৪ মন্ত্রীর বৈঠকে ই-কমার্স নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠনের পক্ষে মত
২২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২২:৪৫ | আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:২৪
ঢাকা: শৃঙ্খলাভঙ্গ বা প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত হলেও ই-কমার্স সাইট বন্ধ না করে রেগুলেটরি অথোরিটি বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠনের মাধ্যমে সাইটগুলোকে পরিচালনার পক্ষে মত দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, সারাবিশ্বে ই-কমার্স চালু রয়েছে। এই ব্যবসায় লাখ লাখ মানুষ যুক্ত হয়েছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাণিজ্য পরিচালিত হবে। তাই ই-কমার্স বন্ধ না করে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য একটি রেগুলারেটরি অথোরিটি গঠন করা হবে। তারা ডিজিটাল মাধ্যমে ই-কমার্স সাইটগুলোকে কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখবে।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘ডিজিটাল কমার্স ব্যবসায় সাম্প্রতিক সমস্যা’ সম্পর্কিত এ সভায় উপস্থিত ছিলেন আরও তিন মন্ত্রী— স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। সভায় তারা নিজেদের মত তুলে ধরেন। ই-কমার্স সাইট বন্ধ না করে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠনের পক্ষে মত দেন তারা।
সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি রেগুলেটরি অথোরিটি গঠন করা হবে। এখান থেকে ই-কমার্সের জন্য রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে, তাদের ডিজিটাল বাণিজ্য কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে। করোনাকালে ই-কমার্স সুনাম অর্জন করেছে, মানুষ উপকৃত হয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অসৎ ব্যবসা ও প্রতারণার কারণে সব ই-কমার্স বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ভবিষ্যতে কেউ যেন এ ধরনের প্রতারণার সুযোগ না পায় সে বিষয়ে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ই-কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা কার্যকর হওয়ার পর প্রতারণা বন্ধ হয়ে গেছে। এর আগে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান যে গ্রাহকদের প্রতারিত করেছে, এরই মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে আরও কী কী করা যায়, সরকার তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে।
সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ই-কমার্সে অনেক মানুষ প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ আছে। ই-কমার্স পরিচালনার জন্য একটি আইন তৈরি করা প্রয়োজন। দেশের কোনো মানুষ যেন ডিজিটাল বাণিজ্যে প্রতারিত না হন, সে জন্য পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। একজন্য একটি প্ল্যাটফর্মও গঠন করা দরকার।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ ডিজিটাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ই-কমার্স জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মানুষ যেন প্রতারিত না হন, সেজন্য আইন করা দরকার। গুটিকয়েক প্রতারণাকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-কমার্স বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এজন্য প্রচার মাধ্যম বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগাতে হবে।
এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠনে বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, রেগুলেটরি অথোরিটিকে অত্যাধুনিক করে গড়ে তুলতে হবে। তাদের মনিটরিং প্রক্রিয়া জোরদার করতে হবে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ই-কমার্স বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। বরং আইনের আওতায় এতে ই-কমার্সকে সুশৃঙ্খল করতে হবে, যেন কেউ প্রতারণা করতে না পারে। মানুষ কম দামে পণ্য পেতে চাইবে, এটাই বাস্তবতা। কিন্তু মানুষের কাছে এর বিশ্বাসযোগ্যতা থাকতে হবে। এর জন্য জামানত রাখার ব্যবস্থা করা যায়। ব্যবসা যত বড় হবে জামানত তত বেশি হবে।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন মো. মফিজুল ইসলাম, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রীনা পারভীন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) মো. হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. মেজবাউল হকসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কমকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ই-কমার্স টপ নিউজ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি রেগুলেটরি অথোরিটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল