খোলা মাঠে কি ল্যাব তৈরি করা যায়?— প্রশ্ন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২২:৩১ | আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২৩:১২
ঢাকা: সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের শর্ত অনুযায়ী হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করার উদ্যোগে এখন পর্যন্ত গতি নেই। এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রশ্ন রাখলেন— খোলা মাঠে কি কখনো ল্যাব তৈরি করা যায়? নমুনা পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনের জন্য বিমানবন্দরের ভেতরে জায়গা দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শ্যামলীতে ২৫০ শয্যা টিবি হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেন্স ল্যাব ও ওয়ান স্টপ টিবি সার্ভিস সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে এদিন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমদ ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসকে নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিমানবন্দরে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জায়গা পরিদর্শন করেন।
পরে টিবি ল্যাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাহিদ মালেক বলেন, আজ আমরা বিমানবন্দরে গিয়েছি। সেখানে এখনো ল্যাব বসানো হয়নি, জায়গা দিতে পারেনি। প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে নিয়ে সেখানে গিয়ে আমাদের জায়গা দেখিয়ে দিয়ে আসতে হলো।
মন্ত্রী বলেন, জায়গা না দিলে ল্যাব হবে কীভাবে? খোলা মাঠে দেখিয়ে দিচ্ছে। খোলা মাঠে কি কখনো ল্যাব তৈরি করা যায়? আমি বলেছি, খোলা মাঠে ল্যাব করা যাবে না। বিমানবন্দরের ভেতরে আমাদের জায়গা দিতে হবে। সেখানে ল্যাব বসানো হবে।
আগস্টের শেষ ভাগে বাংলাদেশসহ ১০টি দেশ থেকে আগতদের জন্য ফ্লাইটের ছয় ঘণ্টা আগে বিমানবন্দর থেকেই র্যাপিড পিসিআর পদ্ধতিতে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নমুনা পরীক্ষার শর্ত আরোপ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাব স্থাপনে সাতটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে আমিরাতের চাহিদা র্যাপিড পিসিআর পদ্ধতি হলেও দেশে আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে। আর এই ল্যাব স্থাপনের জন্য বিমানবন্দরের পার্কিং জোনের ছাদ নির্ধারণ করে দিয়েছিল সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সাতটি কোম্পানিকে কারিগরি প্রটোকলে বাছাই করে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছিল। প্রবাসীকল্যাণ তাদের ল্যাব স্থাপনে নিয়োজিত করেছে। কিন্তু তারা কাজ করতে পারছিল না। ল্যাবের জায়গাও তাদের দেখিয়ে দেওয়া হয়নি। আজ সবাই মিলে আমরা সেটির সমাধান করে এলাম। আশা করি নির্ধারিত জায়গায় তারা কাজ শুরু করবে। আরও যদি বড় জায়গা লাগে, তার ব্যবস্থাও তারা করবে।
জাতীয় ইস্যুতে একজনের দায়িত্ব অন্য কারও ওপর চাপানোর প্রবণতা থেকে বেরিয়ে এসে কাজকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এখানে ভুল বোঝাবুঝির কোনো অবকাশ নেই। আমাদের সবাইকে মিলেই দেশের জন্য কাজ করতে হবে। আমরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। একজনের দায়িত্ব আরেকজনকে দিয়ে দেওয়া হবে, এমন কোনো বিষয় না। কোন জায়গায় ল্যাব বসবে, সেটি তো মন্ত্রীর দেখার কথা না। তারপরও আমরা গিয়ে দেখেছি এবং জায়গা নিয়েছি। আশা করি কয়েকদিনের মধ্যে বিদেশে যাওয়ার এই ব্যবস্থা ঠিক হবে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ ছিল প্রতিষ্ঠান ঠিক করে দেওয়া। কারা কাজ করতে পারবে সেটা আমরা করে দিয়েছি। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় তাদের নিয়োজিত করবে এবং সিভিল এভিয়েশন জায়গা দেবে— এটিই হওয়ার কথা ছিল। সে জায়গাটি এত দিনেও নির্ধারণ করা যায়নি। অবশেষে আজ হলো। আশা করি এখন খুব দ্রুতই কাজ শুরু হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, ইউএসএআইডি বাংলাদেশের উপমিশন পরিচালক র্যান্ডি আলী, আইসিডিডিআর,বি’র ডা. তাহমিদ আহমেদ, এমবিডিসি’র পরিচালক এবং টিবি ল্যাপরোসি’র লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. শামসুল ইসলাম, শ্যামলী ২৫০ শয্যা টিবি হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. আবু রায়হান।
সারাবাংলা/এসবি/এনএস/টিআর