‘সংখ্যালঘু, নারী, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী- সবাই নির্যাতনের শিকার’
২৫ অক্টোবর ২০২১ ১৭:০১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মানবাধিকার সংগঠক রোকেয়া কবীর বলেছেন, বাংলাদেশে সকল নাগরিক সমান অধিকার ও মর্যাদা পায় না। ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা এখানে নির্যাতনের শিকার হয়, এমনকি জনসংখ্যার অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীরাও বিভিন্ন অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার। এছাড়া বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীও ধর্মীয় এবং সামাজিকভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। সংবিধানে স্বীকৃত সবার সমান অধিকার নিশ্চিতে রাষ্ট্রের পাশাপাশি নাগরিকদেরও এগিয় আসতে হবে।
সোমবার (২৫ অক্টোবর) কক্সবাজারের একটি হোটেলে এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) ‘আমাদের জীবন, আমাদের স্বাস্থ্য, আমাদের ভবিষ্যৎ’প্রকল্পের তিন দিনব্যাপী বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা কর্মশালার আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রোকেয়া কবীর বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও ধর্ম অবমাননার অজুহাতে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ অব্যাহত রয়েছে। অথচ আমাদের সংবিধানে সকল নাগরিকের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। সংবিধানে বলা হয়েছে, প্রত্যেক নাগরিক তার নিজস্ব ধর্ম বা বিশ্বাস পালনে সমান সুযোগ পাবে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, পূজামণ্ডপে হামলা করে মূর্তি ভাংচুর, হত্যা এবং নারী ও শিশুর প্রতি নির্যাতনের মধ্য দিয়ে সংবিধানে বর্ণিত নাগরিক অধিকার প্রতিনিয়ত লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
সারাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পূজামণ্ডপে-বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমি হতভম্ভ, লজ্জিত। সকল নাগরিকের সমান সুযোগ তৈরিতে রাষ্ট্রের পাশাপাশি নাগরিকদেরও কার্যকর ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিএনপিএস জানিয়েছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে সিমাভি নেদারল্যান্ডস এবং বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় ১০টি সংগঠন কিশোরী ও যুব নারীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার, সহিংসতামুক্ত জীবনযাপন এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে বেঁচে থাকার জন্য সচেতনতা সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
উদ্বোধনী পর্বে আরও বক্তব্য দেন- সিমাভি বাংলাদেশের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক মাহবুবা কুমকুম, নারী প্রগতি সংঘের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সঞ্জয় মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন হিল ফ্লাওয়ারের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিলু কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, টংগ্যার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ডা. পরশ খীসা, অনন্যা কল্যান সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ডনাইপ্রু নেলী, গ্রাউসের নির্বাহী পরিচালক চাইসিং মং, তহজিংডংয়ের নির্বাহী পরিচালক চিংসিংপ্রু, প্রোগ্রেসিভের নির্বাহী পরিচালক সুচরিতা চাকমা, উইভের নির্বাহী পরিচালক নাইউপ্রু মারমা মেরী, কেএমকেএসের নির্বাহী কমিটির সদস্য শাপলা ত্রিপুরা।
উল্লেখ্য, কর্মশালায় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংগঠনগুলোর ৬৩ জন কর্মী অংশ নিচ্ছেন।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম