বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেললাইন নির্মাণে চুক্তি সই
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৮:০৯ | আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৯:৪৮
ঢাকা: বহুল প্রতীক্ষিত বগুড়া থেকে শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত নতুন ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং ভারতীয় কনসালটেন্সি সার্ভিস রাইটস ও আরভি অ্যাসোসিয়েটস আর্কিটেক্টস ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনসালটেন্টস প্রাইভেট লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে। এই চুক্তির আওয়তায় সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, বিস্তারিত নকশা তৈরি, টেন্ডার প্রক্রিয়া এবং নির্মাণ কার্যক্রম তদারকি করবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।
সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে প্রকল্প পরিচালক মো. আবু জাফর মিঞা এবং কনসালটেন্সি সার্ভিসের পক্ষে ভারতের রাইটসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্জয় আগারওয়াল এই চুক্তিতে সই করে। এ সময় রেলপথ মন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজনের উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, এ রেল লাইনটি তৈরি উত্তরাঞ্চলের দীর্ঘদিনের দাবি। নতুন এ রেল লাইনের মাধ্যমে সমগ্র উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার সহজ যোগাযোগ স্থাপিত হবে, সময় কমে যাবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার রেল ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থা যমুনা সেতু দ্বারা বিভক্ত। পশ্চিমাঞ্চলে মিটার গেজ লাইন এবং পূর্বাঞ্চলে ব্রডগেজ লাইন। বর্তমান সরকার সারাদেশকে একই রকম রেল লাইনে নিয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য পর্যায়ক্রমে ডাবল লাইন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ রেলওয়েতে ভারতের বিভিন্ন সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে রেলমন্ত্রী বলেন, ৩টি এলওসির মাধ্যমে ভারত সরকার বাংলাদেশ রেলওয়েতে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির ক্ষেত্রে ভারত অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী।
এ সময় ভারতীয় অর্থায়নে নির্মিত কয়েকটি প্রকল্পের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, খুলনা থেকে মংলা পর্যন্ত নতুন লাইন নির্মাণ, ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ লাইন নির্মাণ, টঙ্গী-জয়দেবপুর ডাবল লাইন নির্মাণ, সিরাজগঞ্জ-বগুড়া নতুন রেলপথ নির্মাণ, পার্বতীপুর-কাউনিয়া পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ, খুলনা-দর্শনা, কুলাউড়া-শাহবাজপুর নতুন রেলপথ নির্মাণ, সৈয়দপুর কারখানার আধুনিকায়ন প্রকল্প ভারতীয় অর্থায়নে হচ্ছে। এছাড়া ভারত আমাদের ক্যাটারিং সার্ভিসের উন্নয়নসহ ট্রেনিংয়ের ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের কয়েকটি রেল কানেক্টিভিটি গড়ে উঠেছে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে মৈত্রী, বন্ধন এবং মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হয়েছে। দেশটির সঙ্গে ব্যবসা এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে রেলপথের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতের উপহার দেওয়া ১০টি লোকোমোটিভের জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত নতুন এই রেল লাইন নির্মাণ করা হলে ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের দূরত্ব ১১২ কিলোমিটার কমে যাবে। এর মধ্যে ৮৬ কিলোমিটার মেইন লাইন এবং ১৬ কিলোমিটার লুপ লাইন নির্মিত হবে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫৭৮ কোটি টাকা। আগামী ১৩ মাসের মধ্যে নিয়োগ পাওয়া কনসালটেন্সি ফার্ম তাদের রিপোর্ট প্রদান করবেঅ এরপরে লাইন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করাসহ অন্যান্য কাজ শুরু হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কে দোরাইস্বামি, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদারসহ রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট কনসালটেন্সি সার্ভিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/জেআর/এনএস