ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিমা, যমুনা ইনস্যুরেন্সের চেক হস্তান্তর
১২ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:১৭
ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নিয়মিত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিমা প্রদানের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথম পর্যায়ে ৩৫টি চেক হস্তান্তর করেছে যমুনা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
রোববার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের বিশেষ কনফারেন্স কক্ষে যমুনা লাইফ ইনস্যুরেন্সের পক্ষে চেক হস্তান্তর করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বদরুল আলম খান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে চেক গ্রহণ করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, ‘একসময় আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনার প্রয়াস নিয়েছিলাম। যমুনা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি সহযোগী হিসেবে এই কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে। এটি অবশ্যই আনন্দের।’
এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান পুরো বীমা প্রক্রিয়াটি ‘ক্যাশলেস’ করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘আমি অনুরোধ করব— যাতে পুরো প্রক্রিয়াটি ক্যাশলেস করা হয়। অর্থাৎ অনলাইন-নির্ভর করা হয়। এতে শিক্ষার্থীরা অভ্যস্ত হবে।’
যমুনা লাইফ ইনসিউর্যান্সের চেয়ারম্যান বদরুল আলম খান বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত জীবনে এই বিষয়টি সম্মান ও গর্বের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশের সেরা প্রতিষ্ঠান। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিমার আওতায় আনার ক্ষেত্রে সহযোগী হিসেবে থাকতে পেরে যমুনা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড অত্যন্ত গর্বিত।’
তিনি বলেন, ‘বিমা— আস্থা ও সেবা। আমরা কোনো দ্রব্য বিক্রি করি না। আমরা মানুষের কাছে যাই তার আস্থা অর্জনের জন্য। আমরা মানুষের ঝুঁকি গ্রহণ করি। সেক্ষেত্রে আমাদের পুঁজি হলো সেবা। যমুনার চেয়ারম্যান আমি অত্যন্ত সচেষ্ট থাকব, যাতে ঢাবির শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণভাবে সেবাটি পায়।’
এ সময় বিমা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে যমুনা লাইফ ইনসিউর্যান্স কোম্পানি সর্বোচ্চ সচেষ্ট থাকবে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বদরুল আলম খান।
যমুনা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুল হাসান খন্দকার বলেন, ‘উপাচার্য মহোদয় প্রক্রিয়াটি ক্যাশলেস করার কথা বলেছেন। আমি জানাতে চাই, প্রক্রিয়াটি ইতোমধ্যেই ক্যাশলেস করা আছে। এ ছাড়া হটলাইন, ডেডিকেটেড লাইন দেওয়া আছে। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা সহায়তা পেতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সার্বিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানানোর জন্য আমরা সেমিনার করব। গেট টুগেদার করব৷ এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পারবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘মাত্র ২৭০ টাকা প্রিমিয়ামে শিক্ষার্থীরা এই সেবাটি পাচ্ছে। সমগ্র বাংলাদেশে এই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই কার্যক্রম থেকে আপাতত হয়তো যমুনা লাইফ ইনস্যুরেন্স লাভ হবে না, তবে দীর্ঘস্থায়ী চিন্তা করলে তারাও লাভবান হবেন, আমরাও লাভবান হব।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদসহ আরও অনেকে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর জুলাই মাস থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিমা ও জীবনবিমা প্রকল্পের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বাৎসরিক ২৭০ টাকা প্রিমিয়াম প্রদান করে শিক্ষার্থীরা তালিকাভুক্ত বিভিন্ন হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন। এক্ষেত্রে প্রত্যেক শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে বার্ষিক সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা বিমা সুবিধা পাবেন। এর মধ্যে হাসপাতালে থাকাকালীন কেবিন/ওয়ার্ড ভাড়া, হাসপাতাল সেবা, অস্ত্রোপচার জনিত ব্যয়, চিকিৎসকের পরামর্শ ফি, ওষুধ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিল বাবদ দৈনিক সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা চিকিৎসা ব্যয় পাওয়া যাবে।
এ ছাড়া বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য বার্ষিক ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকবে। এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বহির্বিভাগ চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য বার্ষিক ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এরমধ্যে বহির্বিভাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যয় অর্ন্তভুক্ত থাকবে এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ফি বাবদ প্রতি ব্যবস্থাপত্রে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পাওয়া যাবে।
সারাবাংলা/আরআইআর/এনএস