এবার কামরুন্নাহারের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নিলেন আপিল বিভাগ
২২ নভেম্বর ২০২১ ১৬:০৯ | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২১ ১৭:৩৬
ঢাকা: রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায়ে বিতর্কিত পর্যবেক্ষণ দিয়ে আলোচনায় আসা বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারের ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
রেইনট্রি ধর্ষণ মামলার রায়ের পরই জানা যায়, স্থগিতাদেশ থাকার পরও অন্য এক ধর্ষণ মামলার এক আসামিকে জামিন দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আপিল বিভাগ তাকে গতবছর তলব করেছিলেন। পরে গত ১৫ নভেম্বর কামরুন্নাহারের বিষয়টি আবারও আপিল বিভাগে ওঠে। এরপর আজ সোমবার সকালে তিনি আদালতে হাজির হন। পরে বিকেলে তার বিষয়ে আদেশের কথা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র।
আরও পড়ুন-
- ‘বিচারক কামরুন্নাহারের পর্যবেক্ষণ বেআইনি’
- আপিল বিভাগের শুনানিতে বিচারক কামরুন্নাহার
- বিচারিক ক্ষমতা হারালেন রেইনট্রি ধর্ষণ মামলার বিচারক
- আলোচিত বিচারক কামরুন্নাহারকে প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন
- আদালতে এসে কামরুন্নাহার জানলেন, তার বিচারিক ক্ষমতা নেই
- ‘রেইনট্রি ধর্ষণ মামলার রায় চরমভাবে জেন্ডার বৈষম্য তৈরি করেছে’
- ৮০ বিশিষ্টজনের বিবৃতি, ধর্ষণ মামলায় রায়ের পর্যবেক্ষণ অসম্মানজনক
সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে বর্তমানে সংযুক্ত এবং ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর সাবেক বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহার আজ (সোমবার, ২২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সশরীরে উপস্থিত হন। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আজ আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ১ নম্বর ক্রমিকের মামলায় শুনানি শেষে তার (কামরুন্নাহার) ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা সিজ (seize) করা হয়েছে বলে আদেশ দেন। পূর্ণাঙ্গ রায় পরবর্তী সময়ে প্রকাশ হবে।
‘রাষ্ট্র বনাম আসলাম সিকদার’ মামলায় আপিল বিভাগে ব্যাখ্যা দিতে গত বছরের ১২ মার্চ আপিল বিভাগ মোছা. কামরুন্নাহারকে ওই বছরের ২ এপ্রিল তলব করেছিলেন আপিল বিভাগ। মামলাটি আজ সোমবার আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ১ নম্বর ক্রমিকে ছিল।
এদিন কামরুন্নাহার আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রবেশ করেন। এ সময় আইনজীবীসহ সব কর্মকর্তাদের এজলাস কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন আদালত। এরপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে ভার্চুয়ালি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১১টায় শুনানি শেষ হয়। এরপর কামরুন্নাহারের ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
এর আগে রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলে ধর্ষণ মামলা না নেওয়ার ‘পরামর্শ’ দেওয়ায় বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারের ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করা হয়। ১২ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারকদের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তার বিচার ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে তাকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করার জন্য বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট থেকে আজ (রোববার, ১৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এএম