ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে কাভার্ডভ্যান-ট্রাক শ্রমিক-মালিকরা
২২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৬:২৩
ঢাকা: ১৫ দফা দাবিতে সারাদেশে ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান-ট্রাক-প্রাইম মুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশন। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের দাবিগুলো শুনেছি। ১৫টি দাবি তারা যথাযথভাবে উত্থাপন করেছেন। যে দাবিগুলোর ক্ষেত্রে মনে করেছি যে এগুলো এখনই করা উচিত, সেগুলোর ক্ষেত্রে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। আর যেগুলো মনে করেছি সময় লাগবে, সেগুলো আমাদের সচিব মহোদয়রা নোট নিয়েছেন এবং তাদের মন্ত্রণালয় থেকে সেগুলোর ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেবেন। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা ছিল সেটা হচ্ছে আমাদের বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান একটি টাস্কফোর্স গঠন করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ড্রাইভিং লাইসেন্সের সমস্যার সমাধান করবেন। অন্যান্য দাবি যেগুলো ছিল, সবগুলো নিয়ে দীর্ঘ আলাপ হওয়ার পরে তারা বলেছেন যে তারা সন্তুষ্ট হয়েছেন।
মন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তালুকদার মো. মনির ধর্মঘট প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আমাদের যে কর্মসূচি ছিল তা প্রত্যাহার করে নিলাম। আজকের এই বৈঠকে আমরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট, আনন্দিত।
এরপর মালিক এসোসিয়েশনের সভাপতি মকবুল আহমদ বলেন, দীর্ঘ সময়ের বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট হয়ে আমাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলাম।
বৈঠকে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, পুলিশ প্রধান, সড়ক পরিবহন সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। দুই সংগঠনের পক্ষে ১৮ জন নেতা অংশ নেন।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে ৭২ ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মবিরতি শুরু হয়েছিল। তাদের ১৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—মোটরযান মালিকদের ওপর আরোপিত অগ্রিম আয়কর বা বর্ধিত আয়কর অবিলম্বে বাতিল করতে হবে; ইতোমধ্যে আদায় করা বর্ধিত কর স্ব স্ব মালিককে ফেরত দিতে হবে; পুলিশের ঘুষ বাণিজ্যসহ সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে; গাড়ির কাগজপত্র চেকিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করতে হবে; যেসব চালক ভারি মোটরযান চালাচ্ছে তাদের সহজ শর্তে এবং সরকারি ফি’র বিনিময়ে অবিলম্বে ভারি ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে হবে; সব শ্রেণির মোটরযানে নিয়োজিত সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মতো রেশনিং সুবিধার আওতায় আনতে হবে; চট্টগ্রামে অবস্থিত ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মনোনীত প্রতিনিধি এবং সব ড্রাইভার ও সহকারীকে চট্টগ্রাম বন্দরে হয়রানিমুক্ত প্রবেশের সুবিধার্থে বাৎসরিক নবায়নযোগ্য বায়োমেট্রিক স্মার্টকার্ড দিতে হবে; প্রতি ৫০ কিলোমিটার পরপর পণ্যপরিবহন শ্রমিকদের জন্য দেশের সড়ক-মহাসড়কের নিরাপদ দূরত্বে বিশ্রামাগার ও কার্ভাডভ্যান-ট্রাক-প্রাইমমুভার টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে; সারাদেশের জন্য একই পরিমাণ ওজন নির্ধারণ করে অতিরিক্ত (ওভারলোড) পণ্যপরিবহন বন্ধে লোডিং পয়েন্ট তথা পণ্যপরিবহনের উৎসস্থলে সরকার নির্ধারিত ওজন নিশ্চিত করে পণ্যবাহী গাড়িগুলোতে মালামাল লোড করতে হবে; লোড করা গাড়িগুলোকে উৎসস্থলে পণ্যের ওজনস্লিপ দিতে হবে।
সারাবাংলা/জেআর/এসএসএ