৬২৩ শরণার্থীকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাল থাইল্যান্ড
২০ ডিসেম্বর ২০২১ ১৩:২০ | আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:২২
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর সঙ্গে জাতিগত প্রতিরোধ গোষ্ঠীর তীব্র লড়াইয়ের মুখে পালিয়ে থাইল্যান্ডে আশ্রয় নেওয়া ৬২৩ শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
রোববার (১৯ ডিসেম্বর) থাই প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা শরণার্থীদেরকে ফেরত পাঠানোর এই খবর জানিয়েছেন।
এদিকে, মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চল থেকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক সংবাদদাতা রোববার বিকেলেও অবিরাম গুলির আওয়াজ শুনতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতির মধ্যেই সকালের দিকে রয়টার্সের সাংবাদিকরা থাইল্যান্ডের স্থানীয় একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া কয়েক ডজন শরণার্থীকে সীমান্তের ওপারে ফেরত পাঠানোর জন্য তিনটি ট্রাকে তুলতে দেখেছেন।
থাইল্যান্ডের তাক প্রদেশের গভর্নর সোমচাই বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, লড়াইয়ে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় অনেক শরণার্থী স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরতে চাইছেন।
সোমচাই বলেন, এ পর্যন্ত ৬২৩ জন শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এখনও ২,০৯৪ জন শরণার্থী থাইল্যান্ডে অবস্থান করছে। তারা মিয়ানমারে ফিরতে চাইলে তাদেরকেও ফেরত পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) এশিয়া অঞ্চলের উপ-পরিচালক ফিল রবার্টসন থাইল্যান্ডকে তাড়াহুড়ো করে শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত না পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের পক্ষ থেকে করা ফোনকলের কোনো সাড়া দেননি মিয়ানমারের সামরিক জান্তার মুখপাত্র। দেশটির সেনাবাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের নির্বিচারে লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।
থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের শরণার্থী অধিকার সংগঠন দ্য এইড অ্যালায়েন্স কমিটি বলছে, থাইল্যান্ডে প্রবেশের অপেক্ষায় মিয়ানমার সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১,০০০ বাস্তুচ্যুত মানুষ অবস্থান করছে।
এর আগে, ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারকে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই দেশটিতে সামরিক জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলে আছে। গ্রামাঞ্চলের জঙ্গলে জঙ্গলে জান্তার বিরুদ্ধে লড়তে সংগঠিত হচ্ছে সাধারন মানুষ ও কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠী। মাঝে মধ্যেই তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ হচ্ছে।
মিয়ানমারের সবচেয়ে পুরোনো বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের (কেএনইউ) সঙ্গে সম্প্রতি সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। এ সহিংসতা থেকে বাঁচতেই কারেন রাজ্য থেকে পালিয়ে থাইল্যান্ড সীমান্তে আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ। অনেকে মিয়ানমার এবং থাইল্যান্ডের মাঝের ছোট ছোট নদী পাড়ি দিচ্ছেন নৌকায় করে। আবার কেউ কেউ শিশুকে হাতে উঁচু করে তুলে ধরে বুক সমান পানি পেরিয়ে থাইল্যান্ডের দিকে ছুটছেন।
সারাবাংলা/একেএম