Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নিঝুম দ্বীপের বনের সীমানা নির্ধারণের নির্দেশ হাইকোর্টের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২০:৩৪ | আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২২:২৬

ঢাকা: নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপের ‘সংরক্ষিত বনাঞ্চলের’ সীমানা নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ছয় মাসের মধ্যে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালক, পরিবেশ সচিব ও বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে নিঝুম দ্বীপের ‘সংরক্ষিত বনাঞ্চলের’ সীমানা নির্ধারণে বিবাদীদের প্রতি কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তাও জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

স্থানীয় সরকার সচিব, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালক, নির্বাচন কমিশনের সচিব, প্রধান বন সংরক্ষকসহ ১৪ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

নিঝুম দ্বীপের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমানা নির্ধারণ ও নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন। তবে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন স্থগিত রাখতে কোন আদেশ দেননি আদালত। ফলে ইউপি নির্বাচনে ভোট নিতে আর কোনো বাধা নেই।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। গত ১২ সেপ্টেম্বর মানবাধিকারকর্মী রফিক উদ্দিন এনায়েতের পক্ষে জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব।

বিজ্ঞাপন

রিট আবেদনে বলা হয়, চল্লিশের দশকে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠে নিঝুম দ্বীপ। ১৯৭৪ সালে বন বিভাগ এই দ্বীপটিতে বনায়ন শুরু করে। পরবর্তী সময়ে দ্বীপটির প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য বিবেচনায় সরকার এটিকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করে।

এর ধারাবাহিকতায় ২০০১ সালে বন আইন-১৯২৭-এর ২০ ধারায় সরকার পুরো নিঝুম দ্বীপকে সংরক্ষিত বন ঘোষণা করে। ফলে আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত বন নিঝুম দ্বীপে জনসাধারণের অবাধ প্রবেশ ও কাঠামো নির্মাণ নিষিদ্ধ।

২০০৮ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নিঝুম দ্বীপের সংরক্ষিত বন নিয়ে ১১ নম্বর নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করে। যেটি সম্পূর্ণ বেআইনি। ২০১২ সালে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় দুটি গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিঝুম দ্বীপকে আরও সুনির্দিষ্টভাবে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু এখনো সংরক্ষিত বনের সীমানা নির্ধারণ করা হয়নি। এ সুযোগে স্থানীয় অসাধু ভূমি খেকোরা নিঝুম দ্বীপের সংরক্ষিত বনের জমি অবৈধভাবে দখল করে বিভিন্ন ধরনের কাঠামো নির্মাণ করে যাচ্ছে। এতে সাগরঘেরা দ্বীপটির প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ক্রমে হুমকির মুখে পড়ছে।

সরকার ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী, সংরক্ষিত নিঝুম দ্বীপকে রক্ষণাবেক্ষণ এবং এর থেকে ইউনিয়ন পরিষদকে আলাদা করে সেটার সীমানা নির্ধারণের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতর কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে ২০১২ সালের গেজেট অনুযায়ী, নিঝুম দ্বীপের সীমানা নির্ধারণ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ১১ নম্বর নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত রাখতে নির্দেশনা চাওয়া হয়।

এর আগে, বিবাদীদের উদ্দেশে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

টপ নিউজ নিঝুম দ্বীপ সীমান নির্ধারণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর