অডিট চলছে, ইভ্যালিতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয়: যমুনা গ্রুপ
২৭ আগস্ট ২০২১ ০১:৪৩ | আপডেট: ২৭ আগস্ট ২০২১ ০১:৪৮
ঢাকা: অনলাইন মার্কেটপ্লেস ইভ্যালিতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছে যমুনা গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ইভ্যালির কাছে গ্রাহক ও পণ্য সরবরাহকারীদের দেনা-পাওনা বিষয়ে এখনো অডিট চলছে। অডিট শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দিবাগত রাতে এক বার্তায় যমুনা গ্রুপ এ তথ্য জানিয়েছে। গ্রুপের মার্কেটিং, সেলস ও অপারেশনস বিভাগের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলমগীর আলম গণমাধ্যমে বার্তাটি পাঠিয়েছেন।
ওই বার্তায় বলা হয়েছে, ইভ্যালিতে যমুনা গ্রুপের বিনিয়োগের আগে ইভ্যালির গ্রাহকদের ও পণ্য সরবরাহকারীদের পাওনা বা দায় দেনা নির্ধারণের লক্ষ্যে যমুনা গ্রুপের উদ্যোগে অডিট চলছে। যেহেতু এখনো অডিট কার্যক্রম শেষ হয়নি এবং অডিটের চূড়ান্ত রিপোর্ট যমুনা গ্রুপের হাতে এখনো আসেনি, তাই ইভ্যালিতে বিনিয়োগের বিষয়ে যমুনা গ্রুপ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত কোনো বক্তব্য দিতে প্রস্তুত নয়।
বার্তায় আরও বলা হয়, অডিট শেষ হলে যথাসময়ে যমুনা গ্রুপ তার বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত ও বিস্তারিত কর্মপদ্ধতি গণমাধ্যমের সামনে প্রকাশ করবে।
ইভ্যালিতে এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে যমুনা গ্রুপ
এর আগে, গত ২৭ জুলাই গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইভ্যালি জানায়, দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ যমুনা গ্রুপ এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে ইভ্যালিতে। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক বিনিয়োগের পরিমাণ হবে ২০০ কোটি টাকা। পরে ধাপে ধাপে বাকি টাকা বিনিয়োগ করবে গ্রুপটি।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরু করা ইভ্যালি আকর্ষণীয় সব অফার দিয়ে বাজিমাত করতে থাকে। তবে অফারের ঘোষণা অনুযায়ী যথাসময়ে পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ রয়েছে ক্রেতাদের। অনলাইন মার্কেটপ্লেসটির বিরুদ্ধে রিফান্ড নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিবেদন ইভ্যালিকে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে আসে।
গত জুন মাসে ইভ্যালির আর্থিক অনিয়ম নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি তাদের পরির্দশক প্রতিবেদনে বলেছে, এ বছরের ১৪ মার্চ পর্যন্ত ইভ্যালি গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম ২১৪ কোটি টাকা নিয়েও পণ্য সরবরাহ করেনি। আবার মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির দেনার পরিমাণ ১৯০ কোটি টাকা। অন্যদিকে ইভ্যালির চলতি সম্পদের মূল্য মাত্র ৬৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ইভ্যালির পুরো সম্পদ দিয়ে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের পাওনার মাত্র ১৬ শতাংশ পরিশোধ করা সম্ভব। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইভ্যালির প্রকৃত দায়-দেনার পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের এসব তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ ক্রেতা-ভোক্তারাও নড়েচড়ে বসেন। ইভ্যালি প্রকৃতই গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহ কিংবা অর্থ পরিশোধ করতে পারবে কি না— তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয় অনেকের মধ্যেই। এর পরিপ্রেক্ষিতে পণ্য দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ কোথায় রেখেছে— তা জানতে অনলাইন মার্কেটপ্লেস ইভ্যালিকে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেই চিঠির পূর্ণাঙ্গ জবাব যথাসময়ে না দেওয়ায় ইভ্যালি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
পরে গত ১১ আগস্ট ওই কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রাহকদের দেনা-পাওনা সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের জবাব দিতে ইভ্যালিকে আরও তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর