Friday 03 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অতিথি পাখি শিকারে হাকালুকি হাওরে তৎপর সংঘবদ্ধ চক্র

হৃদয় দেবনাথ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:৫০ | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২১ ১২:১৭

বিক্রি করার জন্য পাখি ধরে নিয়ে যাচ্ছেন এক শিকারি, ছবি; সারাবাংলা

মৌলভীবাজার: এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরে নির্বিচারে অতিথি পাখি নিধন চলছে। পাখি নিধনে সংঘবদ্ধ শিকারি চক্র বেশ তৎপর হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন থেকে অরক্ষিত থাকার কারণে বেড়েই চলছে এই চক্রটির দৌরাত্ম্য। বিষটোপের পাশাপশি অভিনব কৌশলে ফাঁদ পেতে অতিথি পাখি শিকার করছে চক্রটি। একইসঙ্গে প্রভাবশালী সৌখিন ব্যক্তিরাও শিকার করছেন এসব পাখি।

সুদূর সাইবেরিয়া ও হিমাচল প্রদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শীতকালে অতিথি পাখিরা দেশের বৃহত্তম এই হাকালুকি হাওরে আসে। আগে প্রতি বছরের নভেম্বর মাস থেকেই ৫০ থেকে ৬০ প্রজাতির অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত হয়ে উঠত হাকালুকি। বর্তমানে আগের চেনা দৃশ্যপট সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। হাকালুকির কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা অঞ্চলের চকিয়া, নাগুয়া, ফুটবিল, পিংলা, চাতলা, ফোয়ালা, বালিজুরি ও জল্লাসহ কয়েকটি বিল সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শামুকখোল, পানকৌড়ি, লেঞ্জা ও মাছরাঙাসহ বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির সমাগম হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

হাওরে কৃষিকাজ ও মৎস্য আহরণের কাজে জড়িত মামুন মিয়া, আব্দাল হোসেন, রসিম মিয়াসহ আরও কয়েকজন কৃষক জানান, নিরাপদ বিচরণের অভাব ও শিকারিদের উৎপাত বৃদ্ধি পাওয়ায় গত দুই বছর ধরে পাখি কম আসছে হাওরে। এজন্য প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন তারা। ২০১৪ সালে যেখানে ১৭টি অভয়াশ্রম ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেটার সংখ্যা কমে ১২টিতে দাঁড়িয়েছে। এসব অভয়াশ্রমে তদারকির অভাবেই তৎপরতা বেড়েছে পাখি শিকারিদের।

বিলের পাহারাদার মতিন মিয়া, হাওরের কৃষক আবু তাহের, জালাল মিয়া ও বাতান ব্যবসায় জড়িত আব্দুল মাজেদসহ আরও কয়েকজন জানান, পাখি শিকারিরা দিনের বেলা গরু-মহিষ চড়ানো, ধান চাষ, হাঁস চড়ানোর নামে ছদ্মবেশে হাওরে ঘোরাঘুরি করে। এ সময় সুযোগ বুঝে বিষটোপের মাধ্যমে পাখি শিকার করে তারা সটকে পড়ে। আর সন্ধ্যার পর থেকেই ১০-১২ জন সংঘবদ্ধ হয়ে পাখি শিকারে নামে। তারা এ সময় জাল দিয়ে ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করে গভীর রাত পর্যন্ত। ভোর হওয়ার আগেই হাওর থেকে চলে যান তারা।

বিজ্ঞাপন

পিংলা বিলের পাশে গরু চড়ানোয় ব্যস্ত কিশোর শরীফ, সবুজ, সজিব জানায়, শিকারিরা পুঁটি মাছের ভিতর পটাশ ভরে বিলের পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখে যায়। পাখিরা ওই সব মাছ খেয়ে মাথা ঘুরে পড়ে গেলে শিকারিরা এসে পাখিগুলো জবাই করে নিয়ে যায়। প্রায়ই শিকারিরা এক থেকে দেড়শ’ টাকার বিনিময়ে ওই পাখিগুলো হাওর থেকে পাচারের জন্য তাদের ব্যবহার করে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান সারাবাংলাকে বলেন ,অথিতি পাখিসহ সব প্রজাতির পাখি রক্ষায় ইতোমধ্যে প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি। পাখি শিকারে জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

তবে শিকার রোধে স্থানীয় পর্যায় থেকে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রত্যাশা করেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান।

সারাবাংলা/এনএস

অতিথি পাখি শিকার হাকালুকি হাওর

বিজ্ঞাপন

না ফেরার দেশে অঞ্জনা
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৫৪

এই তাসকিনকে সমীহ করবেন যে কেউ
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৪৭

আরো

সম্পর্কিত খবর