শ্রীলঙ্কান নাগরিককে হত্যা, পাকিস্তানে গ্রেফতার ১২০
৫ ডিসেম্বর ২০২১ ১৩:০৬ | আপডেট: ৫ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:০৩
পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে এক শ্রীলঙ্কান নাগরিককে পিঠিয়ে ও গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ১২০ জনকে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ঘটনার সন্দেহভাজন মূল প্ররোচণাকারী রয়েছেন। ওই শ্রীলঙ্কান ব্যক্তি পাকিস্তানের এক গার্মেন্টস কারখানার ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করতেন। খবর আলজাজিরা।
শনিবার (৪ ডিসেম্বর) পুলিশের মুখপাত্র খুররম শাহজাদ বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ১২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তিও রয়েছেন। বাকিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে দেশটির শীর্ষ আলেম ও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিষয়ক বিশেষ দূত তাহির আশরাফি বলেন, এ মামলাটি বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত করছেন। কিছু কারখানার শ্রমিক ম্যানেজারকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য একটি ধর্মীয় কার্ড খেলেছিল কি না- এ বিষয়টিও রয়েছে। কিছু কর্মী বলেছিলেন- ম্যানেজার ‘খুব কঠোর’ ছিলেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে শ্রীলংকান নাগরিককে পুড়িয়ে হত্যা
এর আগে গত শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) কট্টরপন্থি একটি ইসলামিক সংগটনের নেতৃত্বে ওই কারখানায় হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা। লাহোর পুলিশের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা পিটিআই’কে জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কান ওই ব্যক্তির নাম প্রিয়ন্তা কুমার। তার বয়স আনুমানিক ৪০ বছর। তিনি পাকিস্তানের শিয়ালকোটের একটি গার্মেন্টস কারখানায় ম্যানেজার পদে চাকরি করতেন।
তিনি বলেন, প্রিয়ন্তা কুমার কট্টরপন্থি ইসলামিক সংগঠন তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তানের একটি পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছিলেন বলে অভিযোগ উঠে। তিনি পোস্টারটি ছিঁড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছ টিএলপি কর্মীরা। ওই পোস্টারে কোরআনের আয়াত লেখা ছিল।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রিয়ন্তা কুমারের কারখানার দেওয়ালে ওই পোস্টার লাগানো ছিল। প্রিয়ন্তা পোস্টারটি ছেঁড়ার সময় কারখানার এক কর্মী দেখে টিএলপি কর্মীদের খবর দেন। এতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর শত শত মানুষ কারখানার সামনে জড়ো হতে থাকে। জড়ো হওয়া জনতার মধ্যে বেশিরভাগই টিএলপি কর্মী ছিলেন। প্রিয়ন্তা কুমারের বিরুদ্ধে তারা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলেন।
পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, উন্মত্ত জনতা কারখানায় প্রবেশ করে প্রিয়ন্তা কুমারকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে আসে। তাকে নির্যাতন করা হয়। প্রচুর মারধরে জখম হলে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়।
সারাবাংলা/এনএস