Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডাকাতি করতে ঢুকে ধর্ষণ: ৫ জনের ৬০ বছর করে কারাদণ্ড

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৯ ডিসেম্বর ২০২১ ১৮:১৫ | আপডেট: ৯ ডিসেম্বর ২০২১ ২১:১৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চার বছর আগে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় এক বাড়িতে ঢুকে ডাকাতি ও নারী ধর্ষণের মামলায় পৃথক ধারায় পাঁচ জনকে দুই বার করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর ফলে প্রত্যেক আসমিকে ৬০ বছর করে কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। একই রায়ে আদালত অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় একজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৬-এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার মো. মঈন উদ্দীন এ রায় দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

দণ্ডিতরা হলেন— মিজান মাতব্বর, আবু সামা, মহিদুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, ইলিয়াছ শেখ ও আব্দুল হান্নান ওরফে হান্নান মেম্বার। এদের মধ্যে আব্দুল হান্নান খালাস পেয়েছেন। ছয় আসামির মধ্যে ইলিয়াছ শেখ পলাতক আছেন।

ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, ডাকাতির অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩৯৫ ও ৩৯৭ ধারায় প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ডাকাতি করতে ঢুকে ওই বাড়িতে নারী ধর্ষণের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৩)/৩০ ধারায় একই সাজা ঘোষণা করেছেন বিচারক। রায় অনুযায়ী, দুই ধারায় তাদের ৩০ বছর করে মোট ৬০ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর গভীর রাতে কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের এক বাড়িতে ডাকাতির সময় তিন প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রী ও তাদের এক বোনকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় মামলা দায়ের হয়।

আরও পড়ুন- ডাকাতি করতে ঢুকে ২ নারীকে ধর্ষণ: ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

ঘটনার ২১ মাস পর ২০১৯ সালের ৩০ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম মহানগরের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ডাকাতির সময় চার নারীকে ধর্ষণের কথা বলা হলেও আসামিদের জবানবন্দি, ভিকটিমদের সাক্ষ্য থেকে জানা গেছে— চার জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করলেও দু’জনকে তারা ধর্ষণ করতে পেরেছিল। অভিযোগপত্রে ছয় জনকে আসামি করা হয়, যাদের মধ্যে পাঁচ জনকে পিবিআই গ্রেফতার করেছিল।

বিজ্ঞাপন

ওই মামলায় ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণে মোট ২১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পিপি নজরুল ইসলাম।

চার বছর আগে বাড়িতে ঢুকে ডাকাতি ও ধর্ষণের এই ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে আলোড়ন ফেলেছিল। আক্রান্ত নারীরা সেসময় কর্ণফুলী থানায় মামলা করতে গেলেও ঠিকানা জটিলতার কথা বলে তাদের মামলা নিতে গড়িমসি করে পুলিশ। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য ভূমি প্রতিমন্ত্রী (বর্তমানে মন্ত্রী) সাইফুজ্জামান চৌধুরীর হস্তক্ষেপে পাঁচ দিন পর মামলা নেওয়া হয়। মামলা নিতে গড়িমসি ও এজাহারে ত্রুটি থাকায় কর্ণফুলী থানার তৎকালীন ওসিকে শোকজ করেছিলেন আদালত। ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর সদর দফতরের নির্দেশে মামলার তদন্তভার নেয় পিবিআই।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক পিবিআই পরিদর্শক ও বর্তমানে নগরীর খুলশী থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘মামলাটি ছিল একেবারে ক্লুলেস একটি মামলা। পূর্ণাঙ্গ ঘটনা পেতেও আমাদের বেগ পেতে হয়েছে। কারণ ঘটনার আকস্মিকতায় আক্রান্তরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। আসামিরা ছিল একেবারে অজ্ঞাত। পরবর্তী সময়ে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি ও নিজস্ব সোর্স ব্যবহার করে মিজান মাতব্বর ও আবু সামা নামে দু’জনকে গ্রেফতার করি। এ দু’জন আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আব্দুল হান্নান ওরফে হান্নান মেম্বারের পরামর্শে ওই বাড়িতে ডাকাতি করেছিল বলে জানান। এরপরই মূলত মামলার তদন্তে অগ্রগতি হয়। রায়ে আসামিদের শাস্তি হওয়ায় ভালো লাগছে।’

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

৫ জনের কারাদণ্ড ৬০ বছরের কারাদণ্ড টপ নিউজ ডাকাতি করতে ঢুকে ধর্ষণ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল

বিজ্ঞাপন

লস অ্যাঞ্জেলসে দাবানল, নিহত ৫
৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৪৩

২৪ ম্যাচ পর হারল লিভারপুল
৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৩১

আরো

সম্পর্কিত খবর