Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জিয়ার শাসনামলে নির্বিচারে হত্যার ঘটনা তদন্ত হওয়া উচিত’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৪ অক্টোবর ২০২১ ২২:৩৮ | আপডেট: ৫ অক্টোবর ২০২১ ১১:৫৪

ঢাকা: জিয়াউর রহমানের শাসনামলে অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্যে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ‘নির্বিচারে হত্যার’ ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আশার কথা যে, আজ এত বছর পর সবার চেতনা এসছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, এতকাল সবাই কেন এটা ভুলে ছিল? শুধু সেনাবাহিনীর সদস্য নয়, আওয়ামী লীগেরও বহু নেতাকর্মীকে তারা হত্যা ও গুম করেছে। কিন্তু সেই জিয়াকেই ফেরেশতা বানিয়ে দেওয়া হলো। শেষকালে স্বাধীনতার ঘোষকও বানিয়ে ফেলা হলো।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনে যোগদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে দেশে ফেরার পর মতবিনিময় করতেই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

এ সময় গণভবনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একেএম আব্দুল মোমেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। প্রধানমন্ত্রী শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। গণভবনে প্রান্তে সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। এছাড়াও তেজগাঁও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রান্তে গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে প্রশ্ন গ্রহণ করেন এবং উত্তর দেন সরকার প্রধান।

একজন ভুক্তভোগীর কথার প্রসঙ্গ টেনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পর এই দেশে বাংলাদেশে বার বার ক্যু হয়েছে। এবং এই ক্যু’র নামে শুধু এয়ারফোর্সের অফিসার, সৈনিক-কর্মচারী নয়, সেনাবাহিনীর বহু সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। যদি বিভিন্ন জেলখানায় খোঁজ করেন তবে জানতে পারবেন যে, কোন জেলে কতজনকে এভাবে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। ওই সময় হাজার হাজার মানুষকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। যাদের ওই সময়ে হত্যা করা হয়েছে, তাদের গুম করে ফেলায় পরিবারের সদস্যরা লাশও পায়নি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা যে এভাবে হারিয়ে গেল তারও কোনো জবাবদিহি কেউ করেনি। আশার কথা যে, আজ এত বছর পর সবার চেতনা এসছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, এতকাল সবাই কেন এটা ভুলে ছিল? জিয়াউর রহমান তার ক্ষমতাকে ‘নিষ্কন্টক’ করার জন্য এই ঘটনাগুলি ঘটিয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন-

১৯৭৭ সালে তখন ক্যুর নামে, বিশেষ করে বিমানবাহিনীর ৫৬২ জন অফিসারসহ বহু লোককে সে সময় হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি ক্যু হয়। সেগুলোতে বিমান ও সামরিক বাহিনীর প্রায় দুই হাজারের কাছাকাছি অফিসারকে মারা হয়। সেইসব ঘটনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে যেহেতু দাবি উঠছে, সেহেতু আমাদের এটা নিয়ে একটা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। এর জন্য ভালো জনমতও সৃষ্টি হওয়া উচিত।’

প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে একদল সেনা সদস্য। এরপর ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসা জিয়া সেনাপ্রধান হওয়ার পর ১৯৭৬ সালে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে ক্ষমতা দখল করেন। তার পরের বছর তিনি রাষ্ট্রপতির পদও নেন। জিয়া ক্ষমতা দখলের পর সামরিক বাহিনীতে অনেকগুলো বিদ্রোহ-অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়, যাতে জড়িতদের সামরিক আদালতে বিচার করে মৃত্যুদণ্ডসহ নানা সাজা দেওয়া হয়।

বিএনপিও যে ক্ষমতায় আসার পর জিয়াউর রহমান হত্যার বিচার করেনি- সে কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিউটিনির বিচার করে ১১ জন সামরিক অফিসারকে যে ফাঁসি দিল, সেটাও কিন্তু ‍খুব অন্যায়ভাবে। কারণ, তাদের অনেকে জানতোই না। কিন্তু রাতারাতি একটা ক্যামেরা ট্রায়াল করেই তাদের ফাঁসি দিয়ে দিল। আমরা কিন্তু তখন তার প্রতিবাদ করেছিলাম। আমরা বলেছিলাম, এর তদন্ত হওয়া দরকার।’

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন

বিজ্ঞাপন

‘আরও কঠিন পথ পারি দিতে হবে’
৯ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:৫৬

আরো

সম্পর্কিত খবর