Wednesday 12 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শবে বরাতের রাতে ৬ ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা: ১৩ জনের ফাঁসি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২ ডিসেম্বর ২০২১ ১১:৪৩ | আপডেট: ২ ডিসেম্বর ২০২১ ১৪:০৩

ফাইল ছবি

ঢাকা: সাভারের আমিন বাজারে শবে বরাতের রাতে ছয় কলেজ ছাত্রকে ডাকাত সাজিয়ে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগে দায়ের করা মামলা ১৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই মামলায় খালাস দেওয়া হয়েছে ২৫ আসামিকে। মামলা চলাকালীন মারা যাওয়ায় তিন আসামিকে আগেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত জাহান এই রায় ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

মৃত্যুদণ্ড আসামিরা হলেন— আব্দুল মালেক, সাঈদ মেম্বার, আব্দুল রশিদ, ইসমাইল হোসেন রেপু, ইহর জমসের আলী, মির হোসেন, মজিবুর রহমান ওরফে বরিশাল, আনোয়ার হোসেন, রজ্বব আলী, আলম, মোহাম্মদ রানা, আব্দুল হানিফ ও আসলাম মিয়া।

এদিকে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— শহিন আলম, মো. ফরিদ খান, রাজিব, ওয়াসিম, ছাত্তার, নাজিম মিয়া, মনির হোসেন, আলমগীর, খাটা ইসলাম, অখিল খোন্দকার, বশির, রুবেল, নূর ইসলাম, শাহদাত হোসেন অরফে জুয়েল, টুটুল, মাসুদ, মোখলেস, ততন ও সাইফুল।

মামলার মোট আসামি ৬০ জনের মধ্যে ইতোমধ্যে তিনজন মারা গেছেন। অবশিষ্ট ৫৭ জনের মধ্যে ৪৪ জন ছিলেন হাজতে, ১ জন জামিনে, আত্মসমর্পণ করেন ২ জন এবং পলাতক রয়েছেন ১০ জন।

এর আগে, গত ২২ নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ তারিখ ঠিক করেন আদালত। একইসঙ্গে ৪১ আসামির জামিন বাতিলের আদেশ দেন।

জানা যায়, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবে বরাতের রাতে সাভারের আমিন বাজারের বড়দেশি গ্রামের কেবলারচরে ঘুরতে যায় সাত বন্ধু। ওই সময় ডাকাত সাজিয়ে তাদের ছয়জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় তাদের মধ্যে থাকা একজন অল্পের জন্য বেঁচে যায়। ওই ঘটনায় গ্রামবাসীকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

নিহত ছয় ছাত্র হলেন— ধানমন্ডির ম্যাপললিফ স্কুলের ছাত্র শামস রহিম শাম্মাম, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইব্রাহিম খলিল, বাঙলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান পলাশ, তেজগাঁও কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ছাত্র টিপু সুলতান, মিরপুরে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সিতাব জাবীর মুনিব ও বাঙলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র কামরুজ্জামান। তাদের সঙ্গে থাকা বন্ধু আল-আমিন গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান।

ওই ঘটনার পর ডাকাতির অভিযোগে আল-আমিনসহ নিহতদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একটি ডাকাতির মামলা করেন স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী আবদুল মালেক। এ ছাড়া পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা গ্রামবাসীকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় আরেকটি মামলা করে।

২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি র‌্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন আহমেদ ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। একই বছরে ৬০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এ ছাড়া ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র ভিকটিম আল-আমিনকে একই ঘটনায় করা ডাকাতি মামলা থেকে সেদিন অব্যাহতিও দেওয়া হয়।

মামলার চার্জশিটে বলা হয়, আসামিরা নিরীহ ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে জখম করে। পরবর্তীকালে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে মসজিদের মাইকে সবাইকে ডাকাত আসার ঘোষণা দেয় এবং থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে। বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তাদের হত্যা করা হয়।

হত্যা মামলার মোট আসামি ৬০ জন। তাদের মধ্যে নয় জন পলাতক, একজন মারা গেছেন আর বাকি ৫০ জন জামিনে আছে। এদের মধ্যে ওয়াসিম নামে এক আসামি জামিনে থাকলেও অন্য মামলায় কারাগারে আছেন। এ মামলায় ১৪ আসামি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

ছবি: আদালতে ৬ জনকে হত্যা মামলার আসামিরা [সুমিত আহমেদ]

সারাবাংলা/এআই/এনএস

১৩ আসামির মৃত্যুদণ্ড আমিন বাজারে ৬ ছাত্র হত্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর