Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কাজী আরেফ হত্যার ফাঁসির আসামি ২২ বছর পর গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৯ আগস্ট ২০২১ ১৯:৪৪ | আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০২১ ২১:৩২

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতা কাজী আরেফ হত্যা মামলায় ফাঁসির সাজা নিয়ে ছদ্মবেশে থাকা আসামি মো. রওশন ওরফে আলী ওরফে উদয় মণ্ডলকে ২২ বছর পর গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খোন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘রওশন রাজশাহীতে আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি উদয় মন্ডল নামে একটি ভোটার আইডি কার্ডও তৈরি করেছেন।’

র‌্যাব জানায়, ১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে একটি সভা চলাকালে প্রকাশ্য দিবালোকে দুর্বৃত্তদের অতর্কিত গুলিবর্ষণে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) শীর্ষ নেতা কাজী আরেফসহ পাঁচজন নিহত হন। ওই ঘটনায় দৌলতপুর থানায় রওশনসহ ২৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০০৪ সালের ৩০ আগস্ট জেলা দায়রা জজ আদালত ১০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

পরে আসামিরা নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে। ২০০৮ সালের ৫ আগস্ট উচ্চ আদালত ৯ আসামির ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন এবং বাকি ১৩ জনকে খালাস দেন। তাদের মধ্যে ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি ৩ আসামির ফাঁসির আদেশ কার্যকর করা হয়। এছাড়াও এক আসামি কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অপর পাঁচ আসামি দীর্ঘদিন যাবত পলাতক রয়েছেন। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের ব্যাপারে র‌্যাব উদ্যোগী হয়ে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে।

তারই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৫ এর অভিযানে গত মধ্য রাতে রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানার ভারালীপাড়া থেকে রওশনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কাজী আরেফ হত্যাকাণ্ডে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে রওশন। সে আরও কয়েকটি হত্যাকাণ্ড, সহিংসতা ও ডাকাতির সঙ্গে তার সংশিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন।

বিজ্ঞাপন

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রওশন স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা শুরু করে রাজবাড়ীর একটি কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। তারপর ১৯৯২ সাল থেকে সীমান্তে চোরাচালান, হাট ইজারাসহ বিভিন্ন ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ কাজে সম্পৃক্ত হন। এ সমস্ত কাজে তিনি এলাকায় সন্ত্রাসী চক্র গড়ে তোলেন। যাদের সহযোগিতায় তিনি এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করতেন। পরে তার সঙ্গে চরমপন্থী দলের সখ্যতাও তৈরি হয়।

গ্রেফতারকৃত রওশন ১৯৯৮ সালের পর বেশ কয়েকটি হত্যা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হন। এ সময় মাঝে-মধ্যে তিনি গা ঢাকা দিতে রাজশাহীতে অস্থায়ীভাবে অবস্থান শুরু করেন। রাজশাহীতে তিনি ‘আলী’ নামে পরিচয় দিতেন এবং নিজের আদি নিবাস গাজীপুর বলে সবাইকে জানাতেন। রাজশাহীতে প্রথমে তিনি একটি গরুর খামার স্থাপন করেন। পরবর্তী সময় জমি কেনা-বেচার ব্যবসায় যুক্ত হন। এভাবে ধীরে ধীরে তিনি রাজশাহীতে স্থায়ী নিবাস গড়ে তোলেন।

কাজী আরেফ হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে রওশন জানান, ওই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ ছাড়াও সমন্বয় এবং পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। এছাড়াও, চেয়ারম্যান বাকী ও স্থানীয় আমজাদ হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ ও পরিকল্পনার সঙ্গেও নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। তার নামে ২০০৫ সালে গাংনীতে একটি ডাকাতি মামলাও দায়ের করা হয়।

সারাবাংলা/ইউজে/একেএম/এজেড/পিটিএম

টপ নিউজ ফাঁসির আসামি গ্রেফতার র‍্যাব