হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নয়, মহাকাশযানের পরীক্ষা চালানো হয়: চীন
১৮ অক্টোবর ২০২১ ১৮:১৬ | আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২১ ১৯:৪৩
সম্প্রতি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর দাবি অস্বীকার করেছে চীন। গবেষণার খরচ কমানোর জন্য পুনরায় ব্যবহারযোগ্য মহাকাশযানের একটি প্রযুক্তির পরীক্ষা চালানো হয়েছিল বলে জানিয়েছে দেশটি। খবর এনডিটিভি।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ ধরনের খবরকে ভুল আখ্যা দিয়ে বলা হয়, পুনরায় ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তির পরীক্ষা চালানো হয়েছে, যাতে করে মহাকাশযান উৎক্ষেপণের খরচ কমানো যায়।
এ বিষয়ে ঝাও লিজিয়ান বলেন, আমার জানা মতে এটি নিয়মিত মহাকাশযান পরীক্ষারই অংশ। এক্ষেত্রে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তির পরীক্ষা চালানো হয়েছে। সুবিধাজনক ও কম খরচে মানুষ যেন শান্তিপূর্ণ কাজে মহাকাশ ব্যবহার করতে পারে- সেই উদ্দেশ্যেই এ গবেষণা করা হচ্ছে।
এ সময় হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়ে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস’র করা প্রতিবেদন তাহলে ভুল কি না- সংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ঝাও লিজিয়ান বলেন, ‘হ্যাঁ।’
আরও পড়ুন: হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের গোপন পরীক্ষা চালিয়েছে চীন
এর আগে গত শনিবার (১৬ অক্টোবর) ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, গত আগস্টে বেইজিং একটি ক্ষেপণাস্ত্র পারমাণবিক ক্ষমতা সম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে যা তার লক্ষ্যবস্তুর দিকে নামার আগে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করে। তবে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি লক্ষ্যমাত্রার ৩২ কিলোমিটার আগেই ভূপাতিত হয় বলে জানিয়েছেন তিন সূত্র।
সূত্র আরও জানায়, হাইপারসনিকটি একটি লং মার্চ রকেটে বহন করা হয়েছিল। মূলত কোনো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করার আগে ঘোষণা দিয়ে জানানো হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তা গোপন রাখা হয়েছিল। হাইপারসনিক অস্ত্রের ক্ষেত্রে চীনের এই অগ্রগতি ‘মার্কিন গোয়েন্দাদের অবাক করে দিয়েছিল’ বলে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
চীনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াসহ আরও অন্তত পাঁচটি দেশ হাইপারসনিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ঐতিহ্যবাহী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতোই, যা পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ করতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি গতি সম্পন্ন।
কিন্তু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো একটি চাপের মধ্যে মহাকাশ দিয়ে উড়ে গিয়ে তাদের লক্ষ্যে আঘাত হানে। আর হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র বায়ুমণ্ডলে নিম্নস্তর দিয়ে উড়ে গিয়ে আরও দ্রুত গতিতে তার লক্ষ্য বস্তুওত আঘাত হানতে সক্ষম।
এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো- হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র সহজে হস্তান্তরযোগ্য (অনেক ধীর, প্রায়শই সাবসোনিক ক্রুজ মিসাইলের মতো)। এ কারণে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি শনাক্ত করা এবং প্রতিরোধ করা কঠিন কাজ।
যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলো ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ করার জন্য প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে। তবে তা হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত এবং প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রয়েছে কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
সারাবাংলা/এনএস