চট্টগ্রাম বন্দরের সেই ভুয়া সচিব হাতিয়েছেন আরও ১০ লাখ
১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২০:১১ | আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৩:৩১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব সেজে চাকরি দেওয়ার নামে ৩৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার প্রতারক আরও দু’জনের কাছ থেকে একইভাবে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। আব্দুল মতিন নামে একজনকে বন্দরের ডার্ক রুম সহকারী এবং মোহাম্মদ আলমগীর কবির নামে একজনকে নিম্নমান বহিঃসহকারী পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এ টাকা হাতিয়ে নেয় ওই প্রতারক।
শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) আব্দুল মতিন বাদী হয়ে নগরীর কোতোয়ালি থানার ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
এর আগে, গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে নগরীর চান্দগাঁও থেকে সেকান্দর আলী (৫৫) নামে ওই প্রতারককে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। তার বাসা নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায়। নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের মুরগিহাটা লেইনের চা-দোকানি আবুল কাশেমের ছেলেকে চট্টগ্রাম বন্দরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ৩৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আবুল কাশেমের মামলায় সেকান্দরকে গ্রেফতারের পর আমরা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাকে গ্রেফতারের ছবি সংবাদপত্রে দেখে ভুক্তভোগী আব্দুল মতিন থানায় এসে তাদের দু’জনের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন। এখন আব্দুল মতিনের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।’
আরও পড়ুন- বন্দরের সচিব সেজে ৩৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ধরা
আব্দুল মতিনের অভিযোগ, সেকান্দরের সহযোগী নুর মোহাম্মদের মাইক্রোবাস ভাড়া করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে যেতেন আব্দুল মতিন। সেই সুবাদে সেকান্দরের সঙ্গে তার পরিচয়। সেকান্দর নিজেকে বন্দরের সচিব পরিচয় দিয়ে বন্দরে চাকরি করবে কি না, জানতে চায়। মতিন রাজি হলে ২০১৭ সালের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে ডার্ক রুম সহকারীর একটি পদ এখনো খালি আছে বলে জানায়। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালকের (প্রশাসন) স্বাক্ষর ও সিল সম্বলিত একটি নিয়োগপত্রও দেখায়। সেই চাকরির জন্য ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর আব্দুল মতিন প্রথমে প্রাইম ব্যাংকের দুই লাখ টাকার একটি চেক এবং পরবর্তী সময়ে ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আরও তিন লাখ টাকা নগদ সেকান্দরকে দেন।
একইভাবে মতিনের বন্ধু আলমগীর কবিরকেও চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালকের সিল-স্বাক্ষর সম্বলিত নিম্নমান বহিঃসহকারীর একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে পর্যায়ক্রমে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। ভেরিফিকেশনের জন্য তাদের স্থায়ী ঠিকানায় পুলিশ যাবে এবং চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে বলে জানান সেকান্দর। চাকরিতে যোগদানের জন্য দু’জনকে পাঁচ লাখ করে আরও ১০ লাখ টাকা দিতে হবে বলেও সেকান্দার জানিয়েছিলেন।
ওসি নেজাম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভুয়া লোকজন দিয়ে ভেরিফিকেশনের অভিনয় করে। এছাড়া কয়েকদিন পরপর বন্দর থেকে ফোন করছে জানিয়ে বিভিন্ন তথ্য জানতে চাওয়া হয় তাদের কাছে। এতে তাদের মধ্যে বিশ্বাস জন্মে। কিন্তু কালক্ষেপণ হওয়ায় তারা যখন চাকরির জন্য তাগাদা দেন, তখন সেকান্দর জানান— কোভিড পরিস্থিতির কারণে দেরি হচ্ছে। দু’জন চাকরির আশায় ছিলেন। কিন্তু সেকান্দর গ্রেফতারের পর তারা বুঝতে পারেন যে প্রতারিত হয়েছেন।’
সারাবাংলা/আরডি/টিআর