‘আমরা যত লোক হত্যা করেছি, তালেবানরা তার চেয়ে কম করেছে’
১১ অক্টোবর ২০২১ ২০:৪৮ | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২১ ২০:৪৯
ঢাকা: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, পশ্চিমা বিশ্বের ইসলাম ফোবিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারত। তারা (ভারত) মিথ্যাচারে তাল দেওয়ার ওস্তাদ। আফগানিস্তানে তালেবানরা কয় মাস হলো ক্ষমতায় এসেছে। অপপ্রচার হয়েছিল তারা ক্ষমতায় আসলে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করবে। কয় জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে? আমি তুলনা করে বলতে চাই, ১৯৭১ সালে আমরা যখন যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, সেই সময়ে আমাদের দেশের অবস্থা কী ছিল? আমরা স্বাধীন হওয়ার পর যত লোক হত্যা করেছি, তালেবানরা তার চেয়ে কম সংখ্যক লোক হত্যা করেছে।
সোমবার (১১ অক্টোবর) সাভারে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ইঙ্গ-মার্কিন প্রচারণা এবং আফগানিস্তান প্রশ্নে তালেবান’ শীর্ষক এ সেমিনার আয়োজন করে গণবিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগ।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘তালেবানরা বিজয় লাভের পরই আমি বলেছি তারা মুক্তিযোদ্ধা। ২০ বছর স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করে তারা যদি মুক্তিযোদ্ধা না হয় তাহলে এক বছর যুদ্ধ করে আমরা কীসের মুক্তিযোদ্ধা?’
তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে সম্পদ আছে। তাদের মূল সম্পদ আফিম। আফিমের সব ফ্যাইন্যান্স আমেরিকা ও ভারতের। আফিম আছে বলে তারা প্রচারণা চালায় আবার চুপেচুপে তারাই ফাইন্যান্স করে।’
‘আমি মনে করি আমাদের উচিত তালেবানদের মেনে নিয়ে তাদের সমর্থন দেওয়া। কারণ, আমাদের স্বার্থ আছে। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, বাংলাদেশের ভালো স্বার্থ আছে। ওঠা-বসা, আলাপ-আলোচনা না করলে হবে না। আমরা কেন পশ্চিমাদের কথায় পরিচালিত? আমরা আমাদের নিজের চিন্তাধারায় পরিচালিত হব’— বলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘তালেবান বিজয়ের ফলে একটু সমস্যাও আছে। সমস্যাটা হলো- ভারত বিভক্ত হবে। আজ কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামীরা বুঝবে যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করা যায়। অর্থাৎ কাশ্মীরের মুক্তির আন্দোলনটা বেড়ে যেতে পারে।’
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমি মনে করি তালেবানদের দ্রুত সমর্থন দেওয়া দরকার। যারা দ্রুত যাবে তাদের লাভ। তাদের সমস্ত কিছু আমরা মেনে নেব, তা না। তবে ওঠা-বসা করলে তারা বিষয়টা বুঝবে। তারা তাদের মেয়ে সন্তানদের বিদেশে রাষ্ট্রদূত বানাতে উৎসাহী হবে। তাই আমি সরকারকে বলব, এখনই তালেবানকে সমর্থন দিয়ে সেখানে আমাদের দূতাবাস খোলা উচিত।’
অধ্যাপক ডা. লায়লা পারভীন বানু’র সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাহমান চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি প্রফেসর দিলারা চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত এম সিরাজুল ইসলাম। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ড. তাসাদ্দেক আহমেদ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম