কোভিড অভিঘাত: খাদ্য-পুষ্টি নিশ্চিতে ৫ প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
৭ ডিসেম্বর ২০২১ ১৯:৫৫ | আপডেট: ৭ ডিসেম্বর ২০২১ ২১:৫২
ঢাকা: বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টির যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে জরুরি উদ্যোগ ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে পাঁচটি প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) টোকিও নিউট্রিশন ফর গ্রোথ সামিট ২০২১-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন। নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পুষ্টি সংক্রান্ত জাতিসংঘের দশকব্যাপী পরিকল্পনা অর্ধেক পথ পেরোচ্ছি আমরা। এই সময়ে সব ধরনের পুষ্টিহীনতার অবসান ঘটাতে বিশ্বজুড়ে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে সাহসী অঙ্গীকারের সময় এসেছে। সব নাগরিকের জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করা কঠিন কাজ হলেও পুষ্টি নিরাপত্তায় বিনিয়োগে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে উপকার অনেক, যা টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথে নিয়ে যায়।
শেখ হাসিনা বলেন, চলমান কোভিড ১৯ মহামারির কারণে আমাদের পুষ্টি উদ্যোগগুলো মারাত্মক ধাক্কা খেয়েছে। মহামারির প্রতিবন্ধকতাগুলো কাটানোর পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টির ক্ষেত্রে তার ক্ষতি মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার প্রয়োজন।
গত এক দশকে বাংলাদেশ অর্থনীতি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য ও পুষ্টিতে ব্যাপক সাফল্য ও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে বলে বক্তব্য জানান প্রধানমন্ত্রী। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে আওয়ামী লীগ সরকার অনেক উদ্যোগ নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য ভাতা চালু করা হয়েছে। অসচ্ছল গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের নগদ ভাতা দেওয়া হয়। স্কুল ছাত্রদের জন্য ‘মিড ডে মিল’ চালু করা হয়েছে। আমরা খাদ্য নিরাপত্তা এবং উন্নত পুষ্টির লক্ষ্যে শস্য, শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম ও ফলের উৎপাদন বহুমুখী করছি।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করতে এসময় পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রস্তাবগুলো হলো— কোভিড ১৯ চ্যালেঞ্জ ও পুষ্টি কর্মসূচিতে এর প্রভাব মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করতে হবে; উচ্চ ফলনশীল পুষ্টিকর খাবার বাড়ানোর জন্য অগ্রিম গবেষণার জন্য সহযোগিতা বাড়াতে হবে; জরুরি দুর্যোগ থেকে নিরাপদ রাখতে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে খাদ্য ব্যাংক গড়ে তুলতে হবে; খাদ্যে পুষ্টি উপাদান বাড়াতে সর্বোত্তম অনুশীলন ও দক্ষতা বিনিময় করতে হবে; এবং জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে উন্নয়নশীল বিশ্বে চরমভাবাপন্ন পরিবেশে ব্যাহত হওয়া খাদ্য উৎপাদন পুষিয়ে নিতে প্রতিশ্রুত জলবায়ু অভিযোজন তহবিল দ্রুত বিতরণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এসডিজি অর্জন এবং পুষ্টির ফলাফল উন্নত করার জন্য পূর্ববর্তী পুষ্টি সম্মেলনে আমাদের প্রতিশ্রুতিগুলিকে শক্তিশালী করা। আজ আমরা ১২টি প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে অপুষ্টির দ্বিগুণ বোঝা মোকাবিলা করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যা এসডিজি’র সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
উচ্চ পর্যায়ের এই অধিবেশনে আরও বক্তৃতা করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশোদা ফুমিও, ডিআরসি প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স আন্তোইন শিসেকেদি শিলোম্বো, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস, ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম, ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোরসহ অন্যরা।
সম্মেলনে পূর্ব তিমুরের প্রধানমন্ত্রী তাউর মাতান রুয়াক এবং এল সালভাদরের ফার্স্ট লেডি গ্যাব্রিয়েলা রদ্রিগেজের ভিডিওবার্তাও প্রচার করা হয়।
সারাবাংলা/টিআর
টপ নিউজ টোকিও নিউট্রিশন ফর গ্রোথ সামিট ২০২১ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা