‘উৎপাদন ঘাটতির কারণেই কৃষিপণ্যের দাম বাড়ে’
২৪ অক্টোবর ২০২১ ১৮:২৯ | আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২১ ১৮:৫০
ঢাকা: উৎপাদন ঘাটতির কারণেই বাজারে কৃষিপণ্যের দাম বাড়ে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। তিনি বলেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই কৃষিপণ্যের দাম বাড়ে এমনটি ঠিক নয়। কৃষিপণ্যের বাজার অনেক বড়। এখানে অনেক হাত রয়েছে। কেউ এককভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আর কৃষিপণ্যের মৌসুমি দাম বৃদ্ধির বিষয়টিকে ভুলভাবে বোঝা উচিত নয়।
রোববার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘বাংলাদেশের ৫০ বছর: কৃষির রুপান্তর ও অর্জন’ শীর্ষক কৃষি সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। দৈনিক বণিক বার্তা ও বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ) যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
কৃষি সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের কৃষিখাত প্রযুক্তিতে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। তুলনামূলকভাবে হেক্টর প্রতি ধানের উৎপাদনও অনেক কম। অন্যান্য ফসলেরও প্রযুক্তিগত দিক থেকে তেমন উন্নতি ঘটেনি।’
শামসুল আলম বলেন, ‘কৃষি ক্ষেত্রে অর্জনের বিষয়ে আমরা সন্তুষ্ট হলেও অনেক পিছিয়ে আছি। চালের উৎপাদনে ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডের চেয়ে পিছিয়ে আছি। পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে চালের উৎপাদনে এগিয়ে থাকলেও দক্ষিণ এশিয়ার অন্য সব অঞ্চলের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছি। ভারতের পেঁয়াজ উৎপাদনও আমাদের চেয়ে বেশি। প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি। গরুর মাংস ও দুধের ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি।’
তিনি বলেন, ‘সরকার কৃষি ক্ষেত্রে যথেষ্ট সহায়তা দিচ্ছে। দেশীয় কৃষিকে সর্বোচ্চ সমর্থন দেওয়া হচ্ছে। কৃষিতে অর্জনের পাশাপাশি কোথায় দাঁড়িয়ে আছি তা ভাবতে হবে। কৃষিতে ক্রমাগত অর্জন ছাড়া সামগ্রিক উন্নতি অর্জিত হবে না। কৃষিতে প্রণোদনা এবং আরও সম্পদের সঞ্চার ঘটাতে হবে। ভর্তুকি দিয়ে কৃষিকে টিকিয়ে রেখেছি। কৃষিতে ব্যাপক কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন। নতুবা কৃষির পরিবর্তন আসবে না।’
আরও পড়ুন: পেঁয়াজের জ্বালায় অস্থির হয়ে গেছি: বাণিজ্যমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পেঁয়াজর দাম বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা সব করেছে, এটি ঠিক নয়। ঘাটতি থাকার কারণেই বাজারে পণ্যের দাম বাড়ে। কোনো গ্রুপের চাপে কোনো সিদ্ধান্ত যেন আমরা না নিই। কৃষি ক্ষেত্রে হঠাৎ করে কোনো পণ্যের রফতানি বন্ধ বা আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। কোনো পণ্যের মৌসুমি দাম বৃদ্ধির বিষয়টিকে যেন ভুল না বুঝি। আর পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়াও কোনো ভালো কাজ নয়। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বাজারে হস্তক্ষেপ করাই উচিত নয়। বাজারে কোনো পণ্য ভেজাল দিচ্ছে কি না তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কৃষিপণ্য রফতানিতে ব্যাপক ভর্তুকি দিতে হবে।’
সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বণিকবার্তার সম্পাদক দেওয়া হানিফ মাহমুদের সঞ্চলনায় এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। বক্তব্য দেন বিএলআরআই’র সাবেক মহাপরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম, মৎস্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ড. সৈয়দ আরিফ আজাদ, লাল তীর লাইভস্টকের চেয়ারম্যান আবদুল আওয়াল মিন্টু, ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, ইউএসএআইডি বাংলাদেশের মিশন ডিরেক্টর ক্যাথরিন স্টিভেন্স ও আফতাব বহুমুখী ফার্মস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান। এর আগে সকালে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম