সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৫ প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২৩:৫৯ | আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:০৪
বিশ্বের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য আরও বেশি পরিমাণে খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী একটি ‘স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থা’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একটি বৈশ্বিক জোট ও অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার পাশাপাশি দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে খাদ্যের অপচয় কমানোর প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন তিনি। পাশাপাশি বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে পাঁচ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ‘জাতিসংঘ ফুড সিস্টেমস সামিট ২০২১’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এই সুপারিশগুলো তুলে ধরেছেন। এর আগে জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) উচ্চ পর্যায়ের এক বক্তৃতাতেও প্রধানমন্ত্রী খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে কথা বলেন।
ফুড সিস্টেম সামিটে যুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পর্যাপ্ত খাবার পাওয়ার অধিকার একটি মৌলিক অধিকার, যা সব নাগরিকের কল্যাণ ও স্বাস্থ্যের সঙ্গে যুক্ত। এর ওপর বৈশ্বিক ব্যবস্থার সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব রয়েছে।
ধারণকৃত বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যা ১০ বিলিয়ন বা এক হাজার কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাড়তি এই জনসংখ্যার জন্য আরও খাদ্য উৎপাদন অপরিহার্য। এসময় তিনি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি উন্নয়নের জন্য গবেষণা, বিনিয়োগ ও উন্নত প্রযুক্তি বিনিময়ের ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দিয়ে বলেন, টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা অর্জনের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য তহবিল বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রযুক্তি শেয়ারিংসহ জলবায়ুজনিত ইভেন্টগুলোর সঙ্গে অভিযোজনের জন্য প্রতিশ্রুত তহবিলও ছাড় করতে হবে।
শীর্ষ সম্মেলনটি আয়োজনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মহামারি পরবর্তী পুনরুদ্ধার ও স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে এই অনুষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় প্রণীত কাংলাদেশের সংবিধানে খাদ্য ও পর্যাপ্ত পুষ্টিকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা এজেন্ডা ২০৩০ অর্জনে আমাদের জাতীয় নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনায় খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরকে একটি হাতিয়ার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে সমন্বিত করেছি। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, জাতীয় কৃষি নীতি-২০১৮, জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নীতি-২০২০ এবং এর কর্মপরিকল্পনা (২০২১-২০৩০) দেশের খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃতি দেয়।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের নীতিগত অবস্থানের কারণেই বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির হার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে ছাড়িয়ে গেছে। আমরা খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছি এবং আমরা দীর্ঘমেয়াদি খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কাজ করছি। খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি আমরা সবার জন্য মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতেও আমাদের প্রচেষ্টা জোরদার করেছি।
খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টির যোগসূত্রের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘন ঘন চরম আবহাওয়াজনিত দুর্যোগ এই গতিবেগকে প্রভাবিত করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বৈশ্বিক নেতা হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু-সহিষ্ণু কৃষি ও খাদ্য ব্যবস্থা নিয়েও কাজ করছে। বাসস।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর
খাদ্য নিরাপত্তা জাতিসংঘ ফুড সিস্টেমস সামিট ২০২১ টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা