Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গৃহকর্মীকে হত্যার পর দিয়াবাড়ী ফেলে আসে নিকেতনের দম্পতি

শেকৃবি করেসপন্ডেন্ট
৫ ডিসেম্বর ২০২১ ১২:৩৭ | আপডেট: ৫ ডিসেম্বর ২০২১ ১৭:৪৫

মারধরে গৃহকর্মী মারা গেলে তার মরদেহ প্রাইভেট কারে করে দিয়াবাড়ীর ঝাউবনে ফেলে এসেছিল রাজধানীর নিকেতন এলাকার এক দম্পতি। অজ্ঞাতনামা তরুণীর মরদেহ হিসেবে উদ্ধার হওয়ার তিন দিনের মাথায় সেই তরুণীকে শনাক্ত করার পাশাপাশি ঘাতক দম্পতিকেও চিহ্নিত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সেই দম্পতিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

রোববার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে আগারগাঁওয়ের পিবিআই কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন বিশেষ পুলিশ সুপার (ঢাকা মেট্রো) মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দম্পতি ওই গৃহকর্মীকে হত্যা করে তার মরদেহ ফেলে আসার তথ্য স্বীকার করে নিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ২ ডিসেম্বর দিয়াবাড়ীর ঝাউবন এলাকা থেকে আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী অজ্ঞাতনামা এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে তুরাগ থানা পুলিশ। বিশেষ পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমের তত্ত্বাবধানে পিবিআইয়ের একটি টিম তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই তরুণীকে শনাক্ত করেন। তারা জানতে পারেন, হত্যার শিকার তরুণীর নাম পারভীন ওরফে ফেন্সি। তার বাড়ি দিনাজপুর। স্বামীর নাম মোমিনুল ইসলাম।

স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে পিবিআই জানতে পারে, এক-দেড় বছর আগে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় আসেন মোমিনুল। তিনি নিজে রিকশা চালাতেন। স্ত্রী পারভীন ওই সময় গুলশান নিকেতন এলাকায় জসীমুল হাসান ও সৈয়দা সামিনা হাসান দম্পতির বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেন। ওই বাসাতেই থাকতেন তিনি। তাদের একমাত্র সন্তান গ্রামে দাদীর কাছে থাকে।

বিশেষ পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত ১ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে গৃহকর্মী পারভীনকে মারধর করেন গৃহকর্ত্রী সামিনা হাসান। একপর্যায়ে লাঠি দিয়ে উপুর্যপরি আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এসময় স্বামী-স্ত্রী পরামর্শ করে চালক রমজান আলীর (৪১) সহায়তায় প্রাইভেট কারে করে দিয়াবাড়ী ঝাউবন এলাকায় পারভীনের মরদেহ ফেলেন আসেন তারা।

বিজ্ঞাপন

নিহত পারভীনের স্বামী মোমিনুল হকের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা জানান, নিকেতনের ওই বাসায় কাজ নেওয়ার পর থেকেই স্ত্রীর সঙ্গে মোমিনুলকে দেখা করতে দেওয়া হতো না। এর মধ্যে একদিন পারভীন ফোনে তার স্বামীকে জানান, তাকে মারধর করা হয়। এ বিষয়ে গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) দায়ের করেছিলেন মোমিনুল। এরপর একদিন মাত্র তিনি পারভীনের সঙ্গে ওই বাসায় গিয়ে দেখা করতে পেরেছিলেন। এর মধ্যে গত অক্টোবর মাসে তিনি বাড়ি চলে যান। ১ ডিসেম্বর পারভীনের মরদেহ উদ্ধার ও পিবিআই তাকে শনাক্ত করার পর মোমিনুল ঢাকা আসেন।

এ ঘটনায় গত ৪ ডিসেম্বর তুরাগ থানায় বাদী হয়ে নিকেতনের ওই বাসার গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী জসীমুল হাসান ও সৈয়দা সামিনা হাসানসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন মোমিনুল ইসলাম। মামলাটি তদন্তের ভার পায় পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)। পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ তরিকুল ইসলামকে তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়। তদন্তের মাধ্যমে জসীমুল হাসান ও সৈয়দা সামিনা হাসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মামলার আলামত হিসেবে মরদেহ ফেলে আসার কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেট কার এবং ঘটনাস্থল থেকে একটি লাঠি ও বিছানার চাদর জব্দ করা হয়েছে।

সারাবাংলা/টিআর

গৃহকর্মীকে হত্যা টপ নিউজ পিবিআই মরদেহ উদ্ধার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর