তথ্যপ্রযুক্তিতে আগামী ৫০ বছরের জন্য বীজ বপন করতে চান রিসালাত
২৩ ডিসেম্বর ২০২১ ২১:৩০ | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ ২৩:৪৯
ঢাকা: বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) নির্বাচনে পরিচালক পদে লড়ছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের তরুণ উদ্যোক্তা মুহম্মদ রিসালাত সিদ্দীক। তিনি অ্যানালাইেজন বাংলাদেশ লিমিটেডের দ্য ম্যান অব স্টিল (চেয়ারম্যান) এবং ক্রান্তি অ্যাসোসিয়েটস্ লিমিটেডের পরিচালক ও সিইও। সিনার্জি স্কোয়াডের হয়ে বেসিসের পরিচালক পদে নির্বাচন করছেন।
নির্বাচিত হলে তথ্যপ্রযুক্তিখাতে আগামী ৫০ বছরের জন্য বীজ বপন করতে চান তিনি। নতুন নতুন প্রযুক্তিতে দেশীয় উদ্যোক্তারা যেন আরও বেশি সুযোগ পান, সে লক্ষ্যেও কাজ করবেন তিনি। আইসিটি সেক্টরে বাংলাদেশ যেন চিপ ডেসটিনেশনে পরিণত না হয় সে জন্য আরও বেশি ব্রান্ডিং করার পরিকল্পনাও রয়েছ তার। তরুণ এই উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা হলে সারাবাংলার কাছে তুলে ধরেছেন তার বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি।
সাধারণ ক্যাটাগরিতে পরিচালক পদে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নেওয়া মুহম্মদ রিসালাত সিদ্দীক বলেন, ‘আমাদের প্যানেলে রয়েছে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের এক অসাধারণ ‘সিনার্জি’। আমাদের প্যানেল লিডার বেসিসের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম একজন। সিনার্জি স্কোয়াডে যেমন রয়েছেন সাবেক ইসি মেম্বার, তেমনি রয়েছেন বিগত ইসি তে কাজ করা মানুষ। রয়েছেন বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটিতে অবদান রাখা উদ্যোক্তারা।’
একইসঙ্গে এই প্যানেলটিতে আমিসহ বেশকিছু নতুন মুখ রয়েছি— যারা বেসিসে নতুনত্বের ছোঁয়া নিয়ে এসেছেন। ‘সবকিছুর কেন্দ্রে সদস্যরা, একসঙ্গে গর্জাবো আমরা’ এ স্লোগানকে ধারণ করে দেশে ও বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের আইসিটি ও আইটিইএস ইন্ডাস্ট্রিকে ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই আমরা। সংগঠনের সদস্যদের জন্য ‘মেম্বার সার্ভিসেস’ ও ‘ইজ অব ডুইং বিজনেস’ নিশ্চিত করা আমাদের প্যানেলের লক্ষ্য।
আরও পড়ুন- বেসিস নির্বাচনে তারুণ্যের হাতছানি
এ ছাড়া ইন্ডাস্ট্রি অ্যানালাইসিস, ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিসহ গ্রোয়িং ইন্ডাস্ট্রিগুলোর জন্য পলিসি অ্যাডভোকেসি করতে চাই আমরা। দেশে বিদেশে নেটওয়ার্কিং, রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ও মেধাস্বত্বভিত্তিক অ্যাকসেস টু ফাইন্যান্স নিয়েও কাজ করে যাব আমরা। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় বেসিস সদস্যদের গর্জানোর পথ সহজ করার জন্য ‘সিনার্জি স্কোয়াড’ সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাবে।
রিসালাত বলেন, ‘আমাদের প্যানেলের সামগ্রিক পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ব্যক্তিগতভাবে দেশে বিদেশে বাংলাদেশের আইটি এবং আইটিইএস ইন্ডাস্ট্রিকে ব্র্যান্ডিং করতে চাই। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিং এর মত চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নির্ভর প্রযুক্তির জন্য দেশে রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ও মার্কেট ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করতে চাই। ডিজিটাল মার্কেটিং, ডিজিটাল কমার্স, ওটিটি ও কন্টেন্ট মনিটাইজেশন নিয়ে পলিসি অ্যাডভোকেসি নিয়ে অব্যাহতভাবে কাজ করব।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের লোকাল মার্কেটও বিশাল বড়। তারপরও এখানে দেশের বাইরের সফটওয়্যার ব্যবহৃত হচ্ছে। নিজেরাই নিজের দেশের সফটওয়্যারকে বিশ্বাস করিনা, সেখানে আমাদের ব্রান্ডিং এর প্রয়োজন রয়েছে। আমরা ব্রান্ড ডেভেলপ করবো, সফটওয়্যার ইন্ড্রাস্ট্রিতে মেইড ইন বাংলাদেশকে আরও প্রমোট করতে চাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে দেশের সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি আরও বেশি ব্রান্ডিং করতে চাই। দেশের বাইরেও আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে আরও ব্রান্ডিং করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোনোভাবেই আইটিতে ‘চিপ ডেসটিনেশন’ হতে চাই না। ডাটা সায়েন্স, বিগ ডাটা অ্যানালিটিক্স, মেশিন লার্নিং, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মতো খাতগুলোতে বাংলাদেশের শক্তিশালী রিসোর্স তৈরি এবং আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং ও নেটওয়ার্কিং এর সুযোগ তৈরি করতে চাই। ডিজিটাল মার্কেটিংসহ নতুন যত মার্কেট আছে যেমন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, ডিজিটাল কমার্স, কন্টেন্ট মনিটাইজেশন, অনলাইন পত্রিকা, এগুলো যাতে আরও বেশি সুযোগ পায় সে লক্ষ্যে কাজ করব। এ জন্য আমি পলিসি অ্যাডভোকেসি করব।’
রিসালাত বলেন, ‘আমি মনেপ্রাণে বিশেষ করে আমার এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ার এবং তরুণ উদ্যোক্তা হিসাবে অর্জিত জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অবদান রাখতে পারব। দেশ ও দেশের বাইরে আইটি এবং আইটিইএস ইন্ডাস্ট্রিকে ব্র্যান্ডিং ও মার্কেটিং করতে, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিং এর মত চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে প্রবেশ করতে যাওয়া বাংলাদেশে রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ও মার্কেট ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করতে চাই।’
তরুণ এই প্রার্থী বলেন, ‘ডিজিটাল মার্কেটিং, ডিজিটাল কমার্স, ওটিটি, ডিএসপি, ডিএমপি ও কন্টেন্ট মনেটাইজেশন নিয়ে পলিসি অ্যাডভোকেসি করতে আমি ব্যক্তিগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারব বলে বিশ্বাস করি। আমি বেসিস এর পক্ষে, আইসিটি ডিভিশন এর সঙ্গে এবং টেকনিকাল এডুকেশন বোর্ড এর সাথে ভলান্টিয়ার হিসেবে যা যা কাজ করেছি এবং নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে দেশে বিদেশে যে সাফল্য পেয়েছি তা আমাকে আত্মবিশ্বাসের খোরাক জোগায়। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশকে নিয়ে গর্বের একটা জায়গায় যেতে চাই। আগামী দুই বছরে ভবিষ্যৎ ৫০ বছরের জন্য বীজ বপন করতে চাই, বেসিসের প্রতিষ্ঠাতারা একসময় যে স্বপ্ন দেখেছিলেন।
বেসিস নির্বাহী পরিষদ ২০২২-২০২৩-এর নির্বাচনে ভোট নেওয়া হবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর, গুলশানে বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচনে এবার মোট ভোটার ৮৭৬ জন। এর মধ্যে সাধারণ ভোটার ৬৫৪ জন, অ্যাসোসিয়েট ১৮২ জন, অ্যাফিলিয়েট ৩৭ জন ও আন্তর্জাতিক ভোটার তিন জন। নির্বাচনে সাধারণ সদস্যপদে লড়ছেন ২৪ জন, অ্যাসোসিয়েট পদে দুই জন, অ্যাফিলিয়েট পদে দুই জন এবং আন্তর্জাতিক পদে একজন। আন্তর্জাতিক পদে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় সৈয়দ এম কামাল বিনা প্রতিন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন। ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ২৮ জন।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে