Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডিসি সুলতানা পারভীনের ক্ষমার আদেশ বাতিলের আহ্বান বিএফইউজে’র

সারাবাংলা ডেস্ক
২৯ নভেম্বর ২০২১ ২০:৫৮ | আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২১ ২৩:৫৬

সাংবাদিক নির্যাতনের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীনের দণ্ড বাতিলের আদেশের খবরে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ও বিস্ময় প্রকাশ করেছে বিএফইউজে, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন। একইসঙ্গে রাষ্ট্রপতির কাছে এই ক্ষমার আদেশ বাতিলেরও আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

সোমবার (২৯ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত বিএফইউজে, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের এক সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সংগঠনের দফতর সম্পাদক সেবীকা রানীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাংবাদিক নির্যাতনের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীনের দণ্ড বাতিলের আদেশে সাংবাদিক সমাজ বিস্মিত। সাংবাদিক নির্যাতনকারীকে ক্ষমা করায় গণমাধ্যমে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাই বিএফইউজে, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা এই আদেশ বাতিলের আহ্বান জানাচ্ছে।

সভায় বিএফইউজে নেতারা বলেন, এ ঘটনায় সাংবাদিক নির্যাতনকে উৎসাহিত করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাছে কাম্য নয়। এটি গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও মানবাধিকার পরিপন্থি।

বিএফইউজে’র সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব দীপ আজাদ, সহ-সভাপতি মধুসূদন মণ্ডল, কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, দফতর সম্পাদক সেবীকা রানী, নির্বাহী পরিষদ সদস্য শেখ নাজমুল হক সৈকত, আঙ্গুর নাহার মন্টিসহ ঢাকাস্থ নেতারা।

আরও পড়ুন- কুড়িগ্রামের সেই ডিসির শাস্তি বাতিল করলেন রাষ্ট্রপতি

এর আগে, বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে গত বছরের ১৩ মার্চ গভীর রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মাদক রাখার অভিযোগে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আরিফুলের পরিবারের অভিযোগ, কুড়িগ্রামের ওই সময়কার ডিসি সুলতানা পারভীনের নির্দেশেই আরিফুল ইসলামকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

ওই ঘটনা তুমুল সমালোচনার জন্ম দেয়, বিষয়টি উচ্চ আদালতেও গড়ায়। পরে কুড়িগ্রামের আদালত রিগানকে জামিন দেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর ডিসি সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এস এম রাহাতুল ইসলামকে কুড়িগ্রাম থেকে সরিয়ে দেয় সরকার। পরে ২০২০ সালের ১৯ মার্চ ডিসি সুলতানা পারভীন, সাবেক তিন সহকারী কমিশনারসহ ৩৫-৪০ জনের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সাংবাদিক আরিফুল। হাইকোর্ট ওই অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ডের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাকে দেওয়া সাজা স্থগিত করেন।

এরপর ২৬ মার্চ সুলতানা পারভীনসহ তার কার্যালয়ের সাবেক তিন জন সহকারী কমিশনারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালায় ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ‘কারণ দর্শাও’ নোটিশ দিলে সুলতানা পারভীন লিখিত জবাব দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানি চান। ওই বছরের ৯ অগাস্ট শুনানিতে হাজির হয়ে তিনি যে মৌখিক বক্তব্য ও লিখিত জবাব দেন, তা ‘সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায়’ বিভাগীয় মামলাটি তদন্তের জন্য তদন্ত বোর্ড গঠন করা হয়।

তদন্ত বোর্ডের প্রতিবেদন এবং অন্যান্য কাগজপত্র পর্যালোচনা করে সুলতানা পারভীনকে গুরুদণ্ড দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। এরপর চলতি বছরের ৮ জুন তাকে দ্বিতীয় কারণ দর্শাও নোটিশ দেয় মন্ত্রণালয়। সুলতানা পারভীন ২২ জুন তার লিখিত জবাব দেন। বিচার-বিশ্লেষণ শেষে ১০ আগস্ট তার বেতন বৃদ্ধি দুই বছরের জন্য স্থগিত রাখার ‘লঘুদণ্ড’ দেওয়া হয়।

পরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়েরই ২৩ নভেম্বরের আরেক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ডিসি সুলতানা তার ওপর অরোপিত লঘু দণ্ডাদেশ মওকুফের জন্য গত ৬ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি বরাবর আবেদন করলে রাষ্ট্রপতি সদয় হয়ে তার আপিল আবেদন বিবেচনা করে তার দণ্ডাদেশ বাতিল করে তাকে অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। এ কারণে বিভাগীয় মামলায় দুই বছররের জন্য বেতন বৃদ্ধি স্থগিত সংক্রান্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গত ১০ অগাস্টের প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করে তাকে অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি প্রদা দেওয়া হলো।

সারাবাংলা/টিআর

টপ নিউজ ডিসি সুলতানা পারভীন বিএফইউজে

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর