Friday 10 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৬ ডিসেম্বর ২০২১ ১৭:১৭ | আপডেট: ৬ ডিসেম্বর ২০২১ ২২:২৯

পাকিস্তানে এক শ্রীলংকান নাগরিককে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে হত্যা করেছে একদল উন্মত্ত জনতা। গত শুক্রবার দেশটির শিয়ালকোটে ওই ব্যক্তিকে পিঠিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সোমবার পর্যন্ত ১২০ জনের বেশি সন্দেহভাজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে পাকিস্তান ও শ্রীলংকায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন হাজারো মানুষ।

সোমবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়েছেন, শিয়ালকোটে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে শ্রীলংকান নাগরিককে হত্যায় অভিযুক্ত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনাকে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার দেশের জন্য লজ্জাজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে নিহত প্রিয়ন্তা কুমারের স্ত্রী নিলুশি দিশানায়েক পাকিস্তান ও শ্রীলংকা উভয় দেশের সরকারের প্রতি এ ঘটনার বিস্তারিত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি এই ঘটনার ভিডিও ইন্টারনেটে দেখেছি, এটি চরম অমানবিক ঘটনা। আমার স্বামী ও সন্তানদের জন্য ন্যায়বিচার চাই।

এর আগে গত শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) কট্টরপন্থি একটি ইসলামিক সংগঠনের নেতৃত্বে ওই কারখানায় হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা। লাহোর পুলিশের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা পিটিআই’কে জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কান ওই ব্যক্তির নাম প্রিয়ন্তা কুমার। তার বয়স আনুমানিক ৪০ বছর। তিনি পাকিস্তানের শিয়ালকোটের একটি গার্মেন্টস কারখানায় ম্যানেজার পদে চাকরি করতেন।

তিনি বলেন, প্রিয়ন্তা কুমার কট্টরপন্থি ইসলামিক সংগঠন তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তানের একটি পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছিলেন বলে অভিযোগ উঠে। তিনি পোস্টারটি ছিঁড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছ টিএলপি কর্মীরা। ওই পোস্টারে কোরআনের আয়াত লেখা ছিল।

বিজ্ঞাপন

ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রিয়ন্তা কুমারের কারখানার দেওয়ালে ওই পোস্টার লাগানো ছিল। প্রিয়ন্তা পোস্টারটি ছেঁড়ার সময় কারখানার এক কর্মী দেখে টিএলপি কর্মীদের খবর দেন। এতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর শত শত মানুষ কারখানার সামনে জড়ো হতে থাকে। জড়ো হওয়া জনতার মধ্যে বেশিরভাগই টিএলপি কর্মী ছিলেন। প্রিয়ন্তা কুমারের বিরুদ্ধে তারা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলেন।

পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, উন্মত্ত জনতা কারখানায় প্রবেশ করে প্রিয়ন্তা কুমারকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে আসে। তাকে নির্যাতন করা হয়। প্রচুর মারধরে জখম হলে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়।

তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রিয়ন্তার এক সহকর্মী বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান, কারখানাটির দেওয়াল পরিষ্কার করতে সব ধরনের পোস্টার ছেঁড়া হচ্ছিল। ধর্ম অবমাননার কোনো উদ্দেশ্য প্রিয়ন্তার ছিল না। প্রিয়ন্তার স্ত্রীও তার স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

এদিকে প্রিয়ন্তা কুমারের পোড়া দেহের অবশিষ্টাংশ সোমবার লাহোরের আল্লামা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শ্রীলংকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানেই তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন

সারাবাংলা/আইই

টপ নিউজ পাকিস্তান শিয়ালকোট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর