাজ করবে। বহির্বিশ্বের সব বাজারে সরব ভূমিকা রাখবে। সর্বোপরি সরকার, একাডেমিয়া, আর্থিক খাতসহ সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিবিড় সহযোগিতার মাধ্যমে সফটওয়্যার ও আইটি সার্ভিস শিল্পকে বহু গুণ বাড়াতে সবাইকে নিয়ে কাজ করব। নির্বাচিত হলে সব সদস্যের উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।

সিনার্জি স্কোয়াডে হাবিবুল্লাহ এন করিমের সঙ্গে বেসিস নির্বাচনে সাধারণ ক্যাটাগরিতে পরিচালক পদে আরও লড়ছেন— স্পেকট্রাম সফটওয়্যার অ্যান্ড কনসাল্টিং (প্রাইভেট) লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুশফিকুর রহমান, অ্যাডভান্সড ইআরপি (বিডি) লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, ড্রিম৭১ বাংলাদেশ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাশাদ কবির, জেড এস সলিউশন্স লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দা খাদিজা দীনা, দ্য ডাটাবিজ সফটওয়্যার লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও রাশেদ কামাল, অ্যানালাইজেন বাংলাদেশ লিমিটেডের দ্য ম্যান অব স্টিল (চেয়ারম্যান), ক্রান্তি অ্যাসোসিয়েটসের পরিচালক ও সিইও মুহম্মদ রিসালাত সিদ্দীক এবং বন্ডস্টাইন টেকনোলজিস লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মীর শাহরুখ ইসলাম। এছাড়াও অ্যাসোসিয়েট ক্যাটাগরিতে আছেন ইওয়াইহোস্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান হোসেন ও অ্যাফিলিয়েট সদস্য ক্যাটাগরিতে আছেন মাইহেলথ বিডি ডটকমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. মঞ্জুরুল হক।

বেসিস নির্বাহী পরিষদ ২০২২-২০২৩-এর নির্বাচনে ভোট নেওয়া হবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর, গুলশানে বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচনে এবার মোট ভোটার ৮৭৬ জন। এর মধ্যে সাধারণ ভোটার ৬৫৪ জন, অ্যাসোসিয়েট ১৮২ জন, অ্যাফিলিয়েট ৩৭ জন ও আন্তর্জাতিক ভোটার তিন জন। নির্বাচনে সাধারণ সদস্যপদে লড়ছেন ২৪ জন, অ্যাসোসিয়েট পদে দুই জন, অ্যাফিলিয়েট পদে দুই জন এবং আন্তর্জাতিক পদে একজন। আন্তর্জাতিক পদে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় সৈয়দ এম কামাল বিনা প্রতিন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন। ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ২৮ জন।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

টপ নিউজ টেকনোহেভেন কোম্পানি লিমিটেড বেসিস নির্বাচন সিনার্জি স্কোয়াড হাবিবুল্লাহ এন করিম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর