আফগানিস্তান পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে চীন: তালেবান
২০ আগস্ট ২০২১ ১২:৩০ | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২১ ১৫:৪৯
আফগানিস্তান ‘পুনর্গঠনে’ প্রতিবেশী চীন ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করে তালেবান। উগ্রবাদী গোষ্ঠীটির মুখপাত্র সোহেল শাহীন চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মনোভাব প্রকাশ করেন।
সিজিটিএন টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালেবান মুখপাত্র বলেন, ‘চীন একটি বিশাল দেশ। চীনের বৃহৎ অর্থনীতি ও সক্ষমতা রয়েছে। আমি মনে করি, তারা আফগানিস্তানের পুনর্গঠন, পুনর্বাসনে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে’।
ইতিমধ্যে আফগানিস্তান পুনর্গঠনে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলেও সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন তালেবান মুখপাত্র সোহেল শাহীন।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সোহেল শাহীনের সাক্ষাৎকার প্রচারের কয়েক ঘণ্টা আগে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, বর্তমান তালেবানরা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা তালেবানদের চেয়ে বেশি ‘যুক্তিবাদী’ ও ‘স্পষ্টভাষী’।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের সঙ্গে চীনের সীমান্ত যোগাযোগ রয়েছে। চীন সীমান্তে একমাত্র আফগান শহর ‘ওয়াখান’ জুলাইয়ের শুরুতেই দখল করে নিয়েছিল তালেবান।
তবে গত রোববার (১৫ আগস্ট) কাবুল দখলের মাধ্যমে গোটা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ হাতে তুলে নেয় তালেবান। এদিন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। আফগানিস্তানে তালেবানের এমন উত্থানে চীনের সায় রয়েছে বলে বেইজিংয়ের একাধিক মন্তব্যে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
এর আগে, ২৮ জুলাই আফগানিস্তানের উগ্রবাদী গোষ্ঠী তালেবানের এক প্রতিনিধিদল চীন সফর করে। সে সময় তারা চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন ই’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওয়েন ই আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়ায় তালেবানকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে দেখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে সক্রিয় পূর্ব তুর্কিস্তান ইসলামি আন্দোলন দমনে তালেবানের কাছে সহায়তা চান তিনি।
আফগানিস্তানে টানা ২০ বছর সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের পর ন্যাটো ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। গত বছর এ ঘোষণার পরপর দেশটির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে তালেবান। এমন পরিস্থিতিতে আফগানিস্তান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তালেবানের রাজনৈতিক সমঝোতা করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল ইরান, চীন, পাকিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলো।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রও তালেবানের সঙ্গে এক সমঝোতার ভিত্তিতে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত ছিল, আফগানিস্তানে বিদেশি কোনো জঙ্গি সংগঠনকে পৃষ্ঠপোষকতা করবে না তালেবান। তবে মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই সেদেশে সাধারণ নাগরিকদের উপর, বিশেষ করে কর্মজীবী নারীদের উপর সহিংস হামলা বাড়িয়ে দেয় সংগঠনটি। এসব কারণে তালেবান আদৌ তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে কি না— সে ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে আফগানিস্তান ইস্যুতে চীনের জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি ‘ইতিবাচক হতে পারে’ বলে মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তোনি ব্লিনকেন। গত ২৯ জুলাই ভারত সফরকালে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন ব্লিনকেন।
ব্লিনকেন বলেন, ‘তালেবান সামরিক শক্তি দিয়ে আফগানিস্তান দখল করে ইসলামি আমিরদের পুনরুত্থান ঘটাক এটা কেউই চায় না’।
সারাবাংলা/আইই