‘কনক সারোয়ারের বোন ভয়াবহ প্রতিহিংসার শিকার’
৭ অক্টোবর ২০২১ ১৪:৩১ | আপডেট: ৭ অক্টোবর ২০২১ ১৪:৩২
ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক বিতর্কিত সাংবাদিক ড. কনক সারোয়ারের বোন নুসরাত শাহরিন রাকা ‘ভয়াবহ প্রতিহিংসার’ শিকার বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় প্রধান অথিতির বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের দ্বিতীয় বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব) এ স্মরণ সভা আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কনক সারোয়ার এই সরকারের অত্যাচারে পালিয়ে জীবন রক্ষা করেছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নিয়েছে। সেখান থেকে সে কিছু সত্য কথা তার চ্যানেলের মাধ্যমে প্রচার করে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরকে কেন্দ্র করে সে যে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেছে, সেই কারণেই এই ভয়াবহ প্রতিহিংসা পরায়ণ সরকার কনক সারোয়ারের বোন- যিনি রাজনীতির সঙ্গে কোনোমতেই জড়িত নন, তিনি একজন গৃহবধূ, তাকে গ্রেফতার করেছে।’
‘সে (রাকা) তিন সন্তানের মা। তাকে গ্রেফতারই শুধু করেনি, নির্যাতন করে রিমান্ডে নিয়েছে- এটা ধারণার বাইরে। সরকার কতটা ফ্যাসিবাদী হলে, কতটা স্বৈরাচারী হলে, কতটা নির্যাতনকারী হলে মানুষের ওপর এই ধরনের নির্যাতন করা যায়? এটা নতুন নয়। যেহেতু একজন সাংবাদিকের বোনের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে, সেহেতু সবাই সোচ্চার হয়েছে। কিন্তু আমাদের কত নেতার বাড়িতে গিয়ে যে মা-বোনদের ওপর নির্যতন করা হয়েছে, এটা আমরা অনেকেই জানি না। গত কয়েক বছরে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীর বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের ওপর একই কায়দায় একইভাবে নির্যাতন করা হয়ছে’- বলেন মির্জা ফখরুল।
আবরার হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পূর্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের, দেশের তরুণ সমাজ, ছাত্র সমাজ- যারা সেদিন সোচ্চার হয়েছিল, আজ তাদের কোনো কর্মসূচি আমি অন্তত দেখতে পাইনি। আমি অনেকবার বলেছি- পরিবর্তন আসে সব সময় তরুণ এবং যুবকদের মাধ্যমে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, আমরা বাংলাদেশে সেই তরুণ যুবকদেরকে সামনে দেখতে পারছি না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আবরার হত্যা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আবরার হত্য এ দেশের সামগ্রিক যে সংকট, সেই সংকটের একটা প্রতিচ্ছবি। বহু আবরার হত্যা হয়েছে এবং আমরা সবাই জানি যে, আমাদের পাঁচ শতাধিক দেশপ্রেমিক নেতাকর্মীকে গুম করে ফেলা হয়েছে। সহস্রাধিক নেতাকে হত্যা করে ফেলা হয়েছে। এর কোনোটিই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি একটি সুদূর প্রসারী আধিপত্যবাদী চক্রান্ত। আজ সরকার আধিপত্যবাদের তাবেদারি করছে এবং পুতুল সরকারে পরিণত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এই সরকার শুধু আজ নয়, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত একইভাবে তাবেদার সরকারের ভূমিকা পালন করেছিল এবং বাংলাদেশকে তারা একটা তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। আজ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে, সুকৌশলে গণতন্ত্রের একটা মোড়ক লাগিয়ে আবার একই কায়দায় একটা তাবেদার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ দেশের মানুষ চিরকাল লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে। তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে এবং স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছে যুগ যুগ ধরে। সুতরাং আমি খুব বিশ্বাস করি এবং আমি খুব আশাবাদী যে, কখনই বাংলাদেশের মানুষকে এভাবে পরাজিত করা সম্ভব হবে না এবং এই সরকারকে অবশ্যই সরে যেতে হবে এবং জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’
অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব)-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদ, সদস্য সচিব ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাংবাদিক নেতা এম আব্দুল্লাহ, আবদাল আহমেদ, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম