গণতন্ত্র না থাকলে উন্নয়ন ধুয়ে পানি খাব?— প্রশ্ন জাফরুল্লাহ’র
১৯ ডিসেম্বর ২০২১ ২২:১৫ | আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ ২৩:৫৯
ঢাকা: সরকার উন্নয়নের অগ্রযাত্রার কথা বললেও গণতন্ত্র না থাকলে সত্যিকারের উন্নয়ন হয় না বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, আজ অনেকেই উন্নয়নের কথা বলেন। গণতন্ত্র না থাকলে উন্নয়ন ধুয়ে কি পানি খাব? গণতন্ত্র না থাকলে সত্যিকারের উন্নয়ন হয় না। আমরা একাত্তরে যুদ্ধ করেছিলাম ভোটের অধিকারের জন্য। সেই অধিকার যদি না থাকে, খোলা মনে যদি কথা বলতে না পারি, তাহলে লাভটা কী?
রোববার (১৯ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে গণফোরামের একাংশ আয়োজিত ‘দুঃশাসন উত্তরণে বীর মুক্তিযোদ্ধার চোখে আজ ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গণফোরামের একাংশের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা পরিচালনা করেন এই অংশের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।
আলোচনা সভায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ডা. জাফরুল্লাহ। তিনি বলেন, গণফোরামের অনেক কাজ আছে। যেমন আমাদের ডেকেছেন। সেভাবেই সবাইকে ডাক দিয়ে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ নিন। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারলেই আগামীর বাংলাদেশ সুন্দর হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
আলোচনা সভায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, আমি তরুণদের বলছি— দেশ তোমাদের। এই দেশ রক্ষার জন্য যুদ্ধ তোমাদেরই করতে হবে এই দুর্দশা থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হবে। একটা কথা মনে রাখবেন— সম্পদ হারালে সম্পদ পাওয়া যায়, কিন্তু মেধা ধ্বংস করে দিলে তা সহজে তৈরি করা যায় না। এই রাতের ভোটের অবৈধ সরকারকে মেধা ধ্বংস করা রুখতে তরুণ প্রজন্মকেই এগিয়ে আসতে হবে।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী (বীর উত্তম) বলেন, গণফোরামকে বলছি— আপনাদের রাস্তায় নামতে হবে। ছাদের নিচে বসে প্রোগ্রাম করলে হবে না। বঙ্গবন্ধুর শ্রেষ্ঠ অর্জন ছিল ভীত বাঙালিকে সাহসী করে তুলেছিলেন। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অর্জন, তিনি সেই সাহসী বাঙালিলীকে রাস্তার ফকির বানিয়ে দিয়েছেন। যৌক্তিকভাবে নিজের সমালোচনা করতে হবে। জনতার আস্থার জায়গায় যেতে হবে। সম্মিলিত মানুষ সবচেয়ে বড় শক্তি। তারাই রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক। তাদের ক্ষমতা বাড়াতে হবে। তবেই মিলবে মানুষের মুক্তি, ফিরে আসবে গণতন্ত্র।
মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত হবে। আপনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন, চেতনা এমনিতেই প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু ২০১৮ সালের রাতের ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না।
তিনি বলেন, আগামীতে একটি জাতীয় ঐক্য হওয়া প্রয়োজন আছে। যে ঐক্য সত্তরে হয়েছিলো, ঊনসত্তরে আইয়ুব খান যে ঐক্যের মাধ্যমে পরাজিত হয়েছিল, যে ঐক্যের মাধ্যমে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে আমরা বিজয়ী হয়েছিলাম। সেই ঐক্য আমাদের আনতে হবে। এই বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে সবাইকে নিয়ে একটি গ্র্যান্ড কনভেনশন করতে হবে, যা এরই মধ্যে আমরা আমাদের গণফোরামের জাতীয় সম্মেলনে প্রস্তাব করেছি।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, সভাপতি পরিষদের সদস্য আব্দুল হাসিব চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা খান সিদ্দিকুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. হেলাল উদ্দিন, মহিলা সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন শাপলা।
ফাইল ছবি
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর