আদালতে জেমস
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৪:২৫ | আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:৩২
ঢাকা: আচমকাই আদালত প্রাঙ্গণে দেখা গেল বাংলা ব্যান্ড সংগীতাঙ্গনের ‘গুরু’ ফারুক মাহফুজ আনাম জেমসকে। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে রীতিমতো আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে হাজির। আদালত চত্বরে যারা চিনলেন, তাদের সবার প্রশ্ন— হঠাৎ জেমস কেন আদালতে! কোনো আইনি জটিলতায় পড়েছেন কি?
কারও সঙ্গে কোনো কথা না বলেই আইনজীবীকে নিয়ে জেমস সোজা চলে গেলেন ভেতরে। সেখানও মুখ খুললেন না জেমস বা তার আইনজীবী। শেষ পর্যন্ত তারা যে আরজি নিয়ে আদালতে গেছেন, সেটির শুনানি শেষে জানা গেল, টেলিকম অপারেটর বাংলালিংকের বিরুদ্ধে মামলা করতেই আদালতে এসেছেন জেমস। অভিযোগ, কপিরাইট ভঙ্গ। তার বিভিন্ন জনপ্রিয় গানকে বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অনুমতি ছাড়াই ব্যবহারের অভিযোগে তিনি এই অপারেটরের বিরুদ্ধে মামলা করতে এসেছিলেন।
বাংলালিংকের বিরুদ্ধে সে মামলা হলো তবে? না, মামলা এখনো হয়নি। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত তার মামলার আরজি গ্রহণ না করে থানায় মামলা দায়েরের নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই নির্দেশনা মেনে জেমস এখন মামলা করতে যাচ্ছেন রাজধানীর গুলশান থানায়।
রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালেই মামলা দায়ের করতে আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে এসেছিলেন জেমস। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মামলার আবেদনটির বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে শুনানি হয়। থানা এ বিষয়ে মামলা গ্রহণ না করলে তারপর আদালতে আসার নির্দেশনা দেন বিচারক।
সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলী তাপস কুমার পাল সারাবাংলাকে বলেন, কপিরাইট আইন ভঙ্গের অভিযোগ এনে জেমস বাংলালিংকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের জন্য আদালতে এসেছিলেন। আদালত তাদের থানায় মামলা দায়ের করতে বলেছেন। কোনো কারণে থানা যদি মামলা গ্রহণ না করে, তাহলে আদালত মামলার আরজি বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
জানতে চাইলে জেমসের আইনজীবী তাপস সারাবাংলাকে বলেন, জেমস বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। তার অসংখ্য জনপ্রিয় গান আছে। তার কাছ থেকে কোনো ধরনের অনুমতি না নিয়েই এই গানগুলো বাংলালিংক তাদের ওয়েলকাম টিউন, বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবহার করে আসছে। বাংলালিংকের এই কর্মকাণ্ড কপিরাইট আইন ভঙ্গের সামিল। এ কারণেই তিনি বাংলালিংকের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইন ভঙ্গের অভিযোগে মামলা দায়ের করবেন।
আইনজীবী তাপস আরও বলেন, আমরা মামলা করতেই আদালতে এসেছিলাম। এখন আদালতের নির্দেশনা মেনে গুলশান থানায় যাচ্ছি। সেখানেই বাংলালিংকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হবে।
এ বিষয়ে গুলশান থানায় যোগাযোগ করলে জানানো হয়, থানায় এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের অন্যতম জনপ্রিয় গায়কদের একজন জেমস। আশির দশকে গড়ে ওঠা ‘ফিলিংস’ ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য। পরে নব্বইয়ের দশকে গড়ে তোলেন ‘নগর বাউল’ ব্যান্ড। ১৯৮৮ সালে মুক্তি পাওয়া ফিলিংসের প্রথম ‘স্টেশন রোড’ অ্যালবামেই নজর কাড়েন, জনপ্রিয়তা পায় তার সলো অ্যালবাম ‘অনন্যা’ও। তবে ফিলিংসের ‘জেল থেকে বলছি’ অ্যালবামের ভিন্ন গায়কি দিয়েই তারুণ্যের উন্মাদনার আরেক নামে পরিণত হন জেমস।
একের পর এক ব্যান্ড আর সলো অ্যালবাম দিয়ে নব্বইয়ের দশক মাতিয়ে রেখেছিলেন জেমস। একটা সময় পরিচিতি পান ‘নগর বাউল’ হিসেবে। ওই সময়ের অডিও ইন্ডাস্ট্রিতে জেমসের উপস্থিতি মানেই মিক্সড অ্যালবামেরও হিটের নিশ্চয়তা হিসেবে বিবেচিত হতো। নতুন শতকের শুরুর দিকে এসে জেমস দেশের সীমানা পেরিয়ে পা রাখেন বলিউডে। সমান জনপ্রিয়তা অর্জন করেন সেখানেও।
সারাবাংলা/এআই/টিআর
কপিরাইট আইন কপিরাইট আইন ভঙ্গ জেমস টপ নিউজ ফারুক মাহফুজ আনাম বাংলালিংক