জামিন পাননি পরীমনি
১৩ আগস্ট ২০২১ ১৫:১৬ | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২১ ১৭:৪৭
ঢাকা: জামিন পাননি চিত্রনায়িকা পরীমনি। রিমান্ড শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাকে আদালতে হাজির করলে আদালতে জামিন আবেদন করেছিলেন তিনি। আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
শুক্রবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ধীমান চন্দ্র মন্ডলের আদালত এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে পরীমনির সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দিপুর জামিন আবেদনও নামঞ্জুর করে তাকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মামলায় দুই দফা রিমান্ডে ছিলেন পরীমনি ও আশরাফুল ইসলাম দীপু। দ্বিতীয় দফার রিমান্ড শেষে শুক্রবার পরীমনিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি। এদিন পরীমনির পক্ষের আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সৌরভী, মজিবুর রহমানসহ অন্যরা জামিন চেয়ে শুনানি করেন।
পরীমনির জামিন আবেদনে আইনজীবীরা বলেন, পরীমনি একজন প্রথম সারির চিত্রনায়িকা। ফোর্বস ম্যাগাজিনের বৈশ্বিক ডিজিটাল তারকাদের ১০০ জনের তালিকায় তার নাম রয়েছে, যা বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের জন্য গৌরবজনক। পরীমনি কারাগারে আটক থাকলে দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনের অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানি ও চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সঙ্গে পরীমনির যেসব চুক্তি রয়েছে, সেগুলোও বাতিল হয়ে যেতে পারে। সম্প্রতি ‘প্রীতিলতা’ নামে একটি সরকারি সিনেমার জন্যও এরই মধ্যে ফটোশুট করা হয়েছে।
আইনজীবীরা আবেদনে বলেন, পরীমনি দীর্ঘ সময় ধরে পুলিশ কাস্টডিতে থেকে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। চিকিৎসার স্বার্থে তাকে জামিন দেওয়া হোক। পরীমনিকে দুই দফায় ছয় দিন রিমান্ডে রাখার পর তার কাছ থেকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটন করা যায়নি। তিনি একজন স্বনামধন্য ব্যক্তি। ফলে আসামি যেকোনো শর্তে জামিন পেতে পারেন।
এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই জামিনের বিরোধিতা করা হয়। আদালত দুই পক্ষের শুনানি শেষে পরীমনির জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।
এর আগে, গত ৪ আগস্ট বিকেল ৪টায় দিকে ফেসবুক লাইভে আসেন পরীমনি। লাইভে তিনি জানান, কে বা কারা তার বাসায় প্রবেশ করতে চাচ্ছেন। সাদা পোশাকে থাকা অপরিচিত ব্যক্তিদের মাধ্যমে নিজের প্রাণভয়ের শঙ্কার কথা জানান তিনি। তবে তিনি লাইভে থাকা অবস্থাতেই দেখা যায়, তার বাসায় র্যাব অভিযান চালাতে এসেছে। পরে বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র্যাব।
রাত সোয়া ৮টার দিকে পরীমনিকে তার বাসা থেকে আটক করে নামিয়ে আনে র্যাব-১। তাকে র্যাব সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় তার বাসা থেকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন ৫ আগস্ট বনানী থানায় পরীমনির বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করা হয়। পরীমনির মামা আশরাফুল ইসলাম দীপুকেও মামলার আসামি করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের পর পরীমনি ও দীপুকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দ্বিতীয় দফা রিমান্ড আবেদন করে মামলার তদন্তভার পাওয়া সিআইডি। এ দফায় আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন।
সারাবাংলা/এআই/এসএসএ/টিআর