পদত্যাগ করলেই হবে না, গ্রেফতার করতে হবে: রিজভী
৭ ডিসেম্বর ২০২১ ১৪:৫৮ | আপডেট: ৭ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:৩৯
ঢাকা: শুধু পদত্যাগ নয়, কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ায় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীকে গ্রেফতার এবং বিচার দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি জানান।
রিজভী বলেন, ‘শুধু পদত্যগ নয়, তাকে (ডা. মুরাদ হাসান) গ্রেফতার করতে হবে, বিচার করতে হবে। এই ধরনের একজন ব্যক্তি রাজনীতি করার অযোগ্য। সে যে কুরুচিপূর্ণ, অশ্রাব্য কথা বলেছেন, তাতে তার বিচার হওয়া উচিত। তাকে সকল পর্যায়ের পদ থেকে সরিয়ে দিতে হবে। শুধু মন্ত্রিপরিষদ থেকে নয়, সে যে অন্যায় কথা বলেছে, তাতে বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। তার বিচার করতে হবে, তাকে শাস্তি দিতে হবে, গ্রেফতার করতে হবে।’
খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে বিনা ভোটের সরকার। দেশের জনগণের আর বুঝতে বাকি নেই যে, প্রতিহিংসাপরায়ণ প্রধানমন্ত্রীর প্রধান টার্গেট এখন দেশনেত্রীকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া।’
রিজভী বলেন, ‘মৃত্যুর সাথে লড়াই করা দেশনেত্রীর সমস্ত মৌলিক মানবাধিকার, সাংবিধানিক অধিকারকে পদদলিত করে তাকে সুচিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। বিদেশে উপযুক্ত চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে সূক্ষ্ম মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে কিনা, এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে জনমনে।’
তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে যখন ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে নেওয়া হয়েছিল, তখন তিনি হেঁটে গেছেন। কিন্তু আজ কেন তার এই ভয়ানক অবনতিশীল শারীরিক অবস্থা? এ প্রশ্নের জবাব সরকার, কারাগার ও পিজি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একদিন দিতেই হবে। আরেকটা প্রশ্নের জবাবও সরকারকে দিতে হবে। এখন দেশনেত্রীর জীবনকে নিঃশেষ করে দিতে শেখ হাসিনার প্রকাশ্য প্রতিহিংসার প্রকাশ দেখা যাচ্ছে নানাভাবে।’
‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। এতেই প্রমাণ হয়- সরকার দেশনেত্রীর সুচিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ যেতে দিতে রাজি নয়, তিলে তিলে তাকে নিঃশেষ করাই এই মুহূর্তে আওয়ামী সরকারের কর্মসূচি’- বলেন রুহুল কবির রিজভী।
খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকরা বলছেন-বাংলাদেশে তার চিকিৎসা সম্ভব নয়। দ্রুত বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা না দিলে তাকে বাঁচানো যাবে না। বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবিতে দেশবাসী যখন সোচ্চার, বাজার-বন্দর-হাট-ঘাট-চায়ের দোকান-গণমাধ্যম-সোশ্যাল মিডিয়া-রাজপথে প্রতিবাদী মিছিলে সর্বত্র যখন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে একাট্টা তখন মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে নিতে নতুন নতুন নাটক তৈরি করা হচ্ছে।’
রিজভী বলেন, ‘অবৈধ সরকারের মন্ত্রিত্বের সুযোগ নিয়ে প্রতিদিন বিএনপি তথা জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে খিস্তিখেউড় করাই ছিল তথ্যপ্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের একমাত্র কাজ। খিস্তিখেউড়ে তথ্য-প্রতিমন্ত্রী তার সিনিয়রদের অতিক্রম করে দিনে দিনে দুর্বিনীত হয়ে উঠেছিল। ভব্যতা, সভ্যতার সকল সীমা অতিক্রম করে মুরাদ জনগণের সামনে দানবের মতো আবির্ভূত হয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘নারীবিদ্বেষী, বর্ণবিদ্বেষী ডা. মুরাদ হাসানের বিকৃত বক্তব্য সারা জাতিকে হতবাক ও স্তম্ভিত করেছে। অসুস্থ মানসিকতার একজন ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা থাকলে সে যে বিকারগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে, তথ্য-প্রতিমন্ত্রী মুরাদ সেটির প্রমাণ। এরকম একজন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েই মন্ত্রী হয়ে ক্ষমতার আস্ফালনে দুর্বৃত্ত ও সন্ত্রাসীতে পরিণত হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, শিরিন আক্তার, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, মহিলার দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এএম