ঘরে-ঘরে তালেবানের অভিযান: জাতিসংঘ
২০ আগস্ট ২০২১ ১১:৫১ | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২১ ১৪:৪০
আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনী বা পূর্ববর্তী আফগান সরকারের পক্ষে যারা কাজ করেছেন, তাদের খুঁজতে তালেবান ঘরে-ঘরে অভিযান চালাচ্ছে বলে জাতিসংঘের এক রিপোর্টে সতর্ক করা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, তালেবান জঙ্গিরা আগে থেকেই টার্গেট করা মানুষজনকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুঁজছে এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিয়ে আসছে।
এ ব্যাপারে বিবিসি জানিয়েছে, এই সশস্ত্র গোষ্ঠী ক্ষমতা দখলের পর থেকে আফগানদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে তারা প্রতিশোধ নেবে না। কিন্তু আশঙ্কার বিষয় হল, ১৯৯০ এর দশকের নৃশংসতার পর তালেবান খুব সামান্যই বদলেছে।
জাতিসংঘকে যারা গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করতেন, তালেবান তাদেরকে টার্গেট করছে বলে এক গোপন রিপোর্টে সতর্ক করা হয়েছে।
নরওয়েজিয়ান সেন্টার ফর গ্লোবাল অ্যানালাইসিস- রিপ্টো প্রকাশিত এক গোপন নথি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
এদিকে, লিখিতভাবে বলা হয়েছে যে, যদি তারা নিজেরা ধরা না দেয়, তাহলে তালেবান ওই ব্যক্তিদের পরিবর্তে তার পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতার ও বিচার করবে, জিজ্ঞাসাবাদ করবে এবং শাস্তি দেবে।
রিপ্টোর পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়েছে, যারা তালেবানের কালো তালিকাভুক্ত, তারা মারাত্মক বিপদের মধ্যে রয়েছেন এবং তাদেরকে গণহারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে।
অন্যদিকে, আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি শহরে এরইমধ্যে তালেবানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। রাজধানী কাবুলে বিক্ষোভকারীরা জাতীয় পতাকা উড়িয়ে প্রতিবাদ জানান। আসাদাবাদে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
শক্তিধর দেশগুলো তাদের নাগরিকদের আফগানিস্তান থেকে বের করে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে তারা ১৪ই আগস্টের পর থেকে তারা সাত হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে।
কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে পরিস্থিতি এখনও বিশৃঙ্খল। যারা পালাতে চেষ্টা করছেন, তালেবান তাদের বাধা দিচ্ছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তালেবান এখন হাজার হাজার মার্কিন সাঁজোয়া যান, ৩০-৪০টি বিমান এবং বিপুল সংখ্যক ছোট অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করছে।
এর আগে, বিদেশিরা আফগানিস্তান থেকে তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর রোববার তালেবান দেশটির রাজধানী কাবুল দখল করে এবং অন্যান্য অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
তালেবান এর আগে ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া এবং কর্মস্থল থেকে নারীদের নিষিদ্ধ করাসহ নানাভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিল।
তবে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে, এই গোষ্ঠীটির বক্তব্যে ছিল সমঝোতার সুর।
তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, ইসলামের আইনী কাঠামোর মধ্যে নারীদের অধিকার ও সম্মান দেওয়া হবে।
এছাড়াও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রাক্তন সদস্য এবং যারা বিদেশি শক্তির পক্ষে কাজ করেছেন তাদের সবাইকে সাধারণ ক্ষমা দেয়া হবে।
যদিও, আন্তর্জাতিক শক্তির পাশাপাশি অনেক আফগান তাদের এমন বক্তব্য নিয়ে সন্দিহান ছিল।
সারাবাংলা/একেএম